গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় বুয়ালইয়ের তাণ্ডবে ফিলিপাইনে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত, ১৪ জন নিখোঁজ এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির সংবাদ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আনাদোলুর। 

ফিলিপাইনের জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল জানিয়েছে, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় যা স্থানীয়ভাবে ওপং, নান্দো এবং মিরাসোল নামে পরিচিত- কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং ভূমিধসে মোট ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৪টি পরিবার বা ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭০৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়ে তাইওয়ানে ১৪ জনের মৃত্যু, অচল হংকং

অস্বাভাবিক জোয়ারে হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত  

সংস্থাটির তথ্যানুসারে, ৪৬ হাজার ৬১১টি পরিবার বা ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩১৭ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বর্তমানে ২ হাজার ৬৮০টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে এবং আরো ৩১ হাজার ৪৪৮টি পরিবার বা ১ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৭ জন ব্যক্তি এই কেন্দ্রগুলোর বাইরে সাহায্য পাচ্ছে।

কাগায়ান উপত্যকায় ৮ জন, বিকোল অঞ্চলে ৯ জন, কর্ডিলেরা প্রশাসনিক অঞ্চলে ৪ জন, সেন্ট্রাল লুজন অঞ্চলে ২ জন, সেন্ট্রাল ভিসায়াস অঞ্চলে ২ জন  পূর্ব ভিসায়াস অঞ্চলে ১ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

ভারী বৃষ্টিপাত, তীব্র বাতাস এবং বন্যায় মোট ৮ হাজার ৯১৬টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির সরকার বিভিন্ন জাতীয় সংস্থা এবং স্থানীয় সরকার ইউনিটের মাধ্যমে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৬৭৫টি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে।

গত শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় বুয়ালই ফিলিপাইনে আঘাত হানে। এর প্রভাবে মধ্য ফিলিপাইন ও দক্ষিণ লুজনে মুষলধারে বৃষ্টিপাত ও শক্তিশালী ঝড় বয়ে যায়। এতে ইতিমধ্যেই বন্যকবলিত বুলাকানের জনজীবন আরো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। 

গত সপ্তাহে সুপার টাইফুন রাগাসার ক্ষয়ক্ষতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ফিলিপাইন। এর মধ্যে নতুন করে ঘূর্ণিঝড় বুয়ালইয়ের কবলে পড়ে দেশটি। সুপার টাইফুন রাগাসার তাণ্ডবে তাইওয়ান ও ফিলিপাইনে ২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় বুয়ালই আজ সোমবার দুপুরে মধ্য ভিয়েতনামে আঘাত হানবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। পূর্বসতর্কতা হিসেবে দেশটি তার বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে এবং ঝড়ের ঝুঁকিতে থাকা এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঝড় ফ ল প ইন পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।

গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।” 

আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”

দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”

তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ