জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধনযোগ্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ ফর সোসিও ইকোনমিক অ্যাকটিভিটি (ইসিয়া)। সংস্থাটির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ঢাকার ধামরাই উপজেলার বাসনা গ্রামে। তবে ওই গ্রামে গিয়ে সংস্থাটির খোঁজ পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, ১০ থেকে ১৫ বছর আগে বাসনা এলাকায় একটি টিনশেডের মার্কেটে সংস্থাটির কার্যক্রম চলত। তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে সেখানে গিয়ে পাওয়া যায় চা ও বিস্কুটের দোকান। তবে উপজেলার বাথুলি বাসস্ট্যান্ডে সংস্থাটি কার্যালয় রয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত শনিবার ৭৩টি সংস্থার তালিকা প্রকাশ করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ইসির গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব সংস্থা নিয়ে কারও কোনো আপত্তি থাকলে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে (২০ অক্টোবর) লিখিতভাবে জানাতে হবে। এরপর শুনানি করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে যে এসব প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হবে কি না।

সোমবার বিকেলে ধামরাই উপজেলার বাসনা এলাকায় গিয়ে ইসিয়ার বিষয়ে খোঁজ নেন এই প্রতিবেদক। স্থানীয় কয়েকজন জানান, বাসনা বাসস্ট্যান্ডের একটি মার্কেটে সংস্থাটির কার্যালয় ছিল। ওই মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, পাকা দেয়ালের টিনশেডের মার্কেটটির একটি অংশে চায়ের দোকান। অপর অংশের শাটার বন্ধ।

আরও পড়ুনসংস্থার কার্যালয় পরিত্যক্ত, ঝোপঝাড়ে ঘেরা টিনশেডে ভিমরুলের চাক৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই মার্কেটের পাশে চায়ের দোকানি বেলায়েত হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বন্ধ থাকা দোকানটিতে বেকারির বিস্কুট বিক্রি করা হয়। পাশে চায়ের দোকান। ১০ থেকে ১৫ বছর আগে সেখানে ইসিয়ার কার্যালয় ছিল।

বেলায়েত জানান, সংস্থাটি ঋণ দিত, টয়লেটের সামগ্রী দিত। ১০ থেকে ১৫ বছর আগে কিছুদিনের জন্য একই এলাকায় সংস্থার কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে সংস্থাটি সরে যায়। এরপর বাসনা এলাকায় আর কার্যক্রম দেখা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় বলেন, ‘বহু বছর ধরে বাসনা এলাকায় ওই সংস্থার কোনো কার্যক্রম দেখছি না। এখন যেখানে চা ও বিস্কুট বিক্রির দোকান, ওই খানেই তাদের কার্যালয় ছিল।’

আরও পড়ুনদেশীয় ৭৩টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনযোগ্য জানিয়ে ইসির গণবিজ্ঞপ্তি২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ইসিয়ার নির্বাহী পরিচালক আবদুল আজীজ প্রথম আলোকে বলেন, সংস্থাটি রেজিস্ট্রেশনের সময় যে ঠিকানা দেওয়া ছিল, সেই ঠিকানা হিসেবে ইসিতে বাসনা এলাকার কথা বলা হয়েছে। এখন উপজেলার বাথুলি বাসস্ট্যান্ডে সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। প্রায় আট বছর ধরে সেখান থেকেই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মূলত সংস্থাটির মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান, বৃক্ষরোপণ, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নানা উন্নয়নমূলককাজ করা হয়। ঢাকার সাভার, মানিকগঞ্জসহ তিনটি জেলায় সংস্থাটির পাঁচটি শাখা রয়েছে। এর আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সংস্থাটি কোনো দায়িত্ব পালন করেনি।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাথুলি বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে আতাব আলীর পাকা দেয়ালের তিন কক্ষের টিনশেডের বাড়িতে ইসিয়ার কার্যালয় পাওয়া যায়। বাড়ির এক পাশের দেয়ালে সংস্থার সাইনবোর্ড দেখতে পাওয়া যায়।
এ কার্যালয়ে বর্তমানে পাঁচজন কর্মকর্তা কাজ করেন বলেন জানান শাখা ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, সংস্থাটির সাত সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদ আছে। ২০১৭ সালে বাসনা এলাকা থেকে বাথুলি এলাকায় কার্যালয়টি সরিয়ে আনা হয়েছে।

আরও পড়ুনভোট পর্যবেক্ষণে নামসর্বস্ব সংস্থাও, অফিস বাসায়, পরিত্যক্ত ঘরে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল র ব এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

সাত বছর আগে সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ

যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুদেশের বহু দশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫

সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ সালমানের হাত রয়েছে।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, যুবরাজই খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।

যুবরাজ সালমান খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।

খাসোগি হত্যার পর সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে।

আরও পড়ুনসৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির চুক্তি’ যুক্তরাষ্ট্রের১৩ মে ২০২৫

ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরবে তাঁর সফরের সময় দেওয়া ৬০ হাজার কোটি ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।

মে মাসের ওই সফরে ট্রাম্প সৌদি আরবে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই) এবং বেসামরিক খাতে একটি পারমাণবিক প্রকল্প চুক্তির পথে অগ্রসর হতে চাইছেন।

আরও পড়ুনখাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যেখানে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের পছন্দমতো দামে তেল বিক্রি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে।

আরও পড়ুনখাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: সৌদি আরব২৬ অক্টোবর ২০১৮

সম্পর্কিত নিবন্ধ