সাংবাদিককে হেনস্তা : রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহীকে বদলি
Published: 26th, September 2025 GMT
রংপুরে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক লিয়াকত আলীকে ‘মব’ তৈরি করে নগর ভবনে তুলে নিয়ে হেনস্তার ঘটনায় রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমাকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে সরকার।
গতকাল বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। উম্মে ফাতিমাকে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে পদায়নের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে বলা হয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে হেনস্তার অভিযোগে ২১ সেপ্টেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী (সিও) উম্মে ফাতিমাসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন লিয়াকত আলী। মামলায় সিটি করপোরেশনের ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একজন সাবেক কাউন্সিলর আসামি হিসেবে আছেন। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০ থেকে ২৫ জনকে।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে বেআইনি জনতাবদ্ধ, অবৈধ অবরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে সাধারণ ও গুরুতর আঘাত, অপহরণ, খুন-জখমের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইতিমধ্যে এ মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুনরংপুরে ‘মব’ করে সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ ‘জুলাই যোদ্ধার’ বিরুদ্ধে২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২১ সেপ্টেম্বর রংপুর নগরের কাছারি বাজার এলাকায় অবস্থিত জেলা পুলিশ কার্যালয়ের উল্টো দিকে কোর্ট মসজিদের সামনে এসে মব তৈরি করে মামলার বাদীকে মারধর শুরু করেন আসামিরা। একপর্যায়ে আসামিরা তাঁদের হাতে থাকা ছোরা বুকের ওপর ধরে বলে, ‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর করছিস, তোকে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার চেম্বারে গিয়ে মাফ চাইতে হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতিমার দাবি, প্রতিবেদনের কারণে মাফ চাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের নিয়ে আসার প্রশ্নই ওঠে না। এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ।
লিয়াকত আলী অভিযোগ করেন, ১৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদে ‘রংপুরে জুলাই যোদ্ধাদের নামে অটোরিকশার লাইসেন্স, ৫ কোটি টাকা বাণিজ্যের পাঁয়তারা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন করেন তিনি। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর লাইসেন্স বিতরণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হওয়া একটি চক্র তাঁকে তুলে নিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায়। সেই সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তাঁকে ক্ষমা চাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প ট ম বর কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ