ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুতে চাঁদাবাজি, নওয়াপাড়ার সেই বিএনপি নেতা কারাগারে
Published: 15th, August 2025 GMT
যশোরে এক ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে অস্ত্রের মুখে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে করা দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
যশোর আদালত পুলিশের পরিদর্শক রোকসানা খাতুন বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সম্প্রতি বিভিন্ন অভিযোগে তাঁর পদ স্থগিত করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। তিনি অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নৌবন্দর এলাকার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা শহরের একটি হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর সহযোগী জেলার অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও বিএনপির কর্মী তুহিন শেখকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনযশোরে ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার১৪ আগস্ট ২০২৫গ্রেপ্তারের পর আসাদুজ্জামানকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর মালিকানাধীন নওয়াপাড়া ইকোপার্ক, বাড়ি ও ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এ অভিযান। অভিযানে চাপাতি, ছুরি, হাঁসুয়া, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়। আজ অস্ত্র আইনের একটি মামলা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীরের স্ত্রীর করা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠায় অভয়নগর থানা-পুলিশ।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার আটক করা হলেও আসাদুজ্জামানকে নিয়ে দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযানে যায় যৌথ বাহিনী। যেহেতু রাত হয়ে যায়, তাই আজ তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। চাঁদাবাজি ও অস্ত্র মামলায় বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুনব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে নির্যাতন, টাকা আদায়, অভিযোগ বিএনপি নেতা ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে০২ আগস্ট ২০২৫ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীরের স্ত্রী আসমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর স্বামীকে সন্ত্রাসীদের দিয়ে অপহরণ করে ইকোপার্কে বুকসমান বালুর মধ্যে পুঁতে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান ও মফিজ উদ্দিনের নেতৃত্বে চার কোটি টাকার চাঁদা আদায় করা হয়।
এ ঘটনায় গত ৩১ জুলাই অভয়নগর উপজেলার রাজঘাট সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন আসমা খাতুন। পরে ৩ আগস্ট তিনি বাদী হয়ে বিএনপি নেতাসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান, তাঁর বাবা কামরুজ্জামান ও ডিশ ব্যবসায়ী মিঠু আছেন। তাঁদের মধ্যে কামরুজ্জামান ও মিঠুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা দুজনেই কারাগারে আছেন। সর্বশেষ মামলার প্রধান আসামি আসাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হলো।
আরও পড়ুনযশোরে ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে নির্যাতন ও টাকা আদায়ের ঘটনায় মামলা, একজন গ্রেপ্তার০৪ আগস্ট ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব কসম ন ব ল ত আস দ জ জ ম ন গ র প ত র কর ব যবস য় ক নওয় প ড় ব এনপ আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ