মুন্সীগঞ্জে নির্যাতনে গৃহবধূ মৃত্যুর অভিযোগ, স্বামী আটক
Published: 7th, October 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাথী বেগম (৩০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন:
যশোরে পুকুরে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু
নিহত সাথি বেগম শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের নাগরভাগ গ্রামের পাভেল শেখের স্ত্রী এবং একই উপজেলার শ্যামসিদ্ধি গ্রামের মৃত নুর জামাল তালুকদারের কন্যা। তার বেগম এক ছেলে (৪) ও এক মেয়ে (১০) রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই সাথিকে তার স্বামী পাভেল, শাশুড়ি ও ননদ মারধর করতেন। প্রায় ৪-৫ দিন আগে গুরুতর নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে সাথি বাবার বাড়ি শ্যামসিদ্ধিতে গিয়ে চিকিৎসা নেন। পরে আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যান। সোমবার (৬ অক্টোবর) তিনি পুনরায় বাবার বাড়ি গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার সকালে বাথরুম থেকে বের হয়ে উঠানে পড়ে গেলে সাথিকে দ্রুত শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, স্বামীর ধারাবাহিক নির্যাতনের ফলেই সাথির মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী পাভেল শেখকে আটক করেছে।
শ্রীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান বলেন, “নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/রতন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক শ র নগর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি: আবরারের বাবা
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি। আপিল বিভাগে এখনো মামলা বিচারাধীন। সরকারের কাছে আবেদন, বিচারের কাজটি যেন দ্রুত শেষ করা হয়।’’
আজ মঙ্গলবার (৭ আক্টোবর) ছিল আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি ঘিরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে স্মৃতিচারণসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল। ছেলেকে স্মরণ করে এ কথা বলেন আবরার ফাহাদের বাবা।
আরো পড়ুন:
আবরারের রক্ত বৃথা যায়নি, জাতিকে জাগিয়ে তুলেছে
কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা
শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘‘ছেলেটিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিষ্ঠুরতম এ অপরাধ করার পরও নিহতের পরিবার এখনো এর সুষ্ঠু বিচার পায়নি। আমরা দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানাই।’’
আবরার বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট।
ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আবরারের বাবা। সেই মামলার রায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চ এ বছর ১৬ মার্চ সেই সাজাই বহাল রাখে।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, “হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন। আশা করছি আপিল বিভাগেও হাই কোর্টের রায় বহাল থাকবে। এই সরকার রায় কার্যকর করবে।”
এ মামলায় দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে চারজন এখনো পলাতক। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান বরকত উল্লাহ।
দিনটি উপলক্ষে রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরারের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির নেতারা। দুপুর ২টায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক নয়ন আহমেদের নেতৃত্বে দলটির নেতারা কবর জিয়ারতে অংশ নেন। এ সময় তারা আবরার ফাহাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এসময় এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌস টনি, যুগ্ম সমন্বয়কারী কে এম আর শাহীনসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে শহীদ আবরার ফাহাদের হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করে শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ছাত্র-জনতা।
সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ আবরার ফাহাদের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল