বিজ্ঞানীদের অজান্তে পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে গেল ছোট এক গ্রহাণু
Published: 8th, October 2025 GMT
মহাবিশ্বের অনেক রহস্য। সেই সব রহস্যের শেষ কোথায়, কেউ জানে না। তাই আমাদের পৃথিবীর কাছাকাছি আসতে যাওয়া গ্রহাণুর ওপর নিয়মিত নজর রাখেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। তবে বিজ্ঞানীদের অজান্তেই ১ অক্টোবর আকারে বেশ ছোট একটি গ্রহাণু মাত্র ৪২৮ কিলোমিটার দূর থেকে পৃথিবী অতিক্রম করেছে। মহাকাশে থাকা বেশ কিছু স্যাটেলাইটের চেয়েও পৃথিবীর কাছাকাছি এসেছিল গ্রহাণুটি। মজার ব্যাপার হলো, নাসা বা অন্য কোনো মগাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানও আগে থেকে জানত না যে এ রকম একটা কিছু পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ‘২০২৫ টিএফ’ নামের গ্রহাণুটি সম্প্রতি খুব কাছ থেকে পৃথিবী অতিক্রম করেছে। অনেকটা কিছু বোঝার আগেই গ্রহাণুটি পৃথিবীর খুব কাছে চলে এসেছিল। ১ অক্টোবর অ্যান্টার্কটিকার ঠিক ৪২৮ কিলোমিটার ওপর দিয়ে উড়ে যায় গ্রহাণুটি। ১ থেকে ৩ মিটার চওড়া গ্রহাণুটি পৃথিবীকে অতিক্রমের কয়েক ঘণ্টা পর ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়।
২০২০ সালের নভেম্বরে প্রশান্ত মহাসাগরের ৩৭৯ কিলোমিটার ওপর দিয়ে অতিক্রম করা ২০২০ ভিটি৪ গ্রহাণুর পরে এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে কাছাকাছি অতিক্রম করা গ্রহাণু। ইউরোপিয়ান মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) ২০২৫টিএফ গ্রহাণু সম্পর্কে জানিয়েছে, মহাকাশে এমন ছোট কোনো বস্তুকে শনাক্ত করা দারুণ এক কাজ। আর তাই গ্রহাণুটির অবস্থান এখনো অনিশ্চিত।
প্রসঙ্গত, গ্রহাণু কতটা ভয়ানক হতে পারে, তা নির্ভর করে তার আকার ও গতির ওপর। ছোট গ্রহাণু বায়ুমণ্ডলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়, উল্কাপাতের সৃষ্টি করে। আকারে বড় গ্রহাণু কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এসব গ্রহাণু ভূপৃষ্ঠে আঘাত হানলে বিশাল গর্ত তৈরি করে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জয়ের সুবাতাস পাচ্ছে বাংলাদেশ, তিন বছর পর মিরপুর টেস্ট পঞ্চম দিনে
নির্ধারিত সময়ের আগে আম্পায়াররা দুই দলের খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমের পথ দেখালেন। ততক্ষণে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সবকটি ফ্লাডলাইটে আলো জ্বলছিল। দিনের খেলা তখনও ৩ ওভার বাকি।
খেলোয়াড়রা ড্রেসিংরুমের পথে চললেও আম্পায়াররা বেলস ফেলেননি। চতুর্থ আম্পায়ার মুকুল লাইট ডিটেক্টর নিয়ে মাঠে প্রবেশের পর নিশ্চিত হয় আলোকস্বল্পতায় চতুর্থ দিনের খেলার সমাপ্তি।
আরো পড়ুন:
সাকিবকে ছাড়িয়ে উইকেট শৃঙ্গে তাইজুল
শততম টেস্ট: সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে পন্টিংয়ের পাশে মুশফিকুর
সিলেটের পর ঢাকা টেস্টেও জয়ের সুবাতাস পাচ্ছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের আর ৪ উইকেট নিতে পারলেই সিরিজটা নিজেদের করে নিতে পারবে। ম্যাচ বাঁচাতে আয়ারল্যান্ডকে লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে। ৫০৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে ৬ উইকেটে তাদের রান ১৭৬। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ১১ ও কুর্টিশ ক্যাম্পার ৩৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। আয়ারল্যান্ডের টপ ও মিডল অর্ডার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে তেমন লড়াই করতে না পারলেও তাদের লেজের ব্যাটসম্যানরা প্রায় প্রতি ইনিংসেই ছাপ রাখছেন। আগামীকাল তারা ম্যাচটা কতদূর নিয়ে যেতে পারেন সেটাই দেখার।
দুই দলের লড়াইয়ে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, মিরপুর টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। শেষ পাঁচ বছরে মিরপুর শের-ই-বাংলা টেস্ট পেয়েছে কিছুটা কম। সিলেট ও চট্টগ্রামেও খেলা হয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ১০ টেস্ট খেলা হয়েছে মিরপুরে। পঞ্চম দিনে ম্যাচ গিয়েছে কয়টা সেটা হাতে গুনে বলে দেওয়া যাবে।
বাংলাদেশ-আয়াল্যান্ডের চলতি টেস্ট ব্যাট-বলের দারুণ লড়াই শেষে পঞ্চম দিনে পা দিয়ে রেখেছে। এর আগে পাঁচ টেস্ট আগে মিরপুর টেস্ট পঞ্চম দিনে গিয়েছিল। ২০২২ সালে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট। সব মিলিয়ে ২০২০ থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র তিন টেস্ট পঞ্চম দিনে গিয়েছে। বাকি সবগুলো চারদিনেই সমাপ্তি। জানিয়ে রাখা ভালো, প্রতিটি টেস্টেই ফল বেরিয়েছে। এই ম্যাচও ড্র হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
দিনে আজ হাইলাইট করার মতো পারফরম্যান্স বলতে ছিল, মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলামের মিস। সাদমান ৬৯ ও মুমিনুল ১৯ রানে দিন শুরু করেছিলেন। দুজনের কেউই সেঞ্চুরি ছুঁতে পারেননি। সাদমান ৭৮ রানে ম্যাকব্রাইনের বল জোড়া পায়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন। এরপর অধিনায়ক নাজমুল ১ রানে নেইলের লাফিয়ে উঠা বলে ম্যাকব্রাইনের হাতে ক্যাচ দেন।
সেখান থেকে শুরু হয় মুমিনুল ও মুশফিকুর রহিমের লড়াই। ১২৩ রানের জুটি গড়েন দুজন। এ সময়ে মুমিনুল ফিফটির পর সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান। মুশফিকুর ছুঁয়ে ফেলেন ফিফটি। শততম টেস্টে সেঞ্চুরির পর ফিফটি ছুঁয়ে রিকি পন্টিংয়ের পাশে জায়গা করে নেন মুশফিকুর। বাংলাদেশ অপেক্ষা করছিল মুমিনুলের সেঞ্চুরির। সিলেটে ৮২ এবং ঢাকায় প্রথম ইনিংসে ৬৩ রানে আউটের পর মুমিনুল একটি সেঞ্চুরি পাবেন প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু এবারও তিনি হতাশ করেন। সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে রাখতে লেগ স্পিনার হোয়ের বলে ক্যাম্পারের হাতে ক্যাচ দেন। তার আউটের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণা করে।
ততক্ষণে বাংলাদেশের লিড ৫০৮ রানের। আগের দিরেন ১ উইকেটে ১৫৬ রানের সঙ্গে আজ ৩ উইকেটে ১৪১ রান জমা করে বাংলাদেশ। তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ২৯৭। ২১১ রানের লিড সহ আয়ারল্যান্ডকে ৫০৯ রানের বিশাল টার্গেট ছুঁড়ে দেয়।
বিশাল ওই টার্গেট তাড়া করতে নেমে তাইজুলের ৩টি, হাসান মুরাদের ২টি ও খালেদের ১ উইকেটে জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ। তাইজুল ৩ উইকেট নিয়ে দেশের টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় সাকিবকে পেছনে ফেলেছেন। ২৪৯ রান নিয়ে তিনি আছেন শীর্ষে। সাকিবের উইকেট ২৪৬। ৫০ রান করে আইরিশদের হয়ে হ্যারি টেক্টর লড়াই করেছিলেন। কিন্তু মাইলফলক ছোঁয়ার পরই হতাশ করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
শেষ দিনে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়ে আয়ারল্যান্ড চমকে দেয় কিনা দেখার। নয়তো বাংলাদেশ প্রত্যাশিত জয়ের অপেক্ষায়।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল