টুইঙ্কেলকে বিয়ের পর আমার ভাগ্য বদলে যায়: অক্ষয়
Published: 10th, October 2025 GMT
বলিউডের ‘খিলাড়ি’খ্যাত তারকা অভিনেতা অক্ষয় কুমার। ব্যক্তিগত জীবনে প্রাক্তন অভিনেত্রী টুইঙ্কেল খান্নার সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন এই নায়ক। দাম্পত্য জীবনে দারুণ পার করছেন তারা। দাম্পত্য জীবনের এ পর্যায়ে অক্ষয় জানালেন, টুইঙ্কেল খান্নাকে বিয়ে করে তার ভাগ্যবদল হয়েছে।
টুইঙ্কেল খান্না ও কাজল যৌথভাবে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন—অক্ষয় কুমার ও সাইফ আলী খান। এই পর্বটি আবেগময় ও হাস্যরসে পূর্ণ; যেখানে অক্ষয় ও টুইঙ্কেল তাদের দাম্পত্য জীবন, ভাগ্য এবং টুইঙ্কেল কীভাবে অক্ষয়ের ‘লেডি লাক’ হলেন, তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।
আরো পড়ুন:
স্ত্রীকে জোর করে ধর্মান্তর করার অভিযোগে মুখ খুললেন সংগীত পরিচালক
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রানীর খোশগল্প
তাদের সম্পর্ক ও বিয়ে শুধুই প্রেমের উপর নির্ভর ছিল না। বরং অনেকগুলো বিষয় যাচাই-বাছাইয়ের পর টুইঙ্কেল তাকে বিয়ে করতে রাজি হন বলে জানান অক্ষয় কুমার। তার ভাষায়—“যখন টুইঙ্কেল খান্নাকে বিয়ে করি, তারপর থেকেই আমার ভাগ্য বদলে যায়।”
টুইঙ্কেল শুরুতে অক্ষয়কে বিয়ে করতে চাননি। এ তথ্য স্মরণ করে অক্ষয় মজার ছলেই বলেন, “আমি অনেকগুলো ফ্লপ সিনেমা উপহার দিয়েছিলাম, তাই ও (টুইঙ্কেল) আমার সঙ্গে কাজই করতে চাইত না। দুজন মানুষ যখন সাক্ষাৎ করে, তখন তাদের কুন্ডলি মেলানো হয়। কিন্তু ও কুন্ডলিতে বিশ্বাস করত না। বরং ও জেনে নিতে চেয়েছিল আমার বাবার কোনো রোগ আছে কি না, ডিএনএ পরীক্ষার মতো করে আমার মামা-চাচাদের অবস্থা যাচাই করেছিল, যেন বুঝতে পারে ভবিষ্যতে বাচ্চাদের অবস্থা কী হবে! এরপরই সে বিয়েতে রাজি হয়। আর তখন থেকেই আমার ভাগ্য বদলে গেল।”
অক্ষয় কুমারের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন টুইঙ্কেল খান্না। এ অভিনেত্রী বলেন, “আমার বাবার একজন পরিচিত জ্যোতিষী বলেছিলেন, ‘আমি অক্ষয় কুমারকে বিয়ে করব।’ তখন তো আমি অক্ষয়কে চিনতামই না! পরে সত্যিই ওকে বিয়ে করলাম। বাবার কারণে আমাদের দেখা হয়েছিল।”
অক্ষয়ের সঙ্গে অভিনয় করতে রাজি না হওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করেন টুইঙ্কেল। তার ভাষায়, “আমার বাবার এক পুরোনো প্রযোজক বন্ধু ছিল, যাকে তিনি কথা দিয়েছিলেন যে, আমি তার একটি সিনেমায় কাজ করব। আমি সেই সিনেমায় কাজ করতে চাইনি। কারণ অক্ষয়ের তখন খারাপ সময় যাচ্ছিল, আর আমি একটু অহংকারী ছিলাম।”
সব সংকট কাটিয়ে ২০০১ সালের ১৭ জানুয়ারি অভিনেত্রী টুইঙ্কেল খান্নার সঙ্গে ঘর বাঁধেন অক্ষয় কুমার। এ দম্পতির প্রথম সন্তান আরাভ কুমারের জন্ম হয় ২০০২ সালে। তাদের নিতারা কুমার নামে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। ২০১২ সালে তার জন্ম হয়। আরাভ-নিতারা কাউকেই মিডিয়ায় দেখা যায় না বললেই চলে!
তথ্যসূত্র: টাইমস নাউ
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কন্যাসন্তান ও বোন প্রতিপালনের ফজিলত
সন্তান আল্লাহর দান। পুত্র ও কন্যা সৃষ্টি আল্লাহ তাআলার হিকমত ও কল্যাণ-জ্ঞানের অন্তর্গত। আল্লাহ তাআলা কাউকে কন্যাসন্তান দান করেন, আবার কাউকে পুত্রসন্তান; কাউকে আবার কোনো সন্তানই দান করেন না। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তা–ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন অথবা তাদের উভয়কেই দান করেন—পুত্র ও কন্যা। আর যাকে ইচ্ছা করে দেন বন্ধ্যা। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সুরা-৪২ শুরা, আয়াত: ৪৯-৫০)
কন্যাসন্তান মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একটি বিশেষ নিয়ামত। কন্যাসন্তান সৌভাগ্যের নিদর্শন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার গৃহে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করল, অতঃপর সে তাকে কষ্ট দেয়নি, তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়নি এবং পুত্রসন্তানকে তার ওপর প্রাধান্য দেয়নি, তাহলে ওই কন্যার কারণে আল্লাহ তাআলা তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২২৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘ওই নারী বরকতময়ী ও সৌভাগ্যবতী, যঁার প্রথম সন্তান মেয়ে হয়।’ কেননা কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা মেয়েকে আগে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন, আর যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন।’ (কানজুল উম্মাল, খণ্ড: ১৬, পৃষ্ঠা: ৬১১)
‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যাসন্তান বা তিনজন বোন আছে এবং সে তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করেছে, তাদের কারণে নিজেকে অসম্মানিত মনে করেনি, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণে অসন্তুষ্ট হওয়া জাহেলি যুগের কাফির-মুশরিকদের মনোভাব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের কাউকে যখন কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখমণ্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে প্রচণ্ড দুঃখভারাক্রান্ত হয়। সে এই সুসংবাদ পাওয়ার লজ্জায় লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায় এবং চিন্তা করে—হীনতা সত্ত্বেও কি সে সন্তানকে রেখে দেবে, নাকি মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে? সতর্ক হও! তারা যে সিদ্ধান্ত নেয়, তা কতই না নিকৃষ্ট!’ সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ৫৮-৫৯)
প্রিয় নবীজি (স.) কন্যাসন্তানের প্রতি সম্মান, স্নেহ ও মহব্বতের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যাসন্তান বা তিনজন বোন আছে এবং সে তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করেছে, তাদের কারণে নিজেকে অসম্মানিত মনে করেনি, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি: ১৯১২) আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘কারও যদি তিনটি মেয়ে কিংবা বোন থাকে অথবা দুটি মেয়ে বা বোন থাকে, আর সে তাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে ও সদাচার করে, তবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১১৪০৪; আদাবুল মুফরাদ, বুখারি: ৭৯) নবীজি (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুজন কন্যাসন্তানকে লালন-পালন করেছে এবং বিয়ের সময় হলে তাদের সুপাত্রে বিয়ে দিয়েছে, সে এবং আমি জান্নাতে এভাবে একসঙ্গে থাকব।’ এরপর তিনি নিজের দুই আঙুল মিলিয়ে দেখালেন। (তিরমিজি: ১৯১৪; মুসলিম: ২৬৩১; মুসনাদে আহমাদ: ১২০৮৯)
নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যার তিনটি কন্যাসন্তান আছে এবং সে তাদের কষ্ট-যাতনায় ধৈর্য ধারণ করে, তাদের ওপর ব্যয় করে, তাদের বিয়ে দেয় অথবা মৃত্যু পর্যন্ত দেখাশোনা করে, তাহলে সেই কন্যাসন্তানেরা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির কারণ হবে; সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! যদি দুজন হয়?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘দুজন হলেও।’ লোকটি আবার প্রশ্ন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! যদি একজন হয়?’ তিনি বললেন, ‘একজন হলেও।’ (বায়হাকি, শু’আবুল ইমান: ৮৩১১ ও ৮৩১৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তিকে কন্যাসন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সঙ্গে তা সম্পন্ন করেছে, সেই কন্যাসন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড়ালস্বরূপ হবে।’ (তিরমিজি: ১৯১৩) আরও বর্ণিত হয়েছে, ‘যাকে কন্যাসন্তান দ্বারা পরীক্ষায় ফেলা হয়, আর সে তাদের প্রতি যথাযথ আচরণ করে, তবে তা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষাকারী হবে।’ (মুসলিম: ৬৮৬২; মুসনাদে আহমাদ: ২৪৬১৬)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]