আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান কর্মকর্তা নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির সভাপতি হলেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

আজ বৃহস্পতিবার এই কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মহীউদ্দীন, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি এন কে এ মবিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোসাদ্দেক হোসেন কামাল।

কত দিনের মধ্যে এই বাছাই কমিটি বিএফআইইউর প্রধান কর্মকর্তার নাম সুপারিশ করবে, তা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়নি।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে বিএফআইইউর প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করে সরকার। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত এই সংস্থার প্রধানের একটি বিতর্কিত ভিডিও সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ভিডিওটির সত্যতা পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয় বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

গত আগস্টের প্রথমার্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিএফআইইউ প্রধানের বিতর্কিত ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ১৮ আগস্ট তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়। এরপর তাঁর চুক্তি বাতিল করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ