চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালাখাল ইউনিয়নের ভূইয়ারা গ্রামে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মনসামুড়া বাঁশঝাড়। খোলা মাঠে বিলের মাঝখানে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই ঝাড়ে বাঁশ কাটতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। স্থানটি সাপের স্বর্গরাজ্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

প্রিয়তোষ নামের এক ব্যক্তি বলেছেন, কয়েকশ’ বছর আগে খোলা বিলের মাঝখানে তৈরি হয় এই বাঁশঝাড়। এটা আমরা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনেছি। তবে, এখান থেকে বাঁশ কেটে ব্যবহার করতে গিয়ে অনেকেই বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় পড়েছেন। 

রাজীব নামের একজন জানান, এখানে জমিদার লোধ পরিবারের সদস্যরা থাকতেন। প্রায়ই এখানে প্রকাশ্যে বিষধর সাপ চলাচল করত। তারা স্বপ্নে জানতে পারেন যে, মনসা দেবীর পূজা করলেই সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এরপর থেকেই স্থানীয় জমিদার লোধ পরিবারের সদস্য বংশপরম্পরায় এই বাঁশঝাড় ঘিরে মনসা পূজা করেন এবং স্থানটির নাম হয় মনসামুড়া।

স্থানীয় বাসিন্দা রিপন জানান, বাঁশঝাড়ের ভেতর মনসা মন্দির নির্মাণ করেন স্থানীয়রা। এই মন্দির এতটাই জাগ্রত যে, কোনো মানত করলে তার ফল পাওয়া যায় বলে জনশ্রুতি আছে। এই ঝাড়ের বাঁশ ব্যবহারে মৃত্যুর কথা চারদিকে জানাজানি হওয়ায় এখন আর কেউ এখানে একটি বাঁশও কাটেন না এবং কোনো কাজে ব্যবহার করেন না।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের কচুয়া যুব ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক অসীম পোদ্দার বলেছেন, জমিদার চাঁদ সওদাগর প্রথম মনসা পূজা আরম্ভ করেন। পূজা শেষে মনসা প্রতিমা নদীতে বিসর্জন দেন। স্বপ্নে জানা যায়, সেই মনসা প্রতিমায় ব্যবহার করা বাঁশ ভাসতে ভাসতে এখানে এসে আটকে যায়। সেখান থেকে উৎপত্তি হয় এই বাঁশঝাড়ের। এটি হয়ে ওঠে সাপের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সাপের দেবী মনসার পূজা শুরু হওয়ার পর থেকেই এ স্থানটি মনসামুড়া নামে পরিচিত লাভ করে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ ও ভাদ্র মাসের প্রথম দিন এখানে মনসা পূজায় হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে।

ঢাকা/অমরেশ/রফিক 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র মনস ম ড়

এছাড়াও পড়ুন:

লেবাননে ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৩

দক্ষিণ লেবাননের একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির। 

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা আইন এল-হিলওয়ে এলাকায় ‘একটি প্রশিক্ষণ কম্পাউন্ডে কর্মরত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সদস্যদের’ লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়েছে।

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৪

হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা লেবাননের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রীর

ইসরায়েল বলছে, হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনার জন্য এই স্থানটি ব্যবহার করেছিল। তবে হামাস ইসরায়েলের এই দাবিকে ‘বানোয়াট ও মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

হামাসের পক্ষ জোর দিয়ে বলা হয়েছে, লেবাননের শরণার্থী শিবিরে তাদের কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই। একটি বিবৃতি দিয়ে হামাস দাবি করেছে, নিরীহ ফিলিস্তিনি জনগণের পাশাপাশি লেবাননের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এটি ইসরায়েলের একটি বর্বর আগ্রাসন।

হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক বছর পর এটি ছিল লেবাননে ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি। 

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি এলাকায় সেনা মোতায়েন করেছে এবং প্রায় প্রতিদিনই বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। 

ইসরায়েল এসব হামলা লেবাননে চলা যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ