সরকার বারবার লিখিত নির্দেশনা ও রিমাইন্ডার পাঠানোর পরও বাংলাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলো স্বাস্থ্য কার্ডধারী জুলাই আহত ব্যক্তিদের প্রাপ্য সম্মান ও ফাস্ট ট্র্যাক সুবিধা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান এমন মন্তব্য করেছেন।

সায়েদুর রহমান বলেছেন, কোনো হাসপাতাল যদি আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, হাসপাতালে প্রাপ্ত ওষুধ এবং হাসপাতালে করা যায় এমন পরীক্ষা না করে বা করাতে দেরি করে, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংকট’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

যৌথভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ও অ্যাসোসিয়েটস ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এমিনেন্স)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক সায়েদুর রহমান।

অনুষ্ঠানে জুলাই অভ্যুত্থানের একজন আহত স্বাস্থ্য কার্ড নিয়ে বিশেষ সহকারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, একাধিকবার লিখিতভাবে প্রতিটি হাসপাতালে লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি। ভবিষ্যতে এ ধরনের গাফিলতি এড়াতে আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে আবারও নির্দেশনা পাঠাবেন বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন জনস্বাস্থ্য গবেষক আহমদ এহসানুর রহমান ও এমিনেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হায়দার তালুকদার।

অনুষ্ঠানে গবেষণার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি ও গবেষক দলের সদস্য শিশির মোড়ল জানান, গত বছরের জুলাই মাসে রাজধানীর ৩৮টি হাসপাতাল ঘুরে তিনি দেখতে পান সেখানে চিকিৎসা ঠিকমতো হচ্ছে না এবং নানা রকম জটিলতা রয়েছে। তিনি বলেন, এই পর্যবেক্ষণ থেকেই গত বছরের আগস্টের তিন তারিখে এই গবেষণা করার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ডিজি অফিস এবং মন্ত্রীর ভূমিকা কেমন ছিল, তা খতিয়ে দেখা।

গবেষণার ফলাফলে জুলাইয়ে তিন ধরনের প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা হয়েছে—চিকিৎসা গ্রহণে, কার্যকর চিকিৎসায়, ও সম্মানজনক শেষকৃত্যে। চিকিৎসা গ্রহণে বাধাগুলোর মধ্যে ছিল রাজনৈতিক নিপীড়নের ভয়, চলাচলে অসুবিধা, অ্যাম্বুলেন্সের অভাব ও সহকারীর অনুপস্থিতি। কার্যকর চিকিৎসায় প্রতিবন্ধকতা দেখা যায় হাসপাতালে ভর্তি বা চিকিৎসায় দেরি, অনুপযুক্ত ব্যবস্থা, অতিরিক্ত ভিড়, রেফারেল জট, রিসোর্স সংকট, অনৈতিক আচরণ, প্রয়োজনীয় জনবল ও প্রযুক্তির অভাব, উচ্চ খরচ ও ঘুষ।

শেষকৃত্যে সমস্যা দেখা দেয় মৃতদেহ শনাক্তকরণে জটিলতা, পুলিশি বাধা, মর্গসুবিধার ঘাটতি ও নথি ভুক্তিকরণে ত্রুটিতে।

মূল কারণ হিসেবে উঠে আসে জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় প্রস্তুতি ও নেতৃত্বের ঘাটতি, মেডিকো-লিগ্যাল দুর্বলতা, স্বাস্থ্যকে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার না দেওয়া এবং নীতিনৈতিকতার অভাব।

ওয়াটারএইডের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুইডিশ সিডার প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক মোজাহেরুল হক প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স য় দ র রহম ন অন ষ ঠ ন সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইন্দোনেশিয়ায় মসজিদে বিস্ফোরণ, আহত ৫৪

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি স্কুলের মসজিদে বিস্ফোরণে ৫৪ জন আহত হয়েছে। জুমার নামাজ চলাকালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে জাকার্তা পোস্ট। 

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, কেলাপা গাদিংয়ের নৌবাহিনীর একটি কম্পাউন্ডের মধ্যে অবস্থিত মসজিদের ভেতরে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে। ওই সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা শুক্রবারের নামাজে অংশ নিচ্ছিলেন। প্রাথমিক প্রতিবেদনে ২০ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও পরে পুলিশ নিশ্চিত করে যে আহতদের সংখ্যা ৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে, তবে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

জাকার্তা পুলিশের প্রধান মহাপরিদর্শক আসেপ এদি সুহেরি জানান, আহতদের বেশিরভাগই ছাত্র এবং স্কুল কর্মী। তারা কাঁচের টুকরো এবং বিস্ফোরণের চাপে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী দুটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি  জানান, বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তদন্তকারীরা এখনো বিস্ফোরণের সাথে সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্রের প্রমাণ পাননি। 

ডিটাচমেন্ট ৮৮ এর মুখপাত্র মায়ন্দ্রা একা ওয়ারধানা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা নির্ধারণের জন্য অভিজাত সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, “আমাদের দল কোনো সন্ত্রাসী উদ্দেশ্য বা নেটওয়ার্ক জড়িত কিনা তা মূল্যায়ন করছে।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দোনেশিয়ায় মসজিদে বিস্ফোরণ, আহত ৫৪