কলমের খোঁচায় যেভাবে ভাগ্য ধসে পড়ে, মানুষও সেই ক্ষতি করতে পারে না: জামায়াত
Published: 4th, October 2025 GMT
জাতিকে জাগ্রত করার ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, “কলমের খোঁচায় একজন মানুষের, জাতির কিসমত (ভাগ্য) যেভাবে ধসে পড়ে, কোটি মানুষ একত্র হয়েও সেই ক্ষতি করতে পারবে না। আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই, শিক্ষিত সমাজের সবাই নয়, কিন্তু শিক্ষিত সমাজের একটি অংশের মানুষ যে ক্ষতি জাতির করে, সাধারণ দেশবাসীর কোটি কোটি মানুষ মিলেও সেই ক্ষতি জাতির করতে পারে না।”
রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে শনিবার (৪ অক্টোবর) দলের কেন্দ্রীয় উলামা কমিটির ‘দাঈ ও ওয়ায়েজ সম্মেলনে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে’
জামায়াত-শিবিরের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত গণঅধিকার ও এনসিপি: রাশেদ
তিনি বলেন, “ওলামায়ে কেরামদের শুধু মসজিদের ইমাম নয়, জাতিরও ইমাম হতে হবে। জাতি সংকটে পড়লে আলেম বা শিক্ষিত ব্যক্তিদের পথ দেখাতে হয়।”
“তারা হবেন জাতির রাহবার। স্বাধীনতার এত বছর পরও দেশে মানবিক, দায়িত্বশীল আর সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কাজেই জাতি সংকটে আছে। পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ওলামায়ে কেরাম জাতিকে পথ দেখালে জাতি উপকৃত হবে। জাতিও তাদের কাছ থেকে সেটাই প্রত্যাশা করে।”
ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই মন্তব্য করে জামায়াতের এই শীর্ষনেতা বলেন, “সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী, দেশের ৯০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মুসলমান। বাকিরা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান। কিন্তু আমরা এখানে ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই। আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি দেখতে চাই।”
জামায়াতের আমির বলেন, “মানুষের সামনে বিভিন্ন ধর্ম–মত আছে। মানুষ তার বিবেচনা ও বিবেকের জায়গা থেকে ধর্মকে গ্রহণ করবে।” এ জায়গায় দাঈদের দায়িত্ব আল্লাহর শাশ্বত বিধান কোরআন ও রাসুল (সা.
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় ওলামা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আবদুল হালিম।
উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আইন যা-ই হোক, সঠিক বাস্তবায়নই বড় কথা
সংশোধিত শ্রম আইন অধ্যাদেশে শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ২৬ ধারায় শ্রমিকের চাকরিচ্যুতির বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়নি। অধ্যাদেশে মাতৃত্বকালীন ছুটির সময় কয়েক দিন বাড়ানো হয়েছে। তবে সরকারি কারখানা অথবা সংস্থায় মাতৃত্বকালীন ছুটির সমপরিমাণ ছুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও দেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। আমরা মনে করি, মাতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়ে কোনো বৈষম্য থাকা উচিত না। দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শ্রম আইন রয়েছে। আমাদের দাবি ছিল, দেশের সবখানে একই শ্রম আইন থাকবে; সেটি হয়নি। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পাঁচটি ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে, যা এত দিন তিনটি ছিল। এটি ইতিবাচক দিক। এতে অন্যান্য খাতের মতো চামড়াশিল্প খাতেও শ্রমিকেরা আরও বেশি সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাবেন।
এসব দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে সংশোধিত শ্রম আইন অধ্যাদেশে শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবিদাওয়ার কিছু কিছু বিষয় এসেছে, আবার কিছু কিছু বিষয় আসেনি। আমরা সব শ্রমিক সংগঠন আলাপ করে সর্বসম্মতভাবে একটা প্রতিক্রিয়া দেব। তবে আইন, বিধি যা-ই হোক, সেগুলোর সঠিক বাস্তবায়নই সবচেয়ে বড় কথা। বাংলাদেশের শ্রম আইন বলেন, বিধিমালা বলেন—এসব যে খুব খারাপ পর্যায়ে আছে, এমন না। কিন্তু আমরা সব সময় লক্ষ করি, এসব আইন ও বিধির প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন ঠিকভাবে হয় না। অতীতেও বিভিন্ন সময় বহুবার শ্রম আইন সংশোধন হয়েছে; বিধি পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়নের দুর্বলতার ক্ষেত্রে আমরা খুব বেশি পার্থক্য দেখিনি।
আবুল কালাম আজাদ, সভাপতি, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন