ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) গাজার কিছু এলাকা থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা জানান।

যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত সোমবার হোয়াইট হাউস একটি মানচিত্র প্রকাশ করে। এতে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন সীমারেখা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়। সেসব সীমারেখা থেকেই ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘হামাস নিশ্চিত করলেই যুদ্ধবিরতি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। জিম্মি ও বন্দী বিনিময় শুরু হবে। আমরা পরবর্তী ধাপে সেনা প্রত্যাহারের পরিবেশ তৈরি করব।’

বিবিসি ভেরিফাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত মানচিত্র অনুযায়ী প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারের পরও গাজার প্রায় ৫৫ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থেকে যাবে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের আহ্বানের পরও গাজায় থামেনি ইসরায়েলি হামলা৪৪ মিনিট আগে

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া ২০ দফা প্রস্তাবের কিছু শর্তে রাজি হয়েছে হামাস। সংগঠনটি বলেছে, তারা গাজায় জিম্মি অবস্থায় থাকা সব ইসরায়েলিকে মুক্তি দেবে। জিম্মিদের মধ্যে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মৃতদেহও হস্তান্তর করা হবে। এর বিনিময়ে তারা চায়, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনারা সরে যাক।

হামাসের এই ঘোষণার পর গাজায় হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান ট্রাম্প। তবে ওই আহ্বানের পরও শনিবার ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৫৫ জন নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো গাজা নগরীতে গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিমান হামলাও চালায়। হামলা চালানো হয় দক্ষিণের খান ইউনিসেও।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে।

আরও পড়ুনজিম্মি মুক্তিতে সম্মতি, তবে গাজায় বিদেশি শাসনে রাজি নয় হামাস১৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

কয়েক দিনের মধ্যেই জিম্মিদের মুক্তির প্রত্যাশা নেতানিয়াহুর, আলোচনার জন্য কায়রোর পথে প্রতিনিধিরা

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার বলেছেন, হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের কয়েক দিনের মধ্যেই ঘরে ফিরিয়ে আনতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। নেতানিয়াহু এমন সময় এ কথা বলেছেন যখন গাজা যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে আরও বিশদ আলোচনার জন্য মিসরের রাজধানী কায়রোর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন প্রতিনিধিরা।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে পুরোপুরি রাজি হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি হামাসের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বিলম্ব সহ্য করবেন না।

এর আগে হামাস ঘোষণা দিয়েছিল, মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুযায়ী, তারা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে। ট্রাম্প হামাসের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ইসরায়েলকে গাজায় হামলা থামাতে বলেছেন।

তবে এরপরও শনিবার ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়েছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, এসব হামলায় অন্তত ৫৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

নেতানিয়াহু স্থানীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, ‘সামরিক ও কূটনৈতিক চাপের মুখে জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে হামাস।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘আমি আশা করছি আগামী কয়েক দিনে আমরা আমাদের সব জিম্মিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব।’

আগামীকাল সোমবার থেকে ইহুদিদের সুক্কোত উৎসব শুরু হতে যাচ্ছে, যা এক সপ্তাহ চলবে। এই উৎসবের মধ্যেই জিম্মিদের ঘরে ফিরাতে পারবেন বলে আশাবাদী নেতানিয়াহু।

আরও পড়ুনগাজা থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে ইসরায়েল: ট্রাম্প২ ঘণ্টা আগে

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি তাঁর প্রতিনিধিদের কৌশলগত বিস্তারিত বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনার জন্য মিসরে পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে মিসরের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, হামাসের একটি প্রতিনিধি দলও আলোচনার জন্য সেখানে উপস্থিত হবে। ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী সেখানে বন্দী বিনিময়ের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প শনিবার দুজন কূটনীতিক মিসরে পাঠিয়েছেন। তারা হলেন— তার ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার এবং তাঁর মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।

আরও পড়ুনট্রাম্পের আহ্বানের পরও গাজায় থামেনি ইসরায়েলি হামলা২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ