সরকার সামর্থ্য অনুযায়ী বাড়ি ভাড়াসহ শিক্ষকদের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

তিনি বলেন, “শিক্ষকদের দাবির প্রতি সরকার শ্রদ্ধাশীল ও সংবেদনশীল।নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আগামী বছর আরো সম্মানজনক একটি কাঠামোর দিকে এগোনোর সুযোগ তৈরি হবে।”

আরো পড়ুন:

ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, যান চলাচল বন্ধ

রাজশাহীতে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা সচিব রেহেনা পারভীনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, “শিক্ষকরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার প্রাণ। শুরু থেকেই আমি শিক্ষকদের বেতন, প্রশিক্ষণ ও মর্যাদা বাড়ানোর পক্ষে সোচ্চার। আমার সহকর্মী ও অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্যরাও এ বিষয়ে সহানুভূতিশীল। বর্তমানে শিক্ষক সংগঠনগুলো শতাংশভিত্তিক বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবি তুলেছেন। আর্থিক বাস্তবতা অনুযায়ী সরকার ৫ শতাংশ বৃদ্ধি এবং ন্যূনতম ২০০০ টাকার বিষয়ে আলোচনা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আগামী বছর আরো সম্মানজনক একটি কাঠামোর দিকে এগিয়ে যেতে পারব।’

তিনি বলেন, “আমরা তিনটি নীতিতে এগোতে চাই। প্রথমত— বাস্তবতা থেকে মুখ না ফেরিয়ে বাস্তবতাকে বুঝে এগোনো। দ্বিতীয়ত-দোষারোপ নয়, সমাধান খোঁজা। তৃতীয়ত-সংখ্যা নয়, শেখার মানকে সাফল্যের মাপকাঠি করা। এই ফলাফল আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। হয়তো এটি কষ্টের, কিন্তু সত্যের পথে ফেরার সূচনা। আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি, শুনছি ও শিখছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই-একটি সৎ, জবাবদিহিমূলক ও শিক্ষাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা গঠন করা। যেখানে প্রতিটি ফলাফলই বাস্তব শেখার প্রতিফল হবে।”

শিক্ষা সচিব রেহানা পারভীন বলেন, “আমরা শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে প্রতি মুহূর্তে কাজ করছি। যদিও অর্থ উপদেষ্টা ও সচিব বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন।তবু আমরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। যতটা করা যায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আলোচনায় বসলে সমাধান আসবে।”

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ মন ত র শ ক ষকদ র অন য য়

এছাড়াও পড়ুন:

জমি নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড: পুলিশ

খুলনায় শিশু ফাতিহা (৭), মুস্তাকিম (৮) এবং তাদের নানি মহিতুন্নেছার (৫৩) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে হত্যা সংঘটিত হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা মেট্রেপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যার বিষয়ে তথ্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ। তিনি জানান, নিহত ফাতিহা ও মুস্তাকিমের বাবা শেফার আহমেদের মামাত ভাই ফ্রান্স প্রবাসী মো. শামীম শেখ ওরফে শেখ শামীম আহম্মেদসহ সাতজন হত্যা মিশনে অংশ নেন। 

আরো পড়ুন:

বন্ধুকে হত্যার পর কুড়াল নিয়ে থানায় হাজির

খুলনায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার শামীম শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ বলেন, ‘‘খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়ন ভবাণীপুর গ্রামে ১ একর ৬৯ শতক পৈত্রিক জমি নিয়ে শেফার আহমেদের সঙ্গে মামাত ভাই শামীমের বিরোধ আছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। ২০০৩ সালে শামীম একটি অস্ত্র মামলার আসামি ছিলেন। এরপর তিনি ফ্রান্সে চলে যান। ২০১৭ সালে ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরেন। এরপর তিনি অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৭-৮ মাস আগে জামিনে মুক্তি পান। জেলখানায় বসে শামীম তার ফুফাত ভাই শেফারের পরিবারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।’’

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘‘অস্ত্র মামলায় জেলে থাকাকালে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে শামীমের। জেলখানা থেকে বের হয়ে তিনি জেলখানায় পরিচিত সন্ত্রাসীদের এক লাখ টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে প্রতিপক্ষ সেফার আহমেদের পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করে।’’

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ বলেন, ‘‘গত ১৬ নভেম্বর দুপুর একটা থেকে দেড়টার মধ্যে শামীমের নেতৃত্বে সাতজন লবণচরা এলাকার দরবেশ মোল্লা গলির শেফার আহমেদের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে দেওয়াল টপকে একজন ভেতরে প্রবেশ করে প্রধান গেটের পকেটগেট খুলে দেয়। এরপর তারা একে একে তিনজনকে ইট দিয়ে থেতলে হত্যা করে মুরগীর খামারের কক্ষে রেখে দেয়। এরপর তারা শেফার আহমেদ ও তার স্ত্রী রুবি আক্তারকে হত্যা করার জন্য ওই বাড়িতে অবস্থান করে কিন্তু সেটি সফল করতে না পেরে তারা কৌশলে পালিয়ে যায়।’’

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘‘হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শামীম শেখ ঘটনার দিন থেকে পলাতক ছিলেন। তিনি কৌশলে ফ্রান্সে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। গত ২৭ নভেম্বর রাত ৩টায় ঢাকার বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’’ 

এ মামলায় আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, লবণচরা থানার মোল্লাপাড়া এলাকার আজহারুল ইসলাম আরজুর ছেলে তরিকুল ইসলাম তারেক (২৬)। তার বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা রয়েছে। এছাড়া একই থানার জিন্নাহপাড়া এলাকার বাবুল হাওলাদারের ছেলে তাফসির হাওলাদারকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চুরি ও ছিনতাইয়ের দুটি মামলা রয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হত্যার মিশন সফল হওয়ার পর শামীম ভাড়াটে খুনীদের এক লাখ টাকা পরিশোধ করেন। ঘটনার পর ওই বাড়ি থেকে লুট হওয়া জমির দলিলপত্র ও স্বর্ণালংকার এখনো উদ্ধার হয়নি। 

এ মামলার সকল আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে নিহত ফাতিহা  ও মুস্তাকিমের বাবা শেফার আহমেদ এবং মা রুবি আক্তার উপস্থিত ছিলেন। 
 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জমি নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড: পুলিশ