ভারতে থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নিহত বেড়ে ৩৬
Published: 27th, September 2025 GMT
ভারতের তামিলনাড়ুতে অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয়ের দল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগামের (টিভিকে) জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪০ জনের বেশি।
শনিবার সন্ধ্যায় তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা সুভ্রামানিয়ান বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন নারী, ৯ জন পুরুষ ও ৬ শিশু রয়েছেন।
কারুর-ইরোড মহাসড়কের ভেলুসামাইপুরামে থালাপতি বিজয়ের ‘ভেলিচাম ভেলিয়েরু’ নামের এক জনসভায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। একপর্যায়ে তিনি বক্তৃতা বন্ধ করতে বাধ্য হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত পৌনে আটটার দিকে বিপুলসংখ্যক লোক থালাপতি বিজয়কে একনজর দেখার জন্য মঞ্চের ব্যারিকেডের দিকে এগিয়ে যান। ওই সময় ঘটনার সূত্রপাত হয়। লোকজন হুড়োহুড়ি করে সামনে যাওয়ার সময় অনেকেই অচেতন হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় শিশুরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উপস্থিত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকেরা পরিস্থিতি সামলানোর আগেই অনেকে পদদলিত হন।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি লোক সমাগম হয়। এতে ৩০ হাজারের মতো মানুষকে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৬০ হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ হেঁটে, কেউ ট্রাক্টরে ও অনেকে বাসে করে সমাবেশস্থলে পৌঁছান।
পুলিশের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি লোকের সমাগম হয়। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে প্রবেশপথগুলোতে জট লেগে যায়।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঞ্চের চারপাশে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা ছিল না। ফলে বিজয়কে একনজর দেখার জন্য মানুষ যখন সামনে এগোতে থাকে, তখন অতিরিক্ত চাপে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
যানজটের কারণে ওই এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবকেরা মানববন্ধনের মতো করে দাঁড়িয়ে আহতদের জন্য পথ তৈরি করে দেন। আহতদের অনেককে কারুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অনেককে ইরোড ও তিরুচিরাপল্লি মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘তামিলনাড়ুর করুরে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই কঠিন সময়ে তাঁরা ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন বলে আশা করছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারতে গিয়েছেন। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে—সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে তা জাতির কাছে পরিষ্কার করতে হবে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে ভারতের আধিপত্যবাদকে বাংলার মানুষ এই দেশ থেকে তাড়িয়েছে। ভারতের আধিপত্যবাদ ও বশ্যতা বাংলার মানুষ আর কখনোই গ্রহণ করবে না। এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ভারতের অন্যায় কোনো আবদারে এবং অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি নতি স্বীকার করতে চায়, তাহলে আপনাদের পরিণতিও শুভ হবে না। জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির ফাঁদে পা দিয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘একটি দল সংস্কার চাচ্ছে না। তারা পুরোনো বস্তাপচা নিয়মে নির্বাচন করতে পাঁয়তারা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারও ওই দলের ফাঁদে পা দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। যদি সংস্কার না হয়, শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। সে জন্য আমরা গণভোটের কথা বলেছি। সরকার গণভোট দেবে বলেছে, কিন্তু প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। সেটা হচ্ছে, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। তাদের বুঝতে হবে, এই দুটো নির্বাচন এক জিনিস নয়। কিন্তু ওই দলটি আলাদা গণভোট চায় না। কারণ, ডাকসু, চাকসু, জাকসু ও রাকসুর নির্বাচনের ফলাফল। জনগণ সংস্কারের পক্ষে। জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি গণভোট হয়, তাহলে শতকরা ৮০ ভাগ লোক আমাদের পক্ষে রায় দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ শাহজাহান। আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, চৌদ্দগ্রাম পৌর আমির মাওলানা মু. ইব্রাহীম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসাবিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন, কুমিল্লা জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।