নোবেলকে পরামর্শ দেওয়ার ধৃষ্টতা আমার নেই: খুরশীদ আলম
Published: 9th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের প্লেব্যাক ইতিহাসে উজ্জ্বল নক্ষত্র খুরশীদ আলম। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চার শতাধিক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। সম্প্রতি রাহাত সাইফুলের সঞ্চালনায় ‘রাইজিংবিডি স্পেশাল’ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে হাজির হন তিনি। সেখানেই তিনি বর্তমান প্রজন্মের শিল্পী ও সংগীতজগতের অবস্থা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসা কণ্ঠশিল্পী নোবেল সম্পর্কে মতামত দিতে গিয়ে খুরশীদ আলম বলেন, “নোবেল বিতর্কিত একজন লোক। ওর সঙ্গে আমার সরাসরি যোগাযোগ নেই, তবে যেটুকু শুনেছি—তার মধ্যে ট্যালেন্ট ছিল। যখন দেখতাম ও আইয়ুব বাচ্চুর গান করছে, তখনও শ্রদ্ধার ঘাটতি ছিল। একজন শিল্পীর উচিত সুরকার ও গীতিকারের নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারণ করা। নোবেলের ভয়েস অবশ্যই সুন্দর।”
আরো পড়ুন:
১১ দিন লড়াই করে মারা গেলেন গায়ক রাজবীর
জুবিনের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা, স্ত্রীর ক্ষোভ-প্রশ্ন
নোবেলকে কোনো পরামর্শ দিতে চান কি না, জানতে চাইলে এই গুণী শিল্পী বলেন, “উনাকে পরামর্শ দেওয়ার মতো ধৃষ্টতা আমার নেই। তবে বলতে চাই, এখনকার প্রজন্মের শিল্পীদের একটা বড় সমস্যা আছে—তাদের কোনো অভিভাবক নেই। আমাদের সময়ে একজন শিল্পীর অন্তত ১৫-২০ জন অভিভাবক থাকতেন, যারা দিক-নির্দেশনা দিতেন। এখন শিল্পীদের উপদেশ দেওয়ার কেউ নেই, সংগঠন নেই, বসার জায়গা নেই। অথচ রিকশাচালকদেরও সংগঠন আছে।”
বর্তমান সংগীতজগতের হিংসা-বিদ্বেষ নিয়ে তিনি বলেন, “গানবাজনা এমন একটা জায়গা, যেখানে একজনের উন্নতি আরেকজন সহ্য করতে পারে না। আমাদের সময়ও ছিল। কিন্তু এতটা প্রকাশ্য বা ন্যাক্কারজনকভাবে ছিল না।”
স্মৃতিচারণ করে খুরশীদ আলম বলেন, “আমাদের সময়ে সবাই মিলে কাজ করতাম—হারলে-জিতলে একসঙ্গে। তখনকার গীতিকাররাও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতেন কোন শিল্পীর কণ্ঠে গানটি ভালো হবে। এখন দেখা যায়—গায়কই গীতিকার, গায়কই সুরকার। হয় না যে তা নয়, তবে আমি মনে করি, পরামর্শ নেওয়া জরুরি।”
সংগীতের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা থেকেই খুরশীদ আলম আজও স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না।
বাংলা চলচ্চিত্রের অসংখ্য জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন খুরশীদ আলম। তার কণ্ঠে অমর হয়ে আছে—‘মাগো মা ওগো মা’, ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘যদি বউ সাজো গো’, ‘চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে’, ‘চুরি করেছো আমার মনটা’ প্রভৃতি।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ৫০টি মিডিয়া থাকলে ৪০টিতেই প্রভাব খাটাচ্ছে বিএনপি: সারজিস
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘এখন দেশে ৫০টি মিডিয়া থাকলে ৪০টিতেই প্রভাব খাটাচ্ছে বিএনপি।’
এনসিপির নেতার নামে নতুন টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন প্রসঙ্গে মঙ্গলবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রাত পৌনে নয়টার দিকে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এনসিপির জেলা সমন্বয় সভা শেষে সারজিস আলম সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘কোনো একটা টেলিভিশনের অনুমোদন হয়েছে, আমরা যেটা জেনেছি সেখানে এনসিপির একজন আছেন। কিন্তু একজন দিয়ে তো টেলিভিশনের অনুমোদন পাওয়া যায় না। আমরা যেটা শুনেছি সেখানে বিএনপির লোকজনও আছেন, জামায়াতের ও স্বতন্ত্র লোকও আছেন। কেন শুধু এনসিপিকে ফোকাসড করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা।’
সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আমরা চাই মিডিয়া প্রফেশনাল জায়গায় থাকুক। আপনারা (সাংবাদিকেরা) যে কথাটা বলতে চান, যে সত্যটা প্রকাশ করতে চান, তা করেন। কোনো একটা রাজনৈতিক দল যত বড়ই হোক বা ছোটই হোক, খারাপ হলে সেটা বলবেন, ভালো হলেও সেটা বলবেন।’
‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যাপ্রায় ২৫ মিনিটের বক্তব্যে সারজিস আলম নওগাঁয় দেওয়া ‘মৃত্যু ছাড়া কিছু উপদেষ্টার সেফ এক্সিট নেই’ বক্তব্যেরও ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এক মিনিটের একটি বক্তব্যকে তিনটি শব্দে প্রকাশ করলে শুনতে একটু দুর্ধর্ষ লাগে। আমরা মনে করি, উপদেষ্টারা যে দায়িত্ব পেয়েছেন, সেটা সৌভাগ্যক্রমে। আমরা তাঁদের বলতে চাই, এত রাজনৈতিক চাপ, মানুষের প্রত্যাশা—এগুলো বাদ, কোনোভাবে নির্বাচনটা দিয়ে চলে যান, তাহলে যাওয়ার পরে তাঁদের যে আশা ছিল, শান্তি পাবেন, সে শান্তিটা পাবেন না। কারণ, এটা ইতিহাসের এত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, এ অধ্যায় যখনই আসবে, তখনই তিনি আলোচিত হবেন।’
আওয়ামী লীগের ফিরে আসা প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘যে যেভাবেই বলুক না কেন, দেশ বা দেশের বাইরে বৈঠক হোক না কেন, আওয়ামী লীগের ফিরে আসার সুযোগ নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে দলীয় প্রতীক নিয়েও কথা বলেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘শাপলা প্রতীক না দেওয়াটা আমরা মানব না। শাপলা পেয়েই এনসিপি নির্বাচন করবে।’
সমন্বয় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান ইমন, কেন্দ্রীয় সদস্য আসিফ মোস্তফা জামাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান সমন্বয়কারী আলাউল হক।