রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ গ্রেপ্তার মোস্তাসেরুল আলম অনিন্দ্য (৩৩) এবং তার দুই সহযোগী মো. রবিন (২৮) ও মো. ফয়সালের (৩০) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মামুনুর রশিদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) আদালত পরিদর্শক আবদুর রফিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুপুরে আসামিদের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোতালেব হোসেন। তিনি আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তবে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিনি আরো জানান, আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে গেছেন।

আরো পড়ুন:

রংপুরে জামাই-শ্বশুরকে পিটিয়ে হত্যা, ৪ আসামি তিন দিনের রিমান্ডে

মুরাদনগরে ৩ জনকে হত্যা: ৮ জন রিমান্ডে

আসামি অনিন্দ্য রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শফিউল আলম লাট্টুর ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাত ভাই। নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় বাড়ির পাশে ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন অনিন্দ্য।

শনিবার (১৬ আগস্ট) ভোররাত থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ওই কোচিং সেন্টারে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। এ সময় দুই সহযোগীসহ অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, সামরিক মানের দূরবীন, জিপিএস, স্নাইপার স্কোপ, দেশীয় অস্ত্র, বিদেশি ধারালো ডেগার, উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, টিজার গান, অব্যবহৃত সিমকার্ড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, কম্পিউটার, দেশি-বিদেশি মদ এবং নাইট্রোজেন কার্টিজ উদ্ধার করা হয়।

অনিন্দ্য ২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হন। তখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। এছাড়া গুলশানের হোলি আর্টিজানে হামলার ঘটনায় ‘সন্দেহভাজন জঙ্গি’ হিসেবে তাকে ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি ওই দুটি মামলা থেকে রেহাই পান বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি শরিফুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অনিন্দ্যের সহপাঠী ছিলেন। শরিফুলের সঙ্গে অনিন্দ্যের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

দুই সহযোগীসহ অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে নগরের বোয়ালিয়া থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ন দ য জ র কর সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছর আগে সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ

যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুদেশের বহু দশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫

সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ সালমানের হাত রয়েছে।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, যুবরাজই খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।

যুবরাজ সালমান খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।

খাসোগি হত্যার পর সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির চুক্তি’ যুক্তরাষ্ট্রের১৩ মে ২০২৫

ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরবে তাঁর সফরের সময় দেওয়া ৬০ হাজার কোটি ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।

মে মাসের ওই সফরে ট্রাম্প সৌদি আরবে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই) এবং বেসামরিক খাতে একটি পারমাণবিক প্রকল্প চুক্তির পথে অগ্রসর হতে চাইছেন।

আরও পড়ুনখাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যেখানে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের পছন্দমতো দামে তেল বিক্রি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে।

আরও পড়ুনখাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: সৌদি আরব২৬ অক্টোবর ২০১৮

সম্পর্কিত নিবন্ধ