যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাবে ‘আংশিক’ সম্মতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিলেও কিছু প্রস্তাবে আরো আলোচনা প্রয়োজন বলে তারা জানায়।

হামাস জানিয়েছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে অবিলম্বে আলোচনায় বসতে এবং বিনিময়ের বিস্তারিত বিষয়গুলো আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে তাদেরও কিছু শর্ত রয়েছে। 

আরো পড়ুন:

হামাসের ইতিবাচক সাড়া, গাজায় হামলা থামাতে বললেন ট্রাম্প

ফ্লোটিলা থেকে শহিদুল আলম, ‘সামনে কী, বোঝার চেষ্টা করছি’

হামাসের মুখপাত্র আবু মারজুক আলজাজিরাকে বলেন, “ফিলিস্তিনিরা কখনোই তাদের ওপর কোনো বাইরের সংস্থার নিয়ন্ত্রণ মেনে নেবে না। ফিলিস্তিনিদের নিজেদেরই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমরা কখনোই কোনো ফিলিস্তিনিদের বাইরের কাউকে নিয়ন্ত্রণ করতে দেব না। বিশেষ করে ব্লেয়ার এখানে অগ্রহণযোগ্য। আমরা টনি ব্লেয়ারের মতো কাউকে গাজার গভর্নর বানাতে পারি না, কারণ এই ব্যক্তি ইরাক ধ্বংস করেছে।”

হোয়াইট হাউস কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহের শুরুতে একটি ২০ দফাবিশিষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর, হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কাছে থাকা ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধাপে ধাপে সরে যাওয়া। 

ট্রাম্পের গাজা প্রস্তাবের আরেকটি একটি শর্ত ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন তদারকি সংস্থা ‘বোর্ড অব পিস’ এর নেতৃত্ব দেবেন। এই বোর্ডে সাবেক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাও থাকবেন।

হামাস জানায়, আলোচনা ছাড়া ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তবে মিশর থেকে উপস্থাপিত আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত হয়েছে। গাজার জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা আরও পরিষ্কার ব্যাখ্যা ও বোঝাপড়ার প্রয়োজন। অগ্রাধিকার হলো—ইসরায়েলের যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধ করা। হামাস তার অস্ত্র এবং সংগঠন-সম্পর্কিত সব বিষয় নিয়েই আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।

ট্রাম্প হামাসের বিবৃতিতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন হামাস ‘টেকসই শান্তির জন্য প্রস্তুত’।  

ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করুন, যাতে আমরা জিম্মিদের দ্রুত ও নিরাপদে মুক্ত করতে পারি।” 

তিনি আরো বলেন, “এটি কেবল গাজা সম্পর্কিত নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যে বহুদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত শান্তির বিষয়।”

আলজাজিরাকে হামাস নেতা আলি হাসেম বলেন, “হামাস অনেক ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। প্রস্তাবিত ২০ দফার মূল ভাবনা গ্রহণ করেছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগকে প্রশংসা করেছে।” তারা সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত বলেও জানান। তবে তিনি যোগ করেছেন, তাদের কিছু সংশয় আছে, কিছু বিষয় রয়েছে যা তারা পরিষ্কার করতে চায়, এবং এখন বলটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মাঠে।

কাতার হামাসের বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে তারা মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের বিষয়ে আলোচনার সমন্বয় করেছে।

এছাড়া, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে টেকসই শান্তির জন্য আরো আলোচনা ও কাজে সমর্থন দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

তিনি বলেন, “শান্তি পরিকল্পনার কিছু বিষয় হামাসের গ্রহণের মধ্য দিয়ে লড়াই বন্ধ, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা ও যাদের জরুরি প্রয়োজন তাদের জন্য মানবিক সহায়তার সুযোগ তৈরি হয়েছে।” তিনি সব পক্ষকে অবিলম্বে প্রস্তাবটি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ত প রস ত ব ইসর য় ল য ক তর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনী ও পুলিশের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

আগামী ফেব্রুয়ারিতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরভাবে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বুধবার মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসি কমপ্লেক্সে সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্স ২০২৫-এর সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন নির্বাচনের সময়। আমরা প্রস্তুত, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা প্রয়োজন।’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘এটি একটি বড় প্রয়াস। অভ্যুত্থান থেকে নির্বাচনের পথে যাত্রা। এটি হবে শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, আনন্দ ও মিলনের সময়। মানুষ তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে পারবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ