অনশনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পাশে আখতারসহ এনসিপির প্রতিনিধিদল
Published: 18th, October 2025 GMT
তিন দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ দলটির একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় আখতার হোসেন বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি সরকারের আন্তরিকতার অভাব দেখছেন তাঁরা।
আজ শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায় এনসিপির প্রতিনিধিদলটি। এতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম সদস্যসচিব (শিক্ষা ও গবেষণা) ফয়সাল মাহমুদ।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ১২ অক্টোবর থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। অবস্থান কর্মসূচি, কর্মবিরতি, ‘মার্চ টু সচিবালয়’ ও শাহবাগ ‘ব্লকেডের’ পর অনশন করছেন তাঁরা।
অনশন কর্মসূচিতে এনসিপির পক্ষ থেকে সংহতি জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, ‘কেউ কেউ প্রকল্প নেয়, লুটপাট করে টাকা বিদেশে পাচার করে আর আমার শিক্ষকেরা বাড়িভাড়া দিতে পারে না, চিকিৎসা ভাতা পায় না। এই বাংলাদেশ আমরা আর দেখতে চাই না।’
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, নতুন বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছিল, যাতে দেশ পরিচালনায় যুক্ত থাকা ব্যক্তিরা সবার আগে দেশের নাগরিকদের প্রতি আন্তরিক থাকেন। তিনি বলেন, ‘কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক, বিশেষত এই আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি আন্তরিকতার অভাব আমরা খেয়াল করছি।’
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ছিল চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে না পারা।’ শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখলাম, একটা যৌক্তিক বিষয়ে রাষ্ট্রকে নড়ানো কত কঠিন।’
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশরত শিক্ষক-কর্মচারীদের দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের খোঁজখবর নিয়েছে এনসিপির একটি চিকিৎসক প্রতিনিধিদল।
আরও পড়ুনশহীদ মিনারে অনশনরত এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র এনস প র আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ মিনারে অনশনরত এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন
তিন দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলা এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের অনশন কর্মসূচিতে এক নারী শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে এই শিক্ষক অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান অন্য শিক্ষকেরা।
অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষকের নাম ঝর্ণা গাইন। তিনি বরিশালের উজিরপুর মেহেরনিগার বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীরা কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। অবস্থান কর্মসূচি, কর্মবিরতি, ‘মার্চ টু সচিবালয়’ ও শাহবাগ ‘ব্লকেডের’ পর অনশন করছেন তাঁরা।
অনশনরত অন্য শিক্ষকেরা জানান, আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অনশনরত অবস্থায় ঝর্ণা গাইন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অন্য শিক্ষকেরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাঁকে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু ঝর্ণা গাইন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে রাজি হননি। তিনি শহীদ মিনারের অনশন কর্মসূচিতে আবার যোগ দেন।
ঝর্ণা গাইনকে দেখভাল করছেন মানিকগঞ্জের শিবালয়ের বরংগাইল গোপাল চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ঝর্ণা বিশ্বাস। তিনি জানান, তাঁরা ১২ অক্টোবর আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। এত দিন একসঙ্গে ছিলেন। গতকাল শুক্রবার থেকে অনশনে রয়েছেন অসুস্থ হওয়া এই নারী শিক্ষক। তবে আজ প্রচণ্ড গরমে অনেক শিক্ষক এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঝর্ণা গাইনের অবস্থা বেশি খারাপ।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জানান, অনশনরত আরেক কর্মচারীও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে তিনিও আবার অনশনে যোগ দিয়েছেন। অসুস্থ হওয়া সেই কর্মচারীর নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের কর্মচারী।
শিক্ষকদের অনশন কর্মসূচিতে সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপস্থিত হয়ে সংহতি জানায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন জাকসু সহসভাপতি (ভিপি) আবদুর রশীদ জিতু। তিনি বলেন, যৌক্তিক দাবি নিয়ে শিক্ষকদের কেন রাস্তায় নামতে হলো? তিনি বলেন, এমন আন্দোলন ফ্যাসিবাদের সময়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। শিক্ষকেরা দিনের পর দিন রাস্তায় কাটাচ্ছেন। সরকার যাতে দ্রুত সময়ে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়, সেই আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে শিক্ষক–কর্মচারী আগামীকাল রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘খালি প্লেট নিয়ে ভুখা মিছিল’ করবে বলে জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য খুবই পরিষ্কার। তিন দফা দাবি মেনেই প্রজ্ঞাপন জারি করবেন; কোনো ছাড় নেই। তিনটাই মানতে হবে। যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা–ই দিতে হবে। অন্যথা উপদেষ্টাকে তাঁর মন্ত্রণালয় ছাড়তে হবে।’