শেবাচিমে চিকিৎসককে মারধর, কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
Published: 17th, August 2025 GMT
তিন ঘণ্টা পর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি পাহাড়ায় জরুরি চিকিৎসা সেবা চালু হয়েছে। চিকিৎসকদের উপর হামলা ও নিরাপত্তা না থাকায় দুপুর ২টা থেকে কর্মস্থল ত্যাগ করেন চিকিৎসকরা। ফলে টানা তিন ঘণ্টা চিকিৎসা বঞ্চিত হন রোগীরা। হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীরের অনুরোধে পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় বিকেল ৫টা থেকে জরুরি সেবা চালু করা হয়। তবে বিকেল ৩টার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রাব্বি আল মামুন ফয়সাল জানান, রবিবার বেলা ১২টার দিকে সদর রোড থেকে বেশ কিছু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে হাসপাতালের সামনে আসে। এ সময় তারা হাসপাতালের প্রতিটি গেটের সামনে স্কুল-কলেজের মার্কিং করে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের গালিগালাজ করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি ছিল বলে জানান রাব্বি আল মামুন।
তিনি বলেন, ‘‘দুপুর ২টার দিকে মেডিসিন বিভাগের মেডিকেল অফিসার দিলিপ রায় ডিউটি শেষে বের হওয়ামাত্র তাকে টেনেহিঁচড়ে বেদম মারধর করা হয়। পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের দিকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলাকারীরা। এতে বাহাউদ্দিন নামে এক কর্মচারী আহত হন।’’
চিকিৎসকের উপর হামলা ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা না থাকায় বিকেল ৩টার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেন ইর্ন্টান চিকিৎসকরা। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আমরা গত ১৪ আগস্ট কর্মবিরতিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল পরিচালক স্যারের অনুরোধ ও রোগীর দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করি। এ সময় পরিচালক মহোদয়কে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেওয়া হয়। কিন্তু আজকে ১৭ আগস্ট আবার আন্দোলনের নামে কিছু দুষ্কৃতিকারী ডা.
ঘটনায় জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেন।
মিড লেভেল ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. শাখাওয়াত হোসেন সৈকত বলেন, ‘‘আজ মহিউদ্দিন রনির নেতৃত্বে বরিশালে বেশ কিছু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের প্রবেশপথে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হুমকি দেয়। ডা. দিলিপ রায়কে মারধর করেছে। চিকিৎসকের উপর নির্যাতন ও হাসপাতালের সামনে তারা অবস্থান নেওয়ায় রোগীরা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তেমনি চিকিৎসকরাও কর্মস্থলে নিরাপত্তা না থাকায় ঘটনার পর কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তবে হাসপাতাল পরিচালক স্যারের বিশেষ অনুরোধে ও পুলিশের নিরাপত্তায় এবং মুমূর্ষু রোগীদের স্বার্থে আমরা মিড লেভেল চিকিৎসকরা শুধু জরুরি সেবা চালিয়ে যাচ্ছি।’’
এ দিকে তিন ঘণ্টা চিকিৎসাবঞ্চিত হওয়ায় রোগীর স্বজনরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। তারা ছুটে যান পরিচালকের কাছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, ‘‘ঘটনার পরপরই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা আমার কাছে বিচার চেয়েছেন। তাদের শান্ত হয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করেছি। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।’’
ঢাকা/পলাশ//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন চ ক ৎসকর ক ল কল জ অন র ধ র উপর
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন
বাংলাদেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়েছেন। গত সাত মাস ধরে এ রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন এই তারকা। বর্তমানে লন্ডনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান নিসচার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইলিয়াস কাঞ্চনের ছেলে মিরাজুল মইন জয়। কানাডা থেকে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হন তিনি।
আরো পড়ুন:
পান্থর উপস্থাপনায় ‘স্টারগল্প’, অতিথি জুয়েল আইচ-তারিক আনাম খান
ভারতের সবচেয়ে সফল অভিনেতা শাহরুখ
মিরাজুল মইন জয় বলেন, “আমার বাবা ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত। তার চিকিৎসা লন্ডনে চলমান রয়েছে। দেশবাসীর কাছে আমরা দোয়া কামনা করছি।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছরের শুরুতে কথা বলতে অসুবিধা ও স্মৃতিভ্রংশসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। গত ৯ এপ্রিল ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে তার মাথার এমআরআই করানো হয়। রিপোর্টে ব্রেন টিউমারের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
পরে তাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, টিউমারটি মস্তিষ্কের অত্যন্ত জটিল স্থানে থাকায় অস্ত্রোপচার ঝুঁকিপূর্ণ হবে। পারিবারিক সিদ্ধান্তে ২৬ এপ্রিল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পাঠানো হয়।
সেখানে হারলি স্ট্রিট ক্লিনিকে দীর্ঘ তিন মাস পরীক্ষানিরীক্ষার পর গত ৫ আগস্ট লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালে প্রফেসর ডিমিট্রিয়াসের নেতৃত্বে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। চিকিৎসকরা পুরো টিউমার অপসারণ না করে আংশিক অপসারণ করেন। অবশিষ্ট অংশ রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটানা ছয় সপ্তাহ (সপ্তাহে পাঁচ দিন) রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি চলবে। এরপর চার সপ্তাহ তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। চিকিৎসকরা অনুমতি দিলে তবেই ইলিয়াস কাঞ্চনের দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
নিসচার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিরাজুল মইন জয় বলেন, “আমরা আশাবাদী, চিকিৎসার ধাপ সফলভাবে শেষ হলে বাবা সুস্থ হয়ে ফিরবেন। তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত