ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আটক সব ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র এ সংগঠন গতকাল শুক্রবার জানায়, সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব, ফিলিস্তিনিদের বিভক্ত অংশগুলো ও মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে ‘গভীর সলাপরামর্শের’ পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকালই নিজের মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, আগামী রোববার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব মেনে নিতে হবে। নয়তো হামাসকে ‘নরকযন্ত্রণা ভোগ’ করতে হবে। এর মধ্যে সব জিম্মি মুক্তি ও এরই মধ্যে মারা যাওয়া জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার শর্তও রয়েছে।

ট্রাম্পের এমন হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামাস জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবের আংশিক মেনে নিতে রাজি আছে। পরিকল্পনাটি ঘোষণার মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে এমন অগ্রগতি হলো। গত সোমবার ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়ে ২০ দফার এ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামাস জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবের আংশিক মেনে নিতে রাজি আছে। পরিকল্পনাটি ঘোষণার মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে এমন অগ্রগতি হলো। গত সোমবার ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সঙ্গে নিয়ে ২০ দফার এ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।

এক বিবৃতিতে গতকাল হামাস জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই প্রস্তাবে উল্লিখিত বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া মেনে জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে হামাস। তবে বন্দিবিনিময়ের জন্য মাঠপর্যায়ের শর্ত মানতে হবে।

হামাসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে অবিলম্বে টেবিলে ফিরতে প্রস্তুত আছে হামাস। তারা গাজা উপত্যকার শাসনভার একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি সংস্থার (টেকনোক্র্যাট) কাছে হস্তান্তর করতে চায়। এই সংস্থা ফিলিস্তিনি জাতীয় ঐকমত্য এবং আরব ও ইসলামি বিশ্বের সমর্থনের ভিত্তিতে গঠিত হবে।

হামাসের এ ঘোষণার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেন, যাতে জিম্মিদের নিরাপদে ও দ্রুত মুক্ত করা যায়। ট্রাম্পের মতে, চলমান হামলা আর সংঘাতের মধ্যে জিম্মিদের মুক্ত করা অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।

হামাস স্পষ্ট করেছে, ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার পুরোটায় তাদের সম্মতি নেই। আংশিক সম্মতি দিয়েছে তারা। গত সপ্তাহ থেকেই হামাস বারবার বলেছে, আরও বেশ কয়েকটি দফা নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো, গাজাকে সামরিকীকরণ মুক্ত করা।

হামাসের ঘোষণা ও ট্রাম্পের আহ্বানের পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে ‘গাজা দখল করার জন্য চালানো অভিযান থামানোর’ নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে এবং সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘আর্মি রেডিও’ এ খবর প্রচার করেছে।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, ‘যেসব বিষয় এখনো চূড়ান্ত হয়নি, সেগুলো নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করছি। এটি শুধু গাজা নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘকাল ধরে প্রত্যাশিত শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা।’

ইসরায়েলি চ্যানেল ১২-এর ওয়াশিংটন সংবাদদাতা বারাক রাভিদ একজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানান, ট্রাম্পের তাৎক্ষণিক এ প্রতিক্রিয়া ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অবাক করেছে।

আরও পড়ুনসেনাবাহিনীকে গাজায় ‘অভিযান থামাতে’ বলল ইসরায়েলি সরকার: আল-জাজিরা৩ ঘণ্টা আগে

হামাস স্পষ্ট করেছে, ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার পুরোটায় তাদের সম্মতি নেই। আংশিক সম্মতি দিয়েছে তারা। গত সপ্তাহ থেকেই হামাস বারবার বলেছে, আরও বেশ কয়েকটি দফা নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো গাজাকে সামরিকীকরণ মুক্ত করা।

হামাস কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক আল–জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলি দখলদারত্ব পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা (গাজায়) নিরস্ত্রীকরণ করবে না।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (বাঁয়ে) ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ম ক ত কর প রস ত ব ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনী ও পুলিশের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

আগামী ফেব্রুয়ারিতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরভাবে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ বুধবার মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসি কমপ্লেক্সে সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্স ২০২৫-এর সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন নির্বাচনের সময়। আমরা প্রস্তুত, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা প্রয়োজন।’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘এটি একটি বড় প্রয়াস। অভ্যুত্থান থেকে নির্বাচনের পথে যাত্রা। এটি হবে শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, আনন্দ ও মিলনের সময়। মানুষ তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে পারবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ