কোন করদাতার বার্ষিক করমুক্ত সীমা কত
Published: 5th, October 2025 GMT
আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়-ব্যয়ের খবর জানিয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে রিটার্ন জমার তোড়জোড় চলে। করদাতারা নানা ধরনের কাগজ জোগাড় করতে থাকেন। আইনজীবীদের কাছে দৌড়াদৌড়ি করেন।
মনে রাখবেন, এবার কিন্তু করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি। এর মানে হলো, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত আপনি কত টাকা আয় করলেন, কত টাকা বিনিয়োগ করলেন, আপনাকে কত টাকা আয়কর দিতে হবে, সে হিসাব করতে হবে।
এবার দেখা যাক, কোন ধরনের করদাতাদের জন্য করমুক্ত সীমা কত। দেখে নিন, আপনি কোন শ্রেণিতে আছেন:
১.
সাধারণ করদাতাদের জন্য আগের মতোই বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এর মানে হলো, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত আপনার আয় যদি সাড়ে তিন লাখ টাকা পেরিয়ে যায়, তাহলে আপনাকে কর দিতে হবে।
২. নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতা
নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতার জন্য করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকা করা হয়েছে।
৩. তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা ও প্রতিদ্বন্দ্বী করদাতা
এই শ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা হলো ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
৪. গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা
৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় থাকলে কর দিতে হবে গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের।
৫. প্রতিবন্ধী সন্তানদের পিতা–মাতা
কারও প্রতিদ্বন্দ্বী সন্তান থাকলে পিতা-মাতা করদাতা হলে নিয়মিত করমুক্ত আয়সীমার পরও বাড়তি ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পাবেন। এই ছাড় দেওয়া প্রতিদ্বন্দ্বী সন্তানের ভরণপোষণের জন্য। তবে পিতা ও মাতা দুজন করদাতা হলে যেকোনো একজন করছাড়ের সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া আইনানুগ অভিভাবক করদাতা হলেও বাড়তি ৫০ হাজার টাকা ছাড় পাবেন।
কত করপ্রথম সাড়ে ৩ লাখ টাকার পর প্রথম ১ লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ ও পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২৫ শতাংশ এবং বাকি অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর বসবে।
নতুন করদাতার ন্যূনতম কর ১০০০ টাকানতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। করমুক্ত আয়সীমা পার হলেই এক হাজার টাকা কর দিতে হবে। বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার টাকা, অন্য সিটির করদাতার জন্য চার হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্য এলাকার করদাতার জন্য তিন হাজার টাকা দিতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১ কোটি ১৫ লাখের মতো কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএনধারী) আছেন। চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪০ লাখ করদাতা রিটার্ন দিয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: করম ক ত আয়স ম ল খ ট ক র জন য র করদ ত ন করদ ত পরবর ত কর দ ত
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের হত্যাযজ্ঞের ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় না: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিচার ‘সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত কোনোটিই হয়নি’ বলে মনে করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংস্থাটি।
এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, সে জন্য যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ায় তদন্ত ও বিচারকাজ হতে হবে। কিন্তু এই বিচার ও সাজা কোনোটিই সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত হয়নি। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি পাওয়া দরকার। অথচ মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এটি সবচেয়ে নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি। কোনো ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় এর (মৃত্যুদণ্ডের) স্থান নেই।’
২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হন উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আহত ও নিহতদের পরিবারের ন্যায়বিচারের জন্য অত্যন্ত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারপ্রক্রিয়া প্রয়োজন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড বজায় রেখে করা হবে। সেখানে এই মামলার বিচার সেই আদালতে পরিচালিত হয়েছে, যে আদালতের (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) স্বাধীনতার ঘাটতি ও অন্যায্য বিচার কার্যক্রমের জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা করে আসছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘(আসামিদের) অনুপস্থিতিতে এই বিচারের কার্যক্রম নজিরবিহীন দ্রুতগতিতে করা হয়েছে এবং এ রায় এই মাত্রার ও গুরুত্বের মামলার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে। আদালত নিযুক্ত আইনজীবী শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্ব করলেও তিনি (বিবাদীকে) রক্ষার্থে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য খুব কম সময় পেয়েছেন। ন্যায়সংগত না হওয়া বিচারের এ ধরনের সূচকগুলো আরও গুরুতর হয়ে ওঠে, যখন বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব প্রমাণকে বিরোধপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়েছে, সেগুলো যাচাই (ক্রস এক্সামিনেশন) করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ১০ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘সুষ্ঠু বিচার’ নয় উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি বলেছে, ‘২০২৪ সালের জুলাইয়ের ভুক্তভোগীদের আরও ভালো বিচার প্রাপ্য। বাংলাদেশের এমন একটি ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া প্রয়োজন, যা সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ, সব ধরনের পক্ষপাতের সন্দেহের বাইরে থাকবে এবং যা মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে আরও বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটাবে না। কেবল তখনই সত্য, ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ যথাযথ এবং অর্থপূর্ণভাবে করা সম্ভব হবে।’
বিবৃতির শেষে বলা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোনো ক্ষেত্রেই মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না। এই নীতির ক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রম নেই। অপরাধের ধরন বা পরিস্থিতি, ব্যক্তির দোষ বা নির্দোষ হওয়া অথবা রাষ্ট্র যে পদ্ধতিতে ফাঁসি কার্যকর করে, কোনো ক্ষেত্রেই তারা মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না।
আরও পড়ুনযেসব কারণে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায়৪ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনআন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের খবর কতটা গুরুত্ব পেল৭ ঘণ্টা আগে