বড় অঙ্কের লোকসানের কারণে পরপর দুই বছর শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)।

গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিপরীতে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, এ বছরও কোম্পানিটি লোকসান করেছে, যা পরিমাণে ১২৫ কোটি টাকার বেশি।

গত শনিবার ডেসকোর পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানির পর্ষদ সদস্যরা গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে আজ রোববার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লোকসান করার তথ্য ও লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর শেষে ডেসকো ১২৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে। তবে তা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডেসকোর লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ডেসকোর লোকসান ৩৮০ কোটি টাকা বা ৭৫ শতাংশের বেশি কমেছে।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরকারি এই কোম্পানিটির বড় ধরনের লোকসানের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কোম্পানিটির আয়ের তুলনায় বেতন-ভাতাসহ প্রশাসনিক খরচ বেশি। এ ছাড়া সুদ পরিশোধসহ বড় অঙ্কের আর্থিক খরচ ও ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে কোম্পানিটির।

* লোকসান ও লভ্যাংশ না দেওয়ার খবরে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ৮০ পয়সা বা প্রায় পৌনে ৪% কমে ২১ টাকায় নামে।
* ডেসকো সর্বশেষ ২০২৩ সালে শেয়ারধারীদের ১০% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছর কোম্পানিটির বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কমিশনবাবদ আয় করে ৩৫৫ কোটি টাকা। তার বিপরীতে বেতন-ভাতাসহ কোম্পানিটির প্রশাসনিক ব্যয় ছিল ৩৫৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ খরচ ছিল ৩২৫ কোটি টাকা। ওই বছর বেতন-ভাতাসহ কর্মীদের পেছনে কোম্পানিটির খরচ ছিল ২৯২ কোটি টাকা। সুদ পরিশোধসহ অন্যান্য খাত মিলিয়ে আর্থিক খরচের পরিমাণ ছিল ১৮০ কোটি টাকা। এর বাইরে ওই বছর ডলারের বিনিময়মূল্যের কারণে কোম্পানিটির ২৪৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। এসব কারণেই মূলত ডেসকোকে কয়েক বছর ধরে বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এই লোকসানের পরিণতি সাধারণ শেয়ারধারীদেরও ভোগ করতে হচ্ছে। কারণ, কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ করে দুই বছর ধরে কোনো লভ্যাংশ পাচ্ছেন না তাঁরা। কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২৩ সালে শেয়ারধারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

এদিকে লভ্যাংশ না দেওয়ায় ও লোকসানের খবরে রোববার কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এ দিন ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৮০ পয়সা বা প্রায় পৌনে ৪ শতাংশ কমে ২১ টাকায় নেমে আসে। ৩৯৭ কোটি টাকা মূলধনের এই কোম্পানির শেয়ারের ৬৭ শতাংশের মালিকানা রয়েছে সরকারের হাতে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৪ শতাংশ ও ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রায় ৯ শতাংশ শেয়ার আছে।

পরপর দুই বছর শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি মালিকানাধীন এই কোম্পানিকে আজ সোমবার থেকে দুর্বল মানের কোম্পানি হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হচ্ছে। ফলে আজ থেকে কোম্পানিটির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঋণসুবিধা পাবেন না বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি এই শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তিতেও বেশি সময় লাগবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আর থ ক ই বছর সরক র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশিক্ষণ কাজের মান বাড়ায়: ভূমি সচিব

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, দক্ষতা অর্জনের প্রধান উপায় হলো প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ কাজের গুণগত মান বাড়ায়। 

বুধবার (২৬ নভেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রশাসনিক, ব্যক্তিগত ও সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সচিবালয় নির্দেশমালা ২০২৪-এর আলোকে নথি উপস্থাপনা, অনুমোদন, নথির শ্রেণিবিন্যাস, রেকর্ড ও সূচিকরণ, লেভেলের ব্যবহার, বরাত সূত্রের নির্দেশ বিষয়ক দুই দিনব্যাপী এ অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।

এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, আধুনিক সময়ে কাজের ধরন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। প্রযুক্তি, ব্যবস্থাপনা ও সেবার মান সব ক্ষেত্রেই প্রতিনিয়ত নতুনত্ব আসছে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মীদের গুণগত মান বাড়াতে প্রশিক্ষণ অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মৌলিক শর্ত হলো—সচিবালয় নির্দেশমালা ২০২৪ অনুযায়ী কাজ করা। নির্দেশনা, নীতিমালা কিংবা বিধিবিধান শুধু কাগজে-কলমে থাকার জন্য নয়; এগুলো বাস্তব কাজে প্রতিফলিত হলে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত হয়।

সত্যিকার অর্থে দেশপ্রেমিক কর্মচারীর অভাব রয়েছে, উল্লেখ করে সিনিয়র সচিব বলেন, নৈতিকতা ও দেশপ্রেম মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। চাকরিক্ষেত্রে নানা সময় সুবিধার জন্য আমরা দাবি আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হই, আমাদের সেবা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে রাষ্ট্রের অগ্রগতির অংশীদার হতে হবে। 

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. রায়হান কাওছার, উপ-সচিব (প্রশিক্ষণ ও শৃঙ্খলা) নাসরিন সুলতানা ও উপ-সচিব (প্রশাসন) মাসুদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্ত দেশ না হয়েও চীন কীভাবে উদ্ভাবনে এগিয়ে
  • দুদকের পরিধি বড় হচ্ছে, কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে
  • ইমরান খান সুস্থ আছেন—গুজব উড়িয়ে বলল পাকিস্তান
  • আমাদের পরে দেনা শোধবার ভার
  • বেরোবিতে র‌্যাগিংয়ের দায়ে তিন শিক্ষার্থী বহিষ্কার
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখের বেশি হতে পারে: জার্মানির শীর্ষ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য
  • প্রশিক্ষণ কাজের মান বাড়ায়: ভূমি সচিব
  • দেশে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন চান হালকা প্রকৌশল উদ্যোক্তারা
  • ঘনিষ্ঠজনের হাতেই প্রতি ১০ মিনিটে খুন হন একজন নারী: জাতিসংঘ
  • ১০ মাসে সাড়ে ২৮ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে চট্টগ্রাম বন্দর