সহজ হোক কিংবা কঠিন, হামাসকে নিরস্ত্র হতেই হবে: নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি
Published: 5th, October 2025 GMT
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নিরস্ত্র করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেই সঙ্গে তিনি গাজা উপত্যকাকে ‘অসামরিকীকরণ’ অঞ্চল করার ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার স্থানীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দেন, ‘হামাসকে অবশ্যই নিরস্ত্র হতে হবে। গাজা সামরিকীকরণ মুক্ত হবে। হয় সহজ পথে কিংবা কঠিন পথে, কিন্তু এটা অর্জন করা হবে।’
আরও পড়ুনকয়েক দিনের মধ্যেই জিম্মিদের মুক্তির প্রত্যাশা নেতানিয়াহুর, কায়রোর পথে প্রতিনিধিরা৫ ঘণ্টা আগেনেতানিয়াহু আরও বলেন, গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের ‘কয়েক দিনের মধ্যে’ ঘরে ফিরিয়ে আনতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
আগামীকাল সোমবার থেকে ইহুদিদের সুক্কোত উৎসব শুরু হতে যাচ্ছে, যা এক সপ্তাহ চলবে। এ উৎসবের মধ্যেই জিম্মিদের ঘরে ফেরাতে পারবেন বলে আশাবাদী নেতানিয়াহু।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে হামাসের পক্ষ থেকে অবস্থান জানানোর পর ওই হুঁশিয়ারি দেন নেতানিয়াহু। একই দিন ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে পুরোপুরি রাজি হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি হামাসের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বিলম্ব সহ্য করবেন না।এর আগে গত শুক্রবার হামাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা মেনে সব জিম্মিকে ছেড়ে দিতে রাজি আছে তারা। তবে নিরস্ত্রীকরণ ও গাজায় বিদেশিদের শাসনের প্রস্তাবে তাদের ঘোর আপত্তি রয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনার আগ্রহ দেখিয়েছে হামাস।
আরও পড়ুনআটক গ্রেটা থুনবার্গকে নির্যাতন ও ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করার অভিযোগ১ ঘণ্টা আগেহামাসের পক্ষ থেকে এমন অবস্থান জানানোর পর ওই হুঁশিয়ারি দেন নেতানিয়াহু। একই দিন ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে পুরোপুরি রাজি হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি হামাসের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বিলম্ব সহ্য করবেন না।
এর আগে ট্রাম্প হামাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছিলেন। জিম্মি মুক্তি নিরাপদ করতে ইসরায়েলকে গাজায় হামলা থামাতে বলেছিলেন তিনি। তবে এসব প্রক্রিয়া চলার মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও হতাহতের ঘটনা বন্ধ হয়নি।
আরও পড়ুনইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক সুমুদ ফ্লোটিলার অধিকারকর্মীরা এখন কোথায় আছেন১৪ ঘণ্টা আগেএদিকে আগামীকাল থেকে মিসরে যুদ্ধবিরতির পরোক্ষ আলোচনা নতুন করে শুরু হচ্ছে। আলোচনায় অংশ নেবেন ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আলোচনায় অংশ নিতে ট্রাম্প গতকাল দুজন কূটনীতিককে মিসরে পাঠিয়েছেন। তাঁরা হলেন ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও হোয়াইট হাউসের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।
আরও পড়ুনগাজা থেকে প্রথম ধাপে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে ইসরায়েল: ট্রাম্প৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনট্রাম্পের আহ্বানের পরও গাজায় থামেনি ইসরায়েলি হামলা৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নবান্নের যে মেলায় এক দিনে কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়
রঙিন কাপড়ের বিশাল প্যান্ডেল বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। প্যান্ডেলের নিচে থরে থরে সাজানো বড় বড় রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বোয়ালসহ নানা প্রজাতির মাছ। কেউ মাছের দরদাম করছেন, কেউবা কিনছেন। নবান্ন উৎসব উপলক্ষে জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরের পাঁচশিরা বাজারে এই মাছের মেলা বসেছে।
প্রতিবছরের মতো আজ মঙ্গলবার এক দিনের জন্য এ মাছের মেলা বসে। এবার মেলায় প্রচুর মাছের আমদানি হয়। দাম একটু চড়া বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, এক দিনের মেলায় প্রায় কোটি টাকার মাছ বেচাবিক্রি হয়। মেলা ঘিরে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করেন মেলা প্রাঙ্গণে। মেলার দিনে এলাকার লোকজন জামাইদের আমন্ত্রণ করা হয়। এ জন্য মেলাটি ‘জামাই মেলা’ নামেও পরিচিত।
মেলার আয়োজক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর পঞ্জিকা অনুযায়ী অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে এ মেলা বসে। পাঁচশিরা বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরাই মূলত এ মেলার আয়োজন করেন। মেলাকে কেন্দ্র করে কালাই পৌর শহরে মূলগ্রাম, দুরঞ্জ, আঁওড়া, সড়াইলসহ উপজেলার পুনট, মাদাই, পাঁচগ্রাম, মাদারপুর, বেগুনগ্রাম, হতিয়ার, ঝামুটপুর, হাতিয়র, মাত্রাইসহ আশপাশের ২৫ থেকে ৩০টি গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। মেলা উপলক্ষে এসব গ্রামের জামাই ও স্বজনদের আগে থেকেই নিমন্ত্রণ জানানো হয়। জামাইদের মধ্যে বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা চলে। এ ছাড়া দূরদূরান্ত থেকে লোকজন মেলায় মাছ কিনতে আসেন।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার মাছের আমদানি বেশি। দামও একটু বেশি। আকারভেদে সিলভার কার্প প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৯০০ টাকা, বিগহেড কার্প ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই ৪০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং কাতলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মেলায় সর্বোচ্চ ৩০ কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছ উঠেছে।
মেলায় মাছ কিনতে এসেছেন কালাই পৌর শহরের মূলগ্রামের সুরেষ চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর মেলায় আসি। পছন্দসই মাছ কিনে নিয়ে যাই। এবার মেলায় মাছের দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। আমি ১৯ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ ২৪ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে কিনেছি।’
উপজেলার আহমেদাবাদের হাতিয়র গ্রাম থেকে মেলায় বেড়াতে এসেছেন নার্গিস বেগম। তিনি বলেন, ‘পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলার নাম অনেক আগে থেকেই জানি। কিন্তু কখনো আসা হয়নি। এবার স্বামীকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। বড় বড় মাছ দেখছি। অনেক ভালো লাগছে। মেলা থেকে পছন্দের একটি বড় মাছ ৭ হাজার ৩০০ টাকায় কিনেছি।’
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার শফিকুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি কালাইয়ের মাত্রাই গ্রামে। তিনি বলেন, ‘আমি শ্বশুরবাড়িতে এসেছি। এবার মেলায় বড় বড় মাছ উঠেছে। আমি মেলা থেকে ৬ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ কিনেছি।’
মেলা ঘিরে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করেন মেলা প্রাঙ্গণে। মঙ্গলবার সকালে পাচশিরা বাজারে