গভীর রাতে গাড়িতে দুর্বৃত্তদের আগুন, সিসিটিভিতে ধরা পড়ল পুরো ঘটনা
Published: 8th, November 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় দুর্বৃত্তরা মোতালেব মুন্সি নামের এক ব্যক্তির ভাড়ায় চালিত গাড়িতে আগুন দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে চান্দনী গ্রামে তাঁর বাড়ির আঙিনায় রাখা গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মোতালেব পেশায় একজন গাড়িচালক। ২০১০ সালে তিনি একটি গাড়ি কিনে ভাড়ায় চালানো শুরু করেন। পরে ছেলেকেও একটি গাড়ি কিনে দেন।
পরিবারটির দাবি, এর আগে গত ১৫ আগস্ট রাতে দুর্বৃত্তরা বাড়িতে রাখা দুটি গাড়িতে আগুন দেয়। তখন তাঁরা দেখে ফেলায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়। ওই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন মোতালেব। তবে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এরপর বাড়িতে গাড়ি রাখার স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়।
দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনের দৃশ্যটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এ ঘটনার ৬ মিনিট ২১ সেকেন্ডর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, গতকাল দিবাগত রাত ২টা ২৮ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের সময় এক ব্যক্তি বোতল হাতে নিয়ে একটি গাড়ির ওপর কিছু ছিটাচ্ছেন। এরপর আরেক ব্যক্তি গিয়ে পাটকাঠি জাতীয় কিছু দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ভিডিওটির ৪ মিনিট ৫ সেকেন্ডের সময় মোতালেবের পরিবারের সদস্যদের ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তাঁরা বালতিতে করে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে ততক্ষণে গাড়িটির অধিকাংশ পুড়ে যায়।
এ বিষয়ে মোতালেব মুন্সি বলেন, যারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে, তাদের মুখে গামছা প্যাঁচানো ছিল। পুরো ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা আছে। ভাড়ায় গাড়ি চালিয়ে যা আয় হতো, তা দিয়ে পরিবার নিয়ে খেয়ে-পরে আছেন। প্রায় ৮ লাখ টাকার গাড়িটি পুড়ে যাওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।
পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে বলে জানান নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে কেউ এমনটি ঘটিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চালক মজিবলকে হত্যার পর অটোরিকশা ৯৫ হাজারে বিক্রি করা হয়: পুলিশ
মুন্সীগঞ্জে নিখোঁজের তিন দিন পর খাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হওয়া অটোরিকশার চালক মোহাম্মদ মজিবল মাঝি হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সোহাগ মোল্লা (৪৩), জয় (৩১), ইমরান (৩০), হারুন (৫১) এবং আলী হোসেন (৪০)। তাদের কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম সাইফুল আলম।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় অটোরিকশা চালকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার
শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি
বুধবার (৫ নভেম্বর) মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় সংবাদ সম্মেলনে ওসি জানান, নিহত মজিবল মাঝি (৪৪) পেশায় অটোরিকশাচালক ছিলেন। তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার লালবাগের ইসলামবাগ এলাকায় বসবাস করতেন। গত ৩১ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি অটোরিকশা নিয়ে গ্যারেজ থেকে বের হন। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পর দিন তার ছেলে রাসেল লালবাগ থানায় নিখোঁজ জিডি করেন।
৩ নভেম্বর সকালে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রতনপুর মধ্যপাড়া এলাকায় ডোবায় বিছানার চাদর ও কম্বল পেঁচানো অবস্থায় ভেসে থাকা অচেনা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের স্বজনরা এসে সেটি মজিবল মাঝির বলে শনাক্ত করেন।
পুলিশ জানায়, নিহতের দুই হাত ও দুই পা মোটা প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, তাকে অন্যত্র হত্যা করে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজিব দের নেতৃত্বে চৌকস তদন্ত দল গঠন করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওসি এম সাইফুল আলম বলেন, ‘‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় মজিবল মাঝিকে ‘মাওয়া যাওয়ার’ কথা বলে কৌশলে পঞ্চসার ইউনিয়নের তেলেরহিল এলাকার ইমরানের ভাড়াবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে অচেতন করে ফেলা হয়। এরপর সোহাগ গলায় রশি প্যাঁচিয়ে ধরে, ইমরান পা ধরে রাখে এবং জয় বুকের ওপর বসে কাঁচি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করেন।’’
ওসি জানান, হত্যার পর লাশটি বিছানার চাদর ও কম্বলে পেঁচিয়ে সোহাগের অটোরিকশায় করে রতনপুর এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়। পর দিন আসামিরা নিহতের অটোরিকশা হারুনের কাছে ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
ঢাকা/রতন/বকুল