এক ঘরে পড়ে ছিল সন্তানের লাশ, আরেক ঘরে ঝুলছিলেন অন্তঃসত্ত্বা মা
Published: 19th, September 2025 GMT
ফরিদপুরের সদরপুরে একটি বাড়ি থেকে শিশুসন্তান ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বাড়ির এক ঘর থেকে শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। আরেক ঘর থেকে দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা মাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকেও মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন হুজাইফা (৫) ও তার মা সুমাইয়া আক্তার (২২)। সুমাইয়া ফরিদপুর সদরের কৈজুরী গ্রামের বাসিন্দা রমজান খানের মেয়ে এবং সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের রমজান মুন্সীর স্ত্রী। ২০২০ সালে সুমাইয়ার সঙ্গে রমজান মুন্সীর বিয়ে হয়। হুজাইফা তাদের একমাত্র সন্তান ছিল।
স্বজনেরা জানান, ২৬ সেপ্টেম্বর সুমাইয়ার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের কথা ছিল।
রমজান দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুর ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। রমজান অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। রমজান মুন্সীর বাবা মোতালেব মুন্সী জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়ির কাছে গরুর জন্য ঘাস কাটছিলেন। রমজান বাড়ির পাশের জমিতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে বাড়িতে এসে তাঁরা এই মর্মান্তিক ঘটনা জানতে পারেন।
মোতালেব জানান, সুমাইয়াকে ঝুলতে দেখে চিৎকার করে ওঠেন তাঁর ছোট ছেলের স্ত্রী। পরে অন্য ঘরে শিশু হুজাইফার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মোতালেবের দাবি, তাঁর ছেলের সঙ্গে পুত্রবধূ সুমাইয়ার সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। তাঁদের মধ্যে কখনো কলহ হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, তাঁরা প্রায়ই রমজান–সুমাইয়ার মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি শুনতে পেতেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল। তিনি বলেন, শিশু হুজাইফাকে ঘরের মধ্যেই গলাকাটা ও কম্বল প্যাঁচানো মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুদেব রায় জানান, রমজান মুন্সী ফরিদপুরে স্ত্রী–সন্তানের লাশের সঙ্গে হাসপাতালে আছেন। তদন্তের পর বোঝা যাবে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন ম ন স সন ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ, জনতার চাপে ‘মাফ চেয়ে’ এলাকা ছাড়ালেন ‘এমপি প্রার্থী’
ফরিদপুরে সদরপুর উপজেলায় মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন রায়হান জামিল নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু বিতরণের জন্য যে পরিমাণ মাছ তিনি এনেছিলেন, তার থেকে লোকসংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হয়। সবাইকে মাছ দিতে না পেরে জনতার বিক্ষোভের মুখে কোনোরকমে এলাকা ছাড়েন তিনি।
আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। তিনি ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর ৪ আসনের একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। এরই অংশ হিসেবে ‘জনগণের মন জয় করার জন্য’ তিনি ১০ টাকায় ইলিশ মাছ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রায়হান জামিল ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ পরিচয় দিয়ে সপ্তাহখানেক আগে সদরপুরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সাঁটান। তাতে তিনি লেখেন, ১০ টাকায় ইলিশ মাছ দেবেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিশ্ব জাকের মঞ্জিল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই ইলিশ দেওয়ার কথা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার সকাল থেকে শত শত মানুষ জাকের মঞ্জিল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভিড় জমান। বিতরণ শুরুর একপর্যায় মাছ ফুরিয়ে যায়। তখন মাছ নিতে না পারা লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে রায়হান জামিল পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
‘স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী’ পরিচয়ে ১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ করতে যাওয়া রায়হান জামিল