রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেপরোয়া অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের সদস্যের বিরুদ্ধে ঘুষি মেরে এক আনসার সদস্যের নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে।

আহত আনসার সদস্যের নাম ফিরোজ সরকার (৩০)। আটক তিনজন হলেন অ্যাম্বুলেন্স–চালক রজব, আবদুল্লাহ ও মারুফ। ঘটনার পর অভিযান শুরু হলে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের চার মূল হোতা গা ঢাকা দিয়েছেন।

আনসার সদস্যরা জানান, আজ দুপুরে হাসপাতালের ৪ নম্বর ফটকে দায়িত্ব পালন করছিলেন ফিরোজ সরকার। এই ফটক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ নিষেধ। তারপরও একটি অ্যাম্বুলেন্স ৪ নম্বর ফটক দিয়ে ঢুকে পড়ে। ফিরোজ বাধা দিলেও অ্যাম্বুলেন্সটি সোজা জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে রোগী তুলতে শুরু করে। ফিরোজ আলম সেখানে গিয়ে এভাবে জোর করে ঢুকে পড়ার কারণ জানতে চান। এ সময় তাঁর সঙ্গে তর্ক শুরু করেন ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালক। তখন পাশ থেকে আরেক অ্যাম্বুলেন্স–চালক এসে ওই আনসার সদস্যকে ঘুষি মারেন। এতে তাঁর নাক ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। পরে অন্য আনসার সদস্যরা এসে দুজনকে ধরে ফেললেও অন্য অ্যাম্বুলেন্স–চালকেরা এসে তাঁদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অ্যাম্বুলেন্স–চালকেরা হাসপাতালের বাইরে গিয়ে রাস্তার পাশে লাঠিসোঁটা ও হাসুয়া নিয়ে অবস্থান নেন। আর আনসার সদস্যরা অবস্থান নেন হাসপাতালের সামনে। এরই মধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘিরে বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স–চালকদের সিন্ডিকেট খুবই বেপরোয়া। তারা রোগী ও লাশ জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন সে দলের স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। বর্তমানে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন আল মামুন, বাদশা, ডালিম ও আলিম নামের চারজন। এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধের জন্য সম্প্রতি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার, নগর পুলিশের কমিশনার, র‌্যাব-৫–এর অধিনায়কের কাছেও চিঠি দেন তিনি।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স–চালকেরা খুবই বেপরোয়া। তাঁদের মধ্যে কোনো রকম মানবিক মূল্যবোধ নেই। তাঁরা রীতিমতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে থাকেন। এটা নিয়ে সম্প্রতি আমি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। এরই মধ্যে এমন ঘটনা ঘটল। তিনজন ধরা পড়েছেন। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। যে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা, সেটি জব্দ করে নিয়ে গেছে পুলিশ।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য ম ব ল ন স চ লক র আনস র সদস য র সদস য র

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেপ্তার ৩

চট্টগ্রাম নগরে ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ। আজ রোববার ভোরে নগরের ষোলোশহর এলাকায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এই মিছিল বের হয়। মিছিলে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী ভোরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সামনে ঝটিকা মিছিল বের করেন। মিছিলে অংশ নেওয়া তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন আনোয়ারুল হক ওরফে ইশান, রাজন দাশ ও সৈকত চন্দ্র ভৌমিক। তিনজনের বাসা চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকায়। এদিকে ঝটিকা মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেপ্তার ৩
  • চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেপ্তার ৩