ভারতীয় দক্ষিণী সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় জুটি রাশমিকা মান্দানা ও বিজয় দেবরকোন্ডা। ‘গীতা গোবিন্দম’, ‘ডিয়ার কমরেড’ সিনেমায় তাদের রসায়ন দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।  

এ জুটির পর্দার রসায়ন ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ফলে এ দুজনের সম্পর্ক বহুল চর্চিত। বিজয় দেবরকোন্ডার সঙ্গে রাশমিকার প্রেম ও বিয়ের গুঞ্জন অনেকবার চাউর হয়েছে। দেশ-বিদেশে একসঙ্গে সময় কাটাতেও দেখা গেছে এ জুটিকে। তবে তারা দাবি করেন—“আমরা দুজন খুব ভালো বন্ধু।”

আরো পড়ুন:

সেরা অভিনেতা আল্লু, অভিনেত্রী রাশমিকা

আলিয়া-দীপিকা-রাশমিকাকে টপকে শীর্ষে সামান্থা

গত ৩ অক্টোবর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়ায় বাগদান সেরেছেন রাশমিকা-বিজয়। ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ে তারা বাগদানের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন বলে দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের। তবে এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেননি এই তারকা যুগল। ফলে তাদের ভক্ত-অনুরাগীদের মনে প্রশ্ন রয়েই গেছে। পাশাপাশি রাশমিকার প্রথম বাগদান ভাঙা নিয়ে চর্চা চলছে নেট দুনিয়ায়।

২০১৭ সালে কন্নড় সিনেমার নির্মাতা-অভিনেতা রক্ষিত শেঠির সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছিলেন রাশমিকা মান্দানা। বাগদানের পরও ভেঙে যায় রাশমিকার এই বিয়ে। কিন্তু এই বিয়ে কেন ভেঙেছিল? ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি—বিজয়ের কারণে ভেঙে গিয়েছিল রাশমিকার এই বিয়ে। 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসকে সাক্ষাৎকার দেন রাশমিকা। এ অভিনেত্রী বলেছিলেন—“রক্ষিতের সঙ্গে ব্রেকআপের ধকল কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছিলাম। ওই সময়ে আমার কারো যত্ন প্রয়োজন ছিল; যা বিজয় দেবরকোন্ডার কাছ থেকে পেয়েছিলাম। আমি আমার আবেগের সঙ্গে সংগ্রাম করছিলাম, বিজয় আমাকে সাহস জুগিয়েছে, বুঝিয়েছে—এর বাইরেও একটি দুনিয়া রয়েছে।”

বিজয়-রাশমিকা অভিনীত জনপ্রিয় সিনেমা ‘ডিয়ার কমরেড’। ২০১৯ সালে মুক্তি পায় এটি। এ সিনেমার প্রচারের সময়ে রাশমিকাকে পূর্বের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ সময় বিজয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে রাশমিকার পাশে দাঁড়ান এবং ওই সংবাদিককে তিরস্কার করেন। ওই সময় বিজয় বলেছিলেন—“আমি ঠিক আপনার প্রশ্নটি বুঝতে পারছি না। আমি যেমন আপনার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি, তেমনি এই বিষয়ে কথা বলাও আপনার কাজ নয়।” 

রক্ষিতের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানার কারণে দারুণ সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন রাশমিকা। অভিনেতা রক্ষিতের ভক্তরা রাশমিকাকে নিয়ে ট্রল করতে থাকেন। কিন্তু এ পরিস্থিতি দারুণভাবে সামাল দেন তিনি। রাশমিকার বিরুদ্ধে কোনোরকম অভিযোগ করেননি; সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে রাশমিকার পক্ষে বক্তব্য দেন তিনি।  

ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে রক্ষিত শেঠি বলেছিলেন—“রাশমিকাকে নিয়ে আপনারা আপনাদের মতো মতামত দিয়েছেন। এজন্য আপনাদের দোষারূপ করছি না। তবে আমি তাকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চিনি-জানি এবং আপনাদের চেয়ে তাকে ভালো চিনি। এখানে অনেক বিষয়ই কাজ করেছে। দয়া করে তাকে বিচার করা বন্ধ করুন। রাশমিকাকে শান্তিতে থাকতে দিন।” 

মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন রাশমিকা মান্দানা। ২০১২ সালে ‘ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার ফ্রেস অব ইন্ডিয়া’ খেতাব জেতেন তিনি। ২০১৬ সালে কন্নড় ভাষার ‘কিরিক পার্টি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। অভিষেক এ চলচ্চিত্রের জন্য সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মুভি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন এই অভিনেত্রী।  

এরপর ‘চালো’ সিনেমার মাধ্যমে তেলেগু সিনেমায় অভিষেক হয় রাশমিকার। অল্প সময়ের মধ্যে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন তিনি। ‘গীতা গোবিন্দম’, ‘ডিয়ার কমরেড’, ‘সারিলেরু নীকেবারু’, ‘পুষ্পা’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী। 

রাশমিকা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘কুবেরা’। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ধানুশ। গত ২০ জুন মুক্তি পায় এটি। বর্তমানে তার হাতে বেশ কটি সিনেমার কাজ রয়েছে।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র রক ষ ত আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

আমি ব্যর্থ হয়েছি: বাঁধন

কখনো পরিবার, কখনো সমাজ—সবাই চেয়েছে তাকে নির্দিষ্ট ছাঁচে ঢালতে। কিন্তু বাঁধন ভেঙেছেন সেই ছাঁচ। হ্যাঁ, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন ‘প্রত্যাশিত নারী’ হতে, অথচ সেই ব্যর্থতাকেই এখন মনে করছেন জীবনের বড় সাফল্য। 

রবিবার (৫ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে নিজেকে ‘সমাজ আর একজন অস্বস্তিকর নারী’ আখ্যায়িত করেছেন বাঁধন। সেখানে তিনি খোলামেলা স্বীকার করেছেন নিজের ব্যর্থতার কথাও। 

আরো পড়ুন:

আলোচনায় নুহাশ হুমায়ূনের ফেসবুক পোস্ট

বাগদানের পরও রাশমিকার প্রথম বিয়ে কেন ভেঙেছিল?

বাঁধন লিখেছেন, “আমি এমন একজন মেয়ে হতে চেয়েছিলাম, যে সবাইকে খুশি রাখবে। অনুগত, বাধ্য, শান্তভাবে মানিয়ে নেওয়া মেয়ে। কিন্তু আমি পারিনি। আমি ব্যর্থ হয়েছি। চেষ্টা করেছিলাম পরিবারের প্রত্যাশিত মেয়ে হতে, সমাজের বানানো ‘নারী’ হয়ে বাঁচতে। কিন্তু পারিনি। আর আজ, সেই ব্যর্থতার জন্যই আমি নিজেকে ধন্যবাদ জানাই।” 

ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিয়ে এ অভিনেত্রী লেখেন, “আমি অন্য কারো স্ক্রিপ্টে বাঁচার জন্য জন্মাইনি। আমার কথা হয়তো অনেকের কাছে অস্বস্তিকর, আমার কাজ হয়তো অনেকের স্বস্তি ভেঙে দেয়। আমি সহজ নই, কিন্তু নির্মমও নই। আমি কাউকে আঘাত করি না, অসম্মানও করি না—যদিও অনেকেই আমার প্রতি তা করে।” 

কয়েক দিন পরই ৪২ বছরে পা দেবেন এই অভিনেত্রী। বয়সের এ পর্যায়ে তিনি খুঁজে পেয়েছেন ভেতরের শান্তি। বাঁধনের ভাষায়, “চল্লিশের পর আমি নিজের সঙ্গে শান্তিতে আছি। এখন আমি বাঁচি আমার মতো করে—স্বাধীনভাবে, সৎভাবে, বিনা ক্ষমাপ্রার্থনায়। কেউ কষ্ট পেলে উপেক্ষা করুক, ব্লক করুক, ঘৃণা করুক—আমার কিছু যায় আসে না। কারণ, যত মানুষ আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে, তার চেয়েও অনেক বেশি মানুষ আমাকে ভালোবাসে, বোঝে, আমার সত্যে শক্তি খুঁজে পায়। আর সবচেয়ে বড় কথা—আমি নিজেকে ভালোবাসি।” 

তার পোস্টের শেষ লাইনগুলোতে উঠে এসেছে আত্মসম্মান আর আত্মবিশ্বাসের এক দৃঢ় উচ্চারণ, “আমি ভাঙা নই। আমি শুধু এমন এক পৃথিবীর কাছে অস্বস্তিকর, যে পৃথিবী এখনো আসল নারীকে ভয় পায়। ভালোবাসি তোমায়, আজমেরী হক বাঁধন। তুমি যে নারী হতে চেয়েছিলে, শেষ পর্যন্ত তুমি সেই নারীই হয়েছো।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ