যশোরে সাবেক এমপির জমি চাষ করছেন ‘বিএনপির কর্মীরা’
Published: 19th, October 2025 GMT
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) রণজিত কুমার রায় এবং তাঁর দুই ছেলের জমি দখল করে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। কিছু জমিতে চাষ করা হয়েছে সবজি। বিএনপির স্থানীয় কর্মীরা তাঁদের প্রায় ১৪ বিঘা জমি এভাবে দখলে নিয়ে চাষ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রণজিত কুমার রায় যশোর-৪ (অভয়নগর ও বাঘারপাড়া এবং সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসনের এমপি ছিলেন। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন রণজিত। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রণজিত কুমার রায় দেশ ছেড়ে চলে যান বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। আত্মগোপনে আছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
৫ আগস্টের পর পতিত ছিল জমিবাঘারপাড়ার খাজুরা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বন্দবিলা ইউনিয়নের সেকেন্দারপুর এবং চাঁপাতলা মৌজায় রণজিত কুমার রায় এবং তাঁর দুই ছেলে রাজীব কুমার রায় ও সজীব কুমার রায়ের ৯টি খতিয়ানে ৬৫১ দশমিক ১৬ শতক জমি রয়েছে। বেশির ভাগ জমির শ্রেণি ধানি। বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের আয়াপুর মৌজায় একটি খতিয়ানে রণজিতের ৩৮ শতক ধানি শ্রেণির জমি আছে বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নেছারউদ্দিন আল আজাদ।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, রণজিত কুমার রায়ের কাছ থেকে বর্গা নিয়ে এসব স্থানীয়রা চাষাবাদ করতেন। ৫ আগস্টের পর থেকে জমিগুলো পতিত ছিল। স্থানীয় বিএনপির এক নেতা এবং কয়েজন কর্মী বর্গাদারদের এসব জমিতে ফসল করতে নিষেধ করেন। আমন মৌসুম শুরু হলে স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা ধানের চারা রোপণ করেছেন। দুটি জমির কিছু অংশে সবজি চাষ করা হয়েছে।
কোথাও ধান চাষ, কোথাও ঢ্যাঁড়সচাঁপাতলা গ্রামের মাঠের উত্তর অংশে রণজিত রায়দের প্রায় ৯ বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। ধানের জমির সঙ্গে প্রায় ছয় বিঘার মেহগনিবাগান। সেখানকার ১৫টি বড় মেহগনিগাছের কেটে নেওয়া গোড়াগুলো এখনো আছে। চাঁপাতলা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম এই ধান চাষ করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
চাঁপাতলার পাশের গ্রাম সেকেন্দারপুর। সেকেন্দারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে তিন খণ্ডে প্রায় তিন বিঘা ধানের জমি রণজিত কুমার রায়ের। দুই খণ্ডের মাঝখানে রণজিত কুমার রায়ের ভাইয়ের ধানের জমি। সেখানকার বেশির ভাগ জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। পূর্ব পাশের প্রায় এক বিঘা জমিতে সারি করে ঢ্যাঁড়সের চারা লাগানো হয়েছে। চারাগুলো বড় হয়েছে। গাছে ঢ্যাঁড়স ধরেছে। সেকেন্দারপুর গ্রামের দক্ষিণ পাশে চুঁচড়োমারি বিলে ৩৭ শতক জমিতে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রায় তিন মাস আগে রোপণ করা চারাগুলো বড় হয়েছে। ধানের গাছ থেকে শিষ বের হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেকেন্দারপুর গ্রামের কামাল হোসেন, মো.
নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবি করে আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সেকেন্দারপুর গ্রামের উত্তর মাঠের এক জমিতে ধান চাষ করছি আর আনিসুর এক বিঘা জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ করছেন। তবে আমি চাঁপাতলা গ্রামের মাঠে ধান চাষ করছি না।’
আয়াপুর গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ৩৮ শতক জমির এক পাশে কিছু অংশে উঁচু মাচা করে করোলা চাষ করা হয়েছিল। করোলার চাষ শেষ করে সেই মাচায় লাউ চাষ করা হচ্ছে। অপর পাশের জমির সম্পূর্ণ অংশে ধান চাষ করা হচ্ছে। ধানের চারাগুলো বড় হয়েছে। ধানের গাছ থেকে শিষ বের হচ্ছে। বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্কাস বিশ্বাস এই আবাদ করেছেন বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আক্কাস বিশ্বাস বলেন, ‘বর্তমানে আমি ওই জমি হেফাজতে নিয়ে ৩৩ শতকে আমন ধান করেছি। পাঁচ শতকে করলার চাষ করেছিলাম। করলা উঠে যাওয়ায় সেখানে লাউ চাষ করছি।’ রণজিত কুমার বা তাঁর পরিবারের কেউ ফিরে এলে জমি দিয়ে দেবেন বলে দাবি করেন তিনি।
সেকেন্দারপুর গ্রামের আবদুর রহিম দাবি করেন, রণজিত কুমারের চুঁচড়োমারি বিলের ১৫ কাঠা এবং সেকেন্দারপুর গ্রামের উত্তরের মাঠের ১৫ কাঠা জমিতে ৪০ বছর ধরে তিনি ধান চাষ করে আসছেন। এক মৌসুম ওই জমি ফেলানো ছিল। এ বছর আবার আমন ধান চাষ করছেন।
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সেকেন্দারপুর গ্রামের উত্তর মাঠে সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়ের জমিতে ঢ্যাঁড়স চাষ করা হয়েছে। গত বুধবার বিকেলেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রণজ ত ক ম র র য় র আশর ফ ল ইসল ম ধ ন চ ষ করছ ন ধ ন চ ষ কর ব এনপ র আমন ধ ন
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনে ১২৭ পদে নিয়োগ, আবেদন করেছেন কী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনে জনবল নিয়োগে আবেদন চলছে। এটি পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। এই নিয়োগে লক্ষ্মীপুর জেলার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৫ ধরনের শূন্য পদে মোট ১২৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে লক্ষ্মীপুরে। এই জেলার স্থায়ী বাসিন্দারা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যাঁরা আগে পরিসংখ্যানবিদ এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের পুনরায় আবেদন করার প্রয়োজন নেই এবং তাঁদের বয়স আগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী গণনাযোগ্য হবে।
আরও পড়ুনসোনালী-অগ্রণী-কৃষি-রূপালীসহ ১১ ব্যাংক নেবে সিনিয়র অফিসার, পদ ১০১৭০৮ অক্টোবর ২০২৫পদের নাম ও বিবরণ—
১. পদের নাম: পরিসংখ্যানবিদ
পদসংখ্যা: ২টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: পরিসংখ্যান, গণিত, অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।
বেতন স্কেল: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা।
গ্রেড: ১৪
২. পদের নাম: স্টোর কিপার।
পদসংখ্যা: ৫টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
গ্রেড: ১৬
৩. পদের নাম: অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক।
পদসংখ্যা: ৩টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৭০০-২৩,৪৯০ টাকা।
গ্রেড: ১৬
৪. পদের নাম: স্বাস্থ্য সহকারী।
পদসংখ্যা: ১১৬টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
গ্রেড: ১৬
৫. পদের নাম: গাড়িচালক।
পদসংখ্যা: ১টি।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা।
গ্রেড: ১৬
আবেদনকারীর বয়স
৩০ সেপ্টেম্বর প্রার্থীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর হতে হবে।
আবেদনের প্রক্রিয়া
আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে অথবা ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
আবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ—
অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছে: ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে
আবেদনের শেষ তারিখ: ২০ অক্টোবর বিকেল ৫টা পর্যন্ত
আবেদন ফি জমা দেওয়ার শেষ সময়: অনলাইন আবেদন জমার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফি জমা দিতে হবে
আবেদন ফি—
আবেদনকারীকে পরীক্ষার ফি বাবদ ১০০ টাকা এবং টেলিটক সার্ভিস চার্জ বাবদ ১২ টাকাসহ মোট ১১২ টাকা (অফেরতযোগ্য) টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন