জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যম্পাসের নির্মাণকাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে আজ মঙ্গলবার। এতে সব বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। আগের মতো ক্যাম্পাসে কর্মচঞ্চলতাও দেখা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নেই শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আনাগোনা।

আজ সকাল থেকে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। তবে লাইব্রেরিতে পড়েন এমন শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) ভবন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও মেডিকেল সেন্টার শাটডাউন কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকায় এসব জায়গায় স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শাটডাউনের আওতামুক্ত বলা হলেও আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা আজ সকালে ভিসি ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। ভবনের দ্বিতীয় ফটক দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায় কর্মকর্তা–কর্মচারীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ভবনের মূল ফটকেও তালা ঝুলতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় কার্যক্রম চললেও তা ছিল ঢিলেঢালা।

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড.

হাবিবুর রহমান হলের ইস্পাতের তৈরি (স্টিল বেজড) নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু ও শেষ করতে হবে এবং যত দিন পর্যন্ত আবাসনব্যবস্থা না হয়, তত দিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

তিন দফা দাবিতে গত রোববার সকালে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গতকাল সোমবার সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। সবশেষ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবির মধ্যে প্রথম দুটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। তবে তাঁরা শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা–৫ শাখা থেকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভা হবে আগামীকাল বুধবার সকালে। এ বিভাগের সভাকক্ষে বৈঠকটি হবে। বৈঠকে থাকবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়ের।

সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা; প্রকল্পের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর; বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণী ভবন ও হাবিবুর রহমান হল স্টিল স্ট্রাকচারের (ইস্পাতের কাঠামো) মাধ্যমে নির্মাণ; আবাসন সমস্যা নিরসন বিষয়ে আলোচনা ও বিবিধ প্রসঙ্গ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে

৪৩তম বিসিএসে দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া কয়েকজন প্রার্থী গেজেটভুক্ত করা ও ভেরিফিকেশন নীতি প্রণয়নের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ দাবিতে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

অনশনে বসা প্রার্থীরা বলেন, ‘গেজেটের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। কয়েকবার সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেও সরকারের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। তাই এখন আমরণ অনশন শুরু করেছি।’

আরও পড়ুনবেসরকারি ব্যাংক নেবে অ্যাসিস্ট্যান্ট রিলেশনশিপ অফিসার, বেতন ৩০,০০০ টাকা২৭ এপ্রিল ২০২৫

আমরণ অনশনে বসা শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো. ফয়সাল চোকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪৩তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত গেজেট বঞ্চিত ২২৭ প্রার্থীর গেজেট চেয়ে আমরণ অনশনে বসেছি। যত দিন না গেজেট হয়, তত দিন এ অনশন চলবে। ৪৩তম বিসিএসে গেজেটে বাদ পড়া নিরপরাধ সবার গেজেট প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী বিসিএসগুলোয় ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং ভেরিফিকেশন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।’

আমরণ অনশনে বসা প্রার্থীরা হলেন, শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া মো. ফয়সাল চোকদার, মো. মতিউর রহমান, এম এ হান্নান সরকার, দেবাশীষ ঘোষ ও সমরজিৎ চক্রবর্তী। আগামীকাল বুধবার তাঁদের সঙ্গে বাদ পড়া আরও কয়েকজন প্রার্থী যোগ দেবেন বলে জানান তাঁরা।

দীর্ঘ পাঁচ বছরের নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষে ৪৩তম বিসিএসের সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত হয়ে গত ১৫ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু গেজেট থেকে বাদ পড়ায় ২২৭ প্রার্থী চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি। এরপর গেজেটভুক্ত হওয়ার দাবিতে তাঁরা গত জানুয়ারি থেকে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

আরও পড়ুন৪০৪ পদে সরকারি চাকরি, আবেদন শেষ আগামীকাল১২ ঘণ্টা আগে

৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ২ হাজার ১৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন। ভেরিফিকেশন শেষে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম সুপারিশকৃত ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ জনসহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে ১ হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে
  • পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ