ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় সাংবাদিক হত্যা, গ্রেপ্তার ২
Published: 7th, October 2025 GMT
ফেসবুকে দেওয়া একটি সচেতনতামূলক পোস্টকে কেন্দ্র করে বাগেরহাটের সাংবাদিক এএসএম হায়াত উদ্দিনকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই আসামিকে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
রবিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর আশুলিয়া পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে আদালতে সোপর্দ করার পর তারা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো.
বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই স্নেহাশিস দাশ বলেন, “পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস দল প্রযুক্তিগত সহায়তা ও তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অবস্থানরত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আসামিরা জানিয়েছে, সাংবাদিক হায়াত উদ্দিন তার ফেসবুক আইডিতে একটি সচেতনতামূলক পোস্ট দেন। ওই পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলাকারীরা গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে করে চাপাতি, রামদা, ছুরি, লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে হায়াত উদ্দিনের মাথা, ঘাড়, পাঁজর, পেট ও পায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”
এ ঘটনায় রবিবার বাগেরহাট সদর মডেল থানায় ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক হায়াতের মা হাসিনা বেগম।
ঢাকা/শহিদুল/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
থুনবার্গকে ‘ঝামেলাবাজ’ আখ্যা দিয়ে মানসিক ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেছেন। গাজামুখী ত্রাণ বহরের সঙ্গে যাত্রা, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীকালে বিতাড়িত হওয়ার ঘটনায় তিনি থুনবার্গকে 'ঝামেলাবাজ' বলে অভিহিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন অবসানে অনিশ্চয়তা
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ‘ইতিবাচক’
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে ৪০টিরও বেশি নৌযানে ত্রাণ নিয়ে গাজায় যাওয়ার সময় আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে গত বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ৪৭৯ জনকে আটক করে ইসরায়েল। আটক এসব অধিকারকর্মীর মধ্যে সোমবার গ্রেটা থুনবার্গসহ আরো ১৭১ জনকে গ্রিস এবং স্লোভাকিয়ায় ফেরত পাঠায় ইসরায়েল।
সোমবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে সাংবাদিকরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেটা থুনবার্গ এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনিপন্থি অধিকারকর্মীদের নির্বাসন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, যারা গাজার উপর ইসরায়েলি সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন।
এসময় ট্রাম্প বলেন, ‘সে (থুনবার্গ) কেবল একজন ঝামেলাবাজ। সে পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে নেই, এখন অন্য কিছুর মধ্যে ঢুকে পড়েছে। ওর রাগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা আছে। আমার মনে হয় ওর ডাক্তার দেখানো দরকার।”
ট্রাম্প সাংবাদিকদের আরো বলেন, “আপনি কি কখনো তাকে দেখেছেন? সে একজন তরুণী। ওর রাগ খুব বেশি। খুবই পাগল। সে কেবল একজন সমস্যা সৃষ্টিকারী।”
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ও থুনবার্গের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়। থুনবার্গ ২০১৯ সালে টাইমস ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প থুনবার্গকে কটাক্ষ করেছিলেন।
ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সোমবার গ্রিসে পৌঁছানোর পর থুনবার্গ অভিযোগ করেন, ইসরায়েলি কারাগারে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং জোর করে ইসরায়েলের পতাকায় চুমু খাওয়ানো হয়েছে। তবে তিনি বলেন, “আমাদের আটক ও নির্যাতন নিয়ে অনেক কিছু বলা যায়। কিন্তু সেটাই আসল গল্প নয়। আসল বিষয় হলো, আমাদের চোখের সামনে (গাজায়) গণহত্যা চলছে। সরাসরি সম্প্রচারিত গণহত্যা।”
থুনবার্গ বলেন, “আজ কেউ এই অজুহাত দিতে পারবে না যে তারা জানত না (গাজায়) কী ঘটছে। ভবিষ্যতেও কেউ বলতে পারবে না- ‘আমরা জানতাম না’।”
থুনবার্গ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আরো বলেন, “তারা ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ‘একটি পুরো জাতিকে মুছে ফেলতে চায়’।”
তিনি বলেন, “গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।”
থুনবার্গ আরো বলেন, “আমি কখনও বুঝতে পারব না মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে কীভাবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে- যারা বছরের পর বছর অবরোধ ও নিপীড়নের মধ্যে বন্দি।”
ঢাকা/ফিরোজ