‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে’ উদযাপনে প্রস্তুত বান্দরবান
Published: 5th, October 2025 GMT
বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে’ বা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। প্রতিবছরের মতো এবারও তিন দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে উদযাপিত হবে এ উৎসব।
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব হিসেবে পরিচিত ওয়াগ্যোয়াই পোয়েকে ঘিরে এরইমধ্যে বান্দরবানের বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ফানুস বানানো ও রাজহংসী আকৃতির রথ তৈরির শেষ ব্যস্ততা।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জানান, প্রাচীনকাল থেকে বর্ষাবাস (উপোষ) শেষ করে আশ্বিনী পূর্ণিমায় ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় এই উৎসব পালন করে আসছে মারমা সম্প্রদায়। কথিত আছে, এই দিনেই গৌতম বুদ্ধ তার মাথার চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেই স্মরণে ভক্তরা শত শত রঙিন ফানুস আকাশে উড়িয়ে বুদ্ধকে উৎসর্গ করেন।
উৎসব উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এ উপলক্ষে রাজহংসী আকৃতির বিশাল রথ তৈরি করা হয়েছে, যার ওপর বুদ্ধমূর্তি বসিয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে সাঙ্গু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হবে। রথযাত্রার পেছনে বৌদ্ধ ভক্তরা প্রদীপ হাতে ধর্মীয় দেশনা গান পরিবেশন করবেন। অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য বাড়াতে তৈরি করা হয়েছে দেবতার আকৃতির পুতুল (পোছোমা)।
৬ অক্টোবর রাতে শহরের বিভিন্ন পাড়ায় আয়োজন করা হবে পিঠা তৈরির উৎসব। তরুণ-তরুণীরা দলবেঁধে পিঠা তৈরি করে ভোরে সেগুলো ভগবান বুদ্ধকে দান করবে এবং প্রতিবেশীদের মধ্যেও বিতরণ করবে।
রথ কারিগর ক্যওয়ান মারমা জানান, কয়েকজন বন্ধু মিলে রাজহংসীর আদলে একটি রথ ও পাঁচটি পুতুল তৈরি করেছেন তারা, যার কাজ প্রায় শেষের দিকে। অন্যদিকে ফানুসশিল্পী চহ্লামং, এসিংমং ও অংচিংমং জানান, বর্ণিল ফানুসগুলো প্রবারণা পূর্ণিমার রাতে চূলামনি জাদি (বুদ্ধের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ) হিসেবে আকাশে উড়ানো হবে।
উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি চনুমং মারমা জানান, এবারের আয়োজনের মধ্যে রয়েছে মঙ্গল রথযাত্রা, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন, পিঠা উৎসব, ফানুস উড়ানো, পঞ্চশীল গ্রহণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রবিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঐতিহ্যবাহী রাজা মাঠে গুরু ভান্তেদের ধর্মদেশনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন হবে। অনুষ্ঠানে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এদিকে, উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো.
তিনি আরো বলেন, “খাগড়াছড়ির সাম্প্রতিক ঘটনায় বান্দরবানে কোনো প্রভাব পড়েনি। এখানে পাহাড়ি-বাঙালি সবাই সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। বান্দরবানের মানুষ দেশ ও অঞ্চলকে ভালোবাসে, তাই উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে।”
ঢাকা/চাইমং/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ন দরব ন উদয প
এছাড়াও পড়ুন:
দিনভর আনন্দ উৎসবে ‘সোনার মানুষ’ হওয়ার প্রত্যয়
জেরিন, নিশাত ও নুসরাত তিনজনই ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির পড়াশোনার চাপে ফলাফলের পর তিন বান্ধবীর আর দেখা হয়নি। আজ বুধবার কৃতী শিক্ষার্থী উৎসবে দেখা হওয়ায় তাঁরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।
নিশাত তাসনিম বলেন, ‘পড়াশোনার চাপে অনেক দিন বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আজ দেখা হয়ে খুব ভালো লেগেছে। শুধু আড্ডা নয়, সবার ভর্তি প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
আজ ময়মনসিংহে ‘প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি–প্রথম আলো জিপিএ–৫ কৃতী শিক্ষার্থী উৎসব ২০২৫’–এ যোগ দিয়ে এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন কৃতী শিক্ষার্থী নিশাত তাসনিম। ময়মনসিংহ নগরের টাউন হলের তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত উৎসবে নিবন্ধন করেন প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। উৎসবে সহযোগিতা করে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা।
‘স্বপ্ন থেকে সাফল্যের পথে, একসাথে’ প্রতিপাদ্যে সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে এবারই প্রথম এই উৎসবের আয়োজন করেছে প্রথম আলো। চট্টগ্রাম, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহীর পর আজ ময়মনসিংহে হলো ষষ্ঠ এ আয়োজন। অন্য বিভাগগুলোয়ও এমন আয়োজন হবে। উৎসবের পৃষ্ঠপোষক প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি।
সকাল থেকেই কৃতী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে টাউন হল মাঠ। নির্ধারিত বুথ থেকে ক্রেস্ট, স্ন্যাকস ও ডিজিটাল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। জীবনের লক্ষ্য লেখার বোর্ডে অনেকে লিখছিলেন নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। এসব লেখায় মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, বৃত্তি নিয়ে বিদেশ গমন কিংবা ভালো মানুষ হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তাঁরা।
অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন অতিথিরা। বুধবার ময়মনসিংহ টাউন হল মিলনায়তনে