সোনারগাঁয়ের মিরেরটেক বাজার থেকে মো. মুকবিল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হাতুড়ি পেটার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার ভোরে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা যাওয়ার পথে সে অপহরণের শিকার হন। এ ঘটনার পর অপহৃতের পরিবারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপল আদায় করে অপহরণকারীরা। 

বর্তমানের অপহৃত ব্যবসায়ী সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় অপহৃত ব্যবসায়ীর ছোট ভাই শাহ আলম বাদি হয়ে গত বুধবার রাতে দু’জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।  

জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের আলমপুরা গ্রামের মৃত আব্দুল বাছেদের ছেলে মো.

মুকবিল হোসেন মাংস ও ভুড়ি ব্যবসায়ী।

গত মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা যাওয়ার পথে ওই ইউনিয়নের মিরেরটেক বাজার এলাকায় পৌছালে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা একই এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আতাবুর রহমান ও রুস্তম আলীর ছেলে পনির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনের একটি দল ব্যবসায়ী মুকবিল হোসেনকে টেনে হেচড়ে জোরপূর্বক কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে চোখ ও হাত পা বেধে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।

এসময় তার সঙ্গে থানা নগদ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে তাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতুড়ি পেটা করে। এতে তার হাত, পা, বুক ও পিঠে জখম হয়। পরে তার স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

অপহরণকারীরা ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছ থেকে তার বিকাশ নাম্বারে ৬০ হাজার টাকা পাঠায়। মুক্তিপণ দেওয়ার পর ব্যবসায়ীকে ওইদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেওয়ানবাগে হাত, পা ও চোঁখ বাধা অবস্থায় ফেলে যায়।

পরে অপহৃত ব্যবসায়ী মহাসড়কের চলাচলরত লোকজনের সহযোগিতায় হাত, পা ও চোঁখের বাধন খুলে তাদের মোবাইলে পরিবারকে ডেকে আনেন। এক পর্যায়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারী হাসপাতাল পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

দু’দিন চিকিৎসা শেষে বুধবার বাড়িতে আসলে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অপহৃত ব্যবসায়ীর বড় ভাই শাহ আলম বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় বুধবার রাতে অভিযোগ দায়ের করেন।  

অপহৃত ব্যবসায়ী মো.মুকবিল হোসেন জানান, তাকে আতাবুর রহমান ও পনির হোসেন মীরেরটেক এলাকায় মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক ধাক্কা দিয়ে তুলে নেয়। পরে গাড়িতে আরো ৫-৬জন ছিল। হাত,পা ও চোখ বেধে তাকে কোথায় নিয়ে গেছেন তা জানেন না।

এক পর্যায়ে তাকে হাতুড়ি পেটা করে তার মোবাইল ফেলে পরিবারের কাছ থেকে ৬০হাজার টাকা বিকাশে নিয়েছেন। এঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন। 

অভিযুক্ত পনির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনিও অপহরণের ঘটনা শুনেছেন। এঘটনার সঙ্গে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। 

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান বলেন, অপহৃত ব্যবসায়ীর ভাই থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার আদ্যোপান্ত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ অপহ ত ব যবস য় ব যবস য় র স ন রগ পর ব র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহৃত, মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন একজন

সুন্দরবনের লোনাজলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহরণের স্বীকার হয়েছেন। তাঁদের ছাড়তে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বনদস্যুরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের আঠারবেকি এলাকার একটি খালে কাকড়া ধরার সময় তাঁদের অপহরণ করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, দস্যু আলিম বাহিনীর সদস্যরাই জেলেদের অপহরণ করেন। অপহৃত জেলেদের মধ্যে একজন মুক্তিপণ দিয়ে গতকাল রোববার বাড়ি ফিরেছেন।

শ্যামনগর উপজেলার বড়ভেটখালী গ্রামের ইউসুফ গাজী বলেন, তিনি ২০ নভেম্বর কৈখালী স্টেশন থেকে অনুমতিপত্র (পাস) নিয়ে নিজের নৌকায় মরগাং গ্রামের ইব্রাহিম শেখ ও আনিস শেখকে নিয়ে বনে প্রবেশ করেন। একইভাবে পাস নিয়ে মরগাং গ্রামের হাসান শেখ ও বড়ভেটখালী গ্রামের আবদুল গাজীও বনে ঢোকেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আঠারবেকি ভাইজো খালে কাঁকড়া ধরার সময় দস্যুরা তাঁদের নৌকা আটকে দেয়। তিনটি নৌকা থেকে তারা চারজনকে তুলে নেয়। পরে জানায়, মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা দিলে ছাড়া পাওয়া যাবে। গতকাল ভোরে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের পর দস্যুরা হাসান শেখকে একটি নৌকায় তুলে দেয়। সকাল ৯টার দিকে তিনি বাড়ি পৌঁছান।

শ্যামনগর মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাসেম মোরেল জানান, সুন্দরবনে দস্যুতা আবারও বেড়ে উঠেছে। ভেটখালী ও মরগাং গ্রামের বেশ কয়েকজন জেলে সম্প্রতি আঠারবেকি এলাকা থেকে অপহৃত হয়েছেন বলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়েছেন।

সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা হক বলেন, ‘জেলেরা আমাদের কিছুই জানায় না। মহাজন বা পরিবারের লোকজন মুক্তিপণ দিয়ে তাঁদের ছাড়িয়ে আনে, পরে আমরা খবর পাই। দুর্গম বনাঞ্চলে দ্রুত অভিযান চালানোও কঠিন। বনদস্যু দমনে একটি স্মার্ট পেট্রোল টিম ও দুটি বিশেষ দল মাঠে রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে অপহৃত জেলেদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাইজেরিয়ায় অপহৃত ৫০ শিক্ষার্থী পালিয়ে ফিরলো পরিবারে
  • সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে চার জেলে অপহৃত, মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন একজন
  • অভাবের কথা বলে পরিচিত হন, আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে হাতিয়ে নেন টাকা
  • নাইজেরিয়ায ৩১৫ জন ছাত্র-শিক্ষক অপহৃত
  • নাইজেরিয়ায় স্কুল থেকে ২২৭ শিক্ষার্থী ও কর্মী অপহরণ