বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আগামী নির্বাচনে খুনি, চাঁদাবাজ, মাস্তানদের সঙ্গে নতুন ভোটারদের লড়াই হবে। যে তরুণেরা ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিয়েছে, তারা ভবিষ্যতেও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে ভুল করবে না।

আজ শুক্রবার সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে ডুমুরিয়া স্বাধীনতা চত্বরে আয়োজিত ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, জামায়াত দেশসেবার সুযোগ পেলে বেকার সমস্যার সমাধান করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে যা করার, সেই পরিকল্পনাই করবে।

ডুমুরিয়া-ফুলতলার মূল সমস্যা জলাবদ্ধতার প্রসঙ্গ তুলে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এর মূল কারণ বিল ডাকাতিয়া। এ নিয়ে মহাপরিকল্পনা করা হবে। ডুমুরিয়াকে ব্যবসায়িক হাব হিসেবে গড়ে তোলা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রাতিষ্ঠানের আমূল পরিবর্তনে গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা করা হবে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে যেন সঙ্গে সঙ্গে চাকরি পায়, সে ব্যবস্থা করা হবে। যাদের চাকরি দেওয়া সম্ভব হবে না, তাদের জন্য বেকার ভাতা চালু করা হবে। পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করা হবে।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে শুধু মুসলিম নয়, সব ধর্মের মানুষ এবং নারীরাও মর্যাদা পাবেন। এ জন্য তিনি আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ইসলামী মোর্চার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জামায়াতের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বা বাড়ি দখলের কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারেননি। অথচ আওয়ামী লীগ দেড় দশক ধরে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে। তিনি বলেন, এখনো যারা নানাভাবে জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, আগামী নির্বাচনে দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা তাদের উচিত শিক্ষা দেবে।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, তরুণ প্রজন্ম আগামী নির্বাচনে অতীতের মতো এমন ভুল আর করবে না, যাতে বাংলাদেশে আবার কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। একটি সাম্যের ও বেকারমুক্ত দেশ গড়তে নতুন ভোটারদের দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রশীদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, খুলনা মহানগরী জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রসাদ, খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা মুহা.

নোমান হোসেন, খুলনা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

১২ দিনের নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত

জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১ থেকে ১২ অক্টোবর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এর আগে একই দাবিতে সেপ্টেম্বর মাসে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল দলটি।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে ছাত্রলীগ কর্মীর ছুরিকাঘাতে জামায়াতের যুব বিভাগের নেতা নিহত

ক্ষমতায় গেলে কাউকে দাবি নি‌য়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না: জামায়াতের আমির

পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো-
৫ দফা দাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে গণসংযোগ। এ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা। গোলটেবিল বৈঠক। সেমিনার ইত্যাদি।

এছাড়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১০ অক্টোবর রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কাছে  স্মারকলিপি পেশ।

যে পাঁচ দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো হলো-জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা। আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা। ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা। স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

এতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি' হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। এ লক্ষ্যে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়ার জন্য আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াত ইতোমধ্যে সরকারের কাছে দুটি প্রস্তাব করেছে।

প্রথমত, জুলাই জাতীয় সনদের জন্য ‘সংবিধান আদেশ' জারি করা। দ্বিতীয়ত, এই সনদের অধিকতর আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, সেটা না হলে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ছাড়া ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।

জনগণের দাবিগুলো কার্যকর করতে সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে জানিয়েছে জামায়াত।

জামায়াতের এর আগে ঘোষণা করা পাঁচ দফা জনগণের কাছে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি। তাই জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে জামায়াত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম ও হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইফুল আলম খান, মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১২ দিনের নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত
  • ১ থেকে ১২ অক্টোবর নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত