ঠিক পাঁচ সপ্তাহ পর কার হাসি কান ছোঁবে, কারাই–বা করবে শোক পালন, বিহার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে সেই জল্পনা। ফল যা–ই হোক, বিহারের গণ্ডি পেরিয়ে তার ঢেউ দেশের অন্যত্র ছড়িয়ে যাবে। আগামী মাসে বিহার বিধানসভার ভোটের রাজনৈতিক অভিঘাত এমনই হতে চলেছে।

তেমন হওয়ারই কথা। কারণ, আগামী বছর যেসব রাজ্যে বিধানসভার ভোট, সেখানে একমাত্র আসাম ছাড়া অন্য কোথাও বিজেপির জমি ততটা শক্ত নয়। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, তামিলনাড়ুতে বিজেপি ভালো করলেও ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা নিয়ে তারা নিজেরাই সংশয়ী। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পদুচেরি তাদের দখলে। তা তারা দখলে রাখতে পারলে কম কথা নয়। বিজেপি মনে করছে, বিহারে তারা আবার ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা ও তামিলনাড়ুতে সেই ঢেউ আছড়ে পড়বে।

অন্যদিকে বিরোধী শিবিরের আশা, বিহার ছিনিয়ে নিতে পারলে জাতীয় রাজনীতিতে তার ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ২০২৬ সালে বিজেপি শুধু কোণঠাসাই হবে না, দলে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহর আধিপত্য নিয়ে মারাত্মক প্রশ্ন উঠে যাবে। সংঘাত তীব্র হবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সঙ্গে মোদি–শাহ জুটির।

একদিকে বিরূপ বৈশ্বিক কূটনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্যিক মন্দা; অন্যদিকে দলের অভ্যন্তরীণ চাপে ব্যতিব্যস্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী। বিহার জিততে পারলে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের পালে লাগবে নতুন হাওয়া। বদলাতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির গত ১১ বছরের ধারাবাহিকতা।

এই কারণে এবারও বিহার নির্বাচনী ক্যানভাসের প্রথম আকর্ষণের কেন্দ্র চলে এসেছেন ৭৫ পূর্ণ করা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১১ বছর ধরে বিজেপি তো বটেই, এনডিএ জোটেরও একমাত্র মুখ তিনিই। এবারেও বিহার বৈতরণী পেরোতে দল ও জোটের প্রধান ভরসা তিনিই।

সন্দেহ নেই, ২০১৪ সালে জাতীয় রাজনীতিতে আবির্ভাবের পর থেকে এখন পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদিই পাদপ্রদীপের সব আলো কেড়ে নিচ্ছেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত, শুধু ২০১৫ সালের বিধানসভা ভোট ছাড়া, বিহারের বিধানসভা ও লোকসভার সব ভোটে তিনিই ছিলেন মধ্যমণি। ২০২৪ সালে উত্তর প্রদেশে খারাপ ফল করলেও বিহারে মোদির বিজেপি সব হিসাব ওলট–পালট করে দিয়েছে। জাতপাত–নির্ভর বিহারে যে দলটি ছিল শুধু উচ্চবর্ণের প্রতিনিধি, মোদির বদৌলতে তার ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়েছে অন্য জাতেও।

নিজে গুজরাটের অন্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত (ওবিসি) হওয়ায় বিহারের ওবিসিদের মধ্যে মোদি প্রভাব বিস্তার করেছেন। জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি ও তার নিরন্তর প্রচার মোদির ভাবমূর্তি অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। ক্রমেই তিনি হয়ে উঠেছেন এক ও অদ্বিতীয়।

দলের ওপর মোদির দখল, অমিত শাহর সাংগঠনিক ক্ষমতা বিজেপিকে ক্রমেই ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছে। দক্ষতার সঙ্গে একের পর এক নির্বাচনে তিনি ও বিজেপির জোটসঙ্গীরা হিন্দু ভোটের বেশিটাই করায়ত্ব করেছে। এবারেও সেই ফল হতে পারে বলে বিজেপি মনে করছে।

তা ছাড়া ভোটের আগে বিজেপি–জেডিইউ জোট সরকার যেভাবে জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তা উপেক্ষা করা খুবই কঠিন। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে যিনি কিছুকাল আগেও পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির বিরোধিতা করেছিলেন, সেই নরেন্দ্র মোদি এবার বিহারে নতুন করে উপুরহস্ত হয়েছেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসা করতে রাজ্যের সাড়ে ৭ লাখ নারীকে মাসে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান কিংবা ৫ লাখ স্নাতককে দুই বছরের জন্য মাসে ১ হাজার টাকা করে ভাতা, অঙ্গনবাড়ি কর্মীদের সম্মানী মাসে ১ থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত কিংবা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত শিক্ষাঋণের ঘোষণার ফলে মনে করা হচ্ছে, মোদি–নীতীশ জুটি আরও একবার কিস্তি মাত করতে চলেছেন।

তেমনটা হলে মোদির সমান কৃতিত্বের দাবিদার অবশ্যই হবেন নীতীশ কুমার। জেডিইউয়ের এই অবিসংবাদিত নেতার সবচেয়ে বড় শক্তি তাঁর ভাবমূর্তি। বারবার জোট বদলেছেন তিনি ঠিকই। মুখ্যমন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন কুড়িটা বছর। সবচেয়ে বড় কথা, তাঁর বদলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব কে নিতে পারেন, সেই মুখ আজও সেভাবে উঠে এল না। যে বিজেপি এই জোটের সবচেয়ে বড় শক্তি, তারাও এমন কাউকে খাড়া করতে পারেনি, যিনি নীতীশের বিকল্প হতে পারেন।

সুশীল কুমার মোদির মৃত্যু বিজেপিকে আরও বিপাকে ফেলে দিয়েছে। তাই জোটের সেরা শক্তি হওয়া সত্ত্বেও বিজেপিকে নির্ভর করতে হচ্ছে নীতীশের ভাবমূর্তির ওপর। বিজেপির কাছে একটু একটু করে তাঁর দল মিলিয়ে যাচ্ছে। জেডিইউয়ের পরিসর ক্রমেই দখল করছে বিজেপি। যেভাবে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার জমি তারা দখল করেছিল, ঠিক সেইভাবে।

তবে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দলের কাউকে বিজেপি খাড়া করতে পারেনি। নীতীশের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব এতটাই যে হীনবল জেনেও তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা ছাড়া বিজেপির উপায় নেই। ভোটের পর কী হবে, সে ভিন্ন প্রসঙ্গ। আপাতত ‘সুশাসনবাবু’ নীতীশই বিজেপির মুশকিল আসান।

এই জোটের প্রধান চ্যালেঞ্জার আরজেডির তেজস্বী যাদব। বাবা লালু প্রসাদের ভালোটা উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি যেমন পেয়েছেন, তেমনই লালু জমানার ‘জঙ্গলরাজের’ বদনাম আজও তাঁর সঙ্গী। উত্তরাধিকার সূত্রে দলের ভার পেলেও তেজস্বী নিজেকে তৈরি করে নিয়েছেন। লালু প্রসাদ সৃষ্ট যাদব ও মুসলিমদের সমর্থনের বাইরে বেরিয়ে তিনি অযাদব অনগ্রসর ও অত্যন্ত অনগ্রসরদের (ইবিসি) মধ্যে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছেন। জোটের নেতা হিসেবেও তিনি নিজেকে সফল প্রমাণ করেছেন।

তেজস্বী কমিউনিস্ট পার্টি সিপিআই, সিপিএম ও সিপিআইকে (এমএল) যেমন পাশে রেখেছেন, তেমনই কাছে টেনেছেন অনগ্রসর মুকেশ সাহনির তৈরি দল বিকাশশীল ইনসান পার্টি বা ভিআইপিকে। বিহারে কংগ্রেস বরাবরই আরজেডির সঙ্গী। এবার রাহুল ও তেজস্বীর যুগলবন্দী শাসক জোটকে বিপাকে ফেললে আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতির সমীকরণও বদলে যাবে।

গত ভোটে আরজেডির কাছ থেকে ৭০ আসন পেয়েও কংগ্রেস জিতেছিল মাত্র ১৯ আসনে। সেটাই গড়ে দিয়েছিল এনডিএ ও ইন্ডিয়ার পার্থক্য। এবার রাহুল গান্ধীর ‘ভোট অধিকার যাত্রা’ অবশ্যই অন্য এক সাড়া ফেলেছে। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ, ‘ভোট চোর গদ্দি ছোড়’ স্লোগান জনমনে কতটা সাড়া ফেলেছে, তার প্রমাণ এই ভোটে হয়ে যাবে।

বিহার জিততে রাহুল–তেজস্বী কোমর কষে নামলেও সাংগঠনিক দুর্বলতা কংগ্রেস এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে নেতা হিসেবে রাহুল সাড়া ফেললেও গতবারের মতো কংগ্রেসকে ৭০টি আসন দিতে তেজস্বী হয়তো চাইবেন না। তার বদলে এবার তিন কমিউনিস্ট পার্টি ও ভিআইপির ওপর তেজস্বী বেশি ভরসা করবেন।

রাহুলের নিরন্তর প্রচার ও বারবার বিহার সফর মুসলিমদের হারানো আস্থা ফিরে পেতে কংগ্রেসকে সাহায্য করেছে। কিন্তু সেখানে দাঁও মারতে এবারেও হাজির হায়দরাবাদের এআইএমআইএম নেতা ও লোকসভার সদস্য আসাউদ্দিন ওয়েইসি। বিহারের সীমাঞ্চল এলাকা, যা কিনা পূর্ণিয়া, কাটিহার, আরারিয়া ও কিষেণগঞ্জ জেলা নিয়ে গঠিত এবং যেখানে মোট ২৪টি আসন রয়েছে, ওয়েইসির দল গতবার সেখানে প্রার্থী দিয়েছিল।

মুসলিমপ্রধান এই কেন্দ্রগুলোয় এবার নতুন করে নজর দিয়েছেন রাহুল ও তেজস্বী। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক, ওয়েইসি জোটে আসতে চাইলেও তাঁরা তাঁকে নিতে রাজি হননি। এই কেন্দ্রগুলোয় ওয়েইসির প্রার্থী দেওয়ার অর্থ হবে মুসলিম ভোট ভাগাভাগি হওয়া। তাতে গতবারের মতো এবারেও বিজেপির লাভ হতে পারে। গতবার সীমাঞ্চল এলাকায় এআইএমআইএম পাঁচটি আসন জিতেছিল। যদিও চারজন পরে আরজেডিতে যোগ দিয়েছিলেন।

বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে ওয়েইসি বিজেপির প্রচ্ছন্ন দোসর হিসেবে পরিচিত। তাঁকে বলা হয় বিজেপির পক্ষে বিরোধীদের ‘ভোট কাটুয়া’। বিহারে এবারও তাঁর ভূমিকা তেমনই হতে চলেছে। মুসলিম ভোটে ভাগ বসালে সহজ হিসাবে বিজেপির লাভ। বিজেপির লাভ মানে কংগ্রেস–আরজেডির ক্ষতি। ওয়েইসির ক্ষেত্রে এই হিসাব যতটা সহজ, ঠিক ততটাই কঠিন প্রশান্ত কিশোর সম্পর্কে অনুমান। এবারের ভোটে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ তাঁকে নিয়েই।

প্রশান্ত কিশোরের পরিচয় ‘ভোটকুশলী’ হিসেবে। ৪৮ বছর বয়সী বিহারের এই ব্রাহ্মণ নেতা প্রথম পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছিলেন গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির ভোট পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে। সেই থেকে একে একে তিনি ভোটে উতরোতে সাহায্য করেছেন বিজেপি, কংগ্রেস, জেডিইউ, তৃণমূল কংগ্রেস ও টিডিপিকে।

ভোট পরিচালনার দায়িত্ব ছেড়ে প্রশান্ত কিশোর (পিকে) প্রথমে জেডিইউয়ে যোগ দেন। কিন্তু নীতীশের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে গড়ে তোলেন রাজনৈতিক দল জন সুরাজ পার্টি। এক বছর ধরে সারা বিহার চষে ফেলেছেন তিনি। যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে কিছুটা সাড়াও ফেলেছেন। জানিয়েছেন, বিহারের ২৪৩ আসনেই তিনি প্রার্থী দেবেন। নিজেও ভোটে লড়বেন।

সম্ভবত পিকেই হতে চলেছেন এবারের ভোটের প্রধান আকর্ষণ। বিজেপির চিন্তাও তাঁকেই নিয়ে। জাতপাতসর্বস্ব বিহারের বর্ণহিন্দু ভোটার ব্রাহ্মণ পিকের সমর্থনে এগিয়ে আসার অর্থ হবে বিজেপি মূল সমর্থনে ঘা লাগা। উচ্চবর্ণের ভোটের পাশাপাশি নতুন ভোটারদের কাছে টানলে পিকে শেষ পর্যন্ত বিজেপিরই ক্ষতি করবে। পিকে তাঁর প্রচারপর্বে জাতপাতকে কখনো প্রাধান্য দেননি। বিজেপি–জেডিইউয়ের বাড়া ভাতে তিনি ছাই ফেললে আগামী দিনের জাতীয় রাজনীতি ভিন্ন খাতে বইতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র র ব ধ নসভ আরজ ড র জ ড ইউয় কর ছ ন র জন ত সবচ য় গতব র

এছাড়াও পড়ুন:

আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি: আবরারের বাবা

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি। আপিল বিভাগে এখনো মামলা বিচারাধীন। সরকারের কাছে আবেদন, বিচারের কাজটি যেন দ্রুত শেষ করা হয়।’’

আজ মঙ্গলবার (৭ আক্টোবর) ছিল আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি ঘিরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে স্মৃতিচারণসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল। ছেলেকে স্মরণ করে এ কথা বলেন আবরার ফাহাদের বাবা। 

আরো পড়ুন:

আবরারের রক্ত বৃথা যায়নি, জাতিকে জাগিয়ে তুলেছে

কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘‘ছেলেটিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিষ্ঠুরতম এ অপরাধ করার পরও নিহতের পরিবার এখনো এর সুষ্ঠু বিচার পায়নি। আমরা দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানাই।’’ 

আবরার বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট।

ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আবরারের বাবা। সেই মামলার রায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চ এ বছর ১৬ মার্চ সেই সাজাই বহাল রাখে।

আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, “হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন। আশা করছি আপিল বিভাগেও হাই কোর্টের রায় বহাল থাকবে। এই সরকার রায় কার্যকর করবে।”

এ মামলায় দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে চারজন এখনো পলাতক। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান বরকত উল্লাহ।

দিনটি উপলক্ষে রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরারের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির নেতারা। দুপুর ২টায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক নয়ন আহমেদের নেতৃত্বে দলটির নেতারা কবর জিয়ারতে অংশ নেন। এ সময় তারা আবরার ফাহাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

এসময় এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌস টনি, যুগ্ম সমন্বয়কারী কে এম আর শাহীনসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে শহীদ আবরার ফাহাদের হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করে শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ছাত্র-জনতা। 

সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ আবরার ফাহাদের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ