ঝিনাইদহে সাপের কামড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু
Published: 13th, October 2025 GMT
ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সাপের কামড়ে হৃদয় হোসেন (১৮) নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) রাতে শৈলকূপা উপজেলার আউশিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে হৃদয়কে সাপে কামড় দেয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
আউশিয়া গ্রামের মিল্টন বিশ্বাসের ছেলে হৃদয় হোসেন ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন।
পুলিশ ও মৃতের স্বজনরা জানিয়েছেন, রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন হৃদয় হোসেন। রাতের কোনো একসময় বিষধর সাপ তাকে কামড় দেয়। পরে টের পেয়ে রাতেই তাকে উদ্ধার করে শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক। কুষ্টিয়ায় নেওয়ার পর সোমবার ভোরে মারা যান হৃদয় হোসেন।
শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুম খান বলেছেন, সাপের কামড়ে কলেজ শিক্ষার্থী হৃদয় হোসেনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। চিকিৎসকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা/সোহাগ/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জনতার এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়
কুড়িগ্রামের রৌমারীর বকবান্ধা ও ব্যাপারীপাড়া এলাকায় জিঞ্জিরাম নদের তীরের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ভাঙনের প্রতিকূলতায় দীর্ঘদিন ধরে জীবন যাপন করে আসছেন। অতিবৃষ্টিতে ঢল ধরলে ঘরবাড়ি, জমিজমা, এমনকি অনেকের শেষ সম্বলটুকুও হারিয়ে যায়। কিন্তু এই ভাঙনের বিপদ ঠেকানো নিয়ে প্রশাসনের দায় বা দায়িত্ব দুটোই যেন হারিয়ে গেছে নীরবতায়।
প্রথম আলোর খবরে এসেছে, প্রশাসনের আশায় বসে না থেকে স্থানীয় লোকজনই উদ্যোগ নিয়ে নদের তীরে অস্থায়ী বাঁশের বান্ডাল এবং জিও ব্যাগ স্থাপন করেছেন নদীভাঙন মোকাবিলা করতে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশের ‘ট্রোসা-২’ প্রকল্পের সহায়তায় এবং স্থানীয় লোকজনের স্বেচ্ছাশ্রমে ৬০০ মিটার এলাকায় ২৭টি বাঁশের বান্ডাল নির্মাণ করা হয়। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগও যোগ হয় এই উদ্যোগে। এতে অন্তত ৪০০ পরিবার ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় লোকজন নিজ অর্থায়ন ও শ্রম দিয়ে এই কাজ সম্পন্ন করেছেন; যাঁদের বেশির ভাগই নানাভাবে নদীভাঙনের ভুক্তভোগী।
এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, প্রশাসন কেন দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করতে পারেনি? যে সংস্থাগুলো স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে পারত, তারা কেন স্থানীয় মানুষের ওপর এই দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে? এটি স্পষ্ট করে যে স্থানীয় প্রশাসন ক্রমেই উদাসীন হয়ে পড়েছে। উপায় না পেয়ে জনগণই যেই কাজ করছে, যা প্রশাসনের করার কথা। তবে স্থানীয় লোকজনের এই উদ্যোগ আপাতত কাজ চালানোর মতো হলেও দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়।
বাঁশ ও জিও ব্যাগের সমন্বয় সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে। কিন্তু স্থায়ী বাঁধ না হলে নদীভাঙনের আতঙ্ক ফেরার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত, জনগণের স্বেচ্ছাশ্রম ও স্থানীয় এ উদ্যোগকে সহায়তা করে স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। না হলে কেবল অস্থায়ী সুরক্ষা নয়, বরং জনসাধারণের দুর্দশা ও ঝুঁকি বারবার পুনরাবৃত্তি হবে।
বকবান্ধা ও ব্যাপারীপাড়ার জনগণকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাঁরা দেখিয়ে দিয়েছেন, প্রকৃত প্রয়াস থাকলে ঐক্যবদ্ধভাবে যেকোনো সমস্যার সমাধান কেবলই সময়ের ব্যাপার। স্থানীয় জনগণকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি আমরা আশা করি, স্থানীয় প্রশাসন দ্রুতই ওই এলাকায় নদীভাঙন মোকাবিলায় কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেবে। নিজেদের সমস্যা মোকাবিলায় যেই দায়িত্বশীলতা স্থানীয় জনগণ দেখিয়েছেন, তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রশাসনও টেকসই সমাধানের দিকে এগিয়ে যাবে।
জনগণ দায়িত্বশীল হলেও প্রশাসন যদি উদাসীন থেকে যায়, তাহলে প্রকৃত সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায় না। তাই প্রশাসনকে জনগণের এই সংকটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে টেকসই সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।