চাঁদপুরে পুড়িয়ে দেওয়া সেই নারীর মৃত্যু, অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন
Published: 2nd, October 2025 GMT
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া গৃহবধূ শাহনাজ বেগম (৩৮) মারা গেছেন। বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে তিনি রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় অভিযুক্ত নাসিমা বেগমের বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন উত্তেজিত জনতা। উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের উপাদিক গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, গত ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাতে গৃহবধূ শাহনাজ বেগমের শরীরে আগুন দেয় সন্ত্রাসীরা। তাদের ধারণা, সুদের টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে নাসিমা বেগম ও তার সহযোগীরা ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারেন। এরপর নাছিমা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকার পাঁচদিন পর বুধবার শাহনাজ মারা যান।
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভিমরুলের কামড়ে শিশুর মৃত্যু
গোপালগঞ্জে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
আরো পড়ুন: চাঁদপুরে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
এ ঘটনায় উত্তেজিত লোকজন সন্ধ্যায় নাছিমার বাড়িতে হামলা চালান। তারা লুটপাট শেষে বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
মারা যাওয়া শাহনাজ বেগমের স্বামী আমিনুল খান বলেন, “নাছিমা বেগম একজন সুদ ব্যবসায়ী। গত কয়েক মাস ধরেই সুদের টাকা পরিশোধ ও স্ট্যাম্প দেওয়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি আগেও আমার স্ত্রীকে কয়েক দফা মেরেছিলেন। সবশেষ গত শুক্রবার রাতে আমার স্ত্রীকে পেছন দিক থেকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনায় নাছিমা বেগমসহ আরো কয়েকজন লোক জড়িত ছিলেন। আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, নাছিমা বেগম বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে তথ্য যাচাই বাছাইও করছে পুলিশ। এরমধ্যে মব সৃষ্টি করে লুটপাট শেষে তার বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার যে ঘটনা ঘটানো হলো তা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ কাজ। এটা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।”
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নাছিমা বেগমের স্বামী হাফিজ মিয়াসহ তাদের স্বজনরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শাহনাজ বেগমের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহআলম। তিনি বলেন, “বাড়িতে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নাছিমা বেগমকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন ব গম র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে কোনো অবস্থাতেই ফেরত পাঠাবে না ভারত: রাজনৈতিক বিশ্লেষ
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর আসামি সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের সাজা।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা এবং এরপর থেকে তিনি ভারত সরকারের আশ্রয়েই রয়েছেন। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনার অনুপস্থিতি তার বিচার পরিচালনা করে। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কেবল সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ান স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত। তিনি বলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আদালতের এই রায় প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না ভারত।”
আলজাজিরাকে দেওয়া মন্তব্যে দত্ত আরো বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ভারত তাকে প্রত্যর্পণ করবে না। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো অবস্থায় নেই এবং অনেক সময়ই ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।”
দত্ত বলেন, “হাসিনার মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশিত ছিল।”
তিনি বলেন, “সবাই বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখেছেন। সবাই আশা করেছিলেন যে হাসিনার বিচার হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা একমত যে, বাংলাদেশে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম দেশের আইনি ব্যবস্থা অনুসরণ করেছে।”
দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে কারো সন্দেহ নেই। স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।”
দত্তের ভাষ্যমতে, “আওয়ামী লীগ এখন একটি পাল্টা ব্যাখ্যা তৈরির তৈরি করার চেষ্টা করবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা মূলত বিশ্বাস করেন যে- হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ