ভারতের তামিলনাড়ুতে অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয়ের দল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগামের (টিভিকে) জনসভায় পদদলিত হয়ে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪০ জনের বেশি।

শনিবার সন্ধ্যায় তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা সুভ্রামানিয়ান বলেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন নারী, ৯ জন পুরুষ ও ৬ শিশু রয়েছেন।

কারুর-ইরোড মহাসড়কের ভেলুসামাইপুরামে থালাপতি বিজয়ের ‘ভেলিচাম ভেলিয়েরু’ নামের এক জনসভায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তিনি বক্তব্য দেওয়ার সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। একপর্যায়ে তিনি বক্তৃতা বন্ধ করতে বাধ্য হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত পৌনে আটটার দিকে বিপুলসংখ্যক লোক থালাপতি বিজয়কে একনজর দেখার জন্য মঞ্চের ব্যারিকেডের দিকে এগিয়ে যান। ওই সময় ঘটনার সূত্রপাত হয়। লোকজন হুড়োহুড়ি করে সামনে যাওয়ার সময় অনেকেই অচেতন হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় শিশুরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উপস্থিত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকেরা পরিস্থিতি সামলানোর আগেই অনেকে পদদলিত হন।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি লোক সমাগম হয়। এতে ৩০ হাজারের মতো মানুষকে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৬০ হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ হেঁটে, কেউ ট্রাক্টরে ও অনেকে বাসে করে সমাবেশস্থলে পৌঁছান।

পুলিশের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি লোকের সমাগম হয়। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে প্রবেশপথগুলোতে জট লেগে যায়।

স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঞ্চের চারপাশে পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা ছিল না। ফলে বিজয়কে একনজর দেখার জন্য মানুষ যখন সামনে এগোতে থাকে, তখন অতিরিক্ত চাপে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

যানজটের কারণে ওই এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবকেরা মানববন্ধনের মতো করে দাঁড়িয়ে আহতদের জন্য পথ তৈরি করে দেন। আহতদের অনেককে কারুর জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অনেককে ইরোড ও তিরুচিরাপল্লি মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘তামিলনাড়ুর করুরে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই কঠিন সময়ে তাঁরা ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন বলে আশা করছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের দ্রুত আইনি ভিত্তি দিতে হ‌বে: মাওলানা ইমতিয়াজ

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দ্রুত দি‌তে সরকা‌রের প্রতি আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম।

তি‌নি ব‌লে‌ছেন, “আইনী ভি‌ত্তি না থাক‌লে অচিরেই কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এই অভ্যুত্থানকে ষড়যন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।”

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা ব‌লেন।

জুলাই সন‌দের ভি‌ত্তি নি‌য়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ইমতিয়াজ আলম ব‌লেন, “দেশের পরিস্থিতি এবং কতিপয় নামধারী বুদ্ধিজীবীর কথাবার্তা দিনদিন অবনতি হচ্ছে। জুলাই সনদের আইনি কোনো ভিত্তি না থাকায়, জুলাই অভ্যুত্থানকে মুছে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। তাই, দ্রুত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান কর‌তে হ‌বে।”

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চেতনার ব্যবসা করে দেশকে গোল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে মন্তব্য ক‌রে তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লব নিয়ে কোনো ধরনের চেতনা ব্যবসা এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।” অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় জুলাইয়ের সঠিক ইতিহাস লেখার আহ্বান জানান তিনি। 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, “জুলাইয়ে শহীদ এবং আহতরা হলো এই আন্দোলনের মূল মাস্টারমাইন্ড। তাদেরকে দেখেই সাধারণ জনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকলে সহস্রাধিক শহীদ এবং লক্ষাধিক আহতদের কোনো একসময় দেশদ্রোহী, বিশ্বাসঘাতক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেও কিছু করার থাকবে না। আহতদের পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে।” আহতদের পরিপূর্ণ পুনর্বাসন জরুরি বলে মনে করেন তিনি। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদের দ্রুত আইনি ভিত্তি দিতে হ‌বে: মাওলানা ইমতিয়াজ
  • ফেনীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস দোকানে, নিহত ৩
  • চেন্নাইয়ে থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টে  দুর্ঘটনায় ৯ শ্রমিক নিহত
  • জনসভায় প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় কী বললেন থালাপতি বিজয়
  • পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদর দপ্তরের কাছে বিস্ফোরণ, নিহত ১০