আরও সাত দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র
Published: 10th, July 2025 GMT
আরও সাতটি দেশের জন্য ‘পাল্টা শুল্ক’ নির্ধারণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মলদোভা, আলজেরিয়া, ইরাক, লিবিয়া ও শ্রীলঙ্কাকে নতুন শুল্কারোপের কথা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। এর আগে সোমবার ১৪টি দেশকে চিঠি দেন তিনি। এক সপ্তাহের মধ্যে মোট ২১টি দেশের জন্য নতুন পাল্টা শুল্কহার নির্ধারণ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সিএনবিসি জানায়, বুধবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, কমপক্ষে সাতটি দেশের তালিকা প্রকাশের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশের নাম জানানো হবে। তবে শেষ পর্যন্ত সাতটি দেশের মধ্যেই সীমিত থাকলেন তিনি।
ফিলিপাইনের পণ্যে ২০ শতাংশ, ব্রুনাইয়ের পণ্যে ২৫ শতাংশ, মলদোভার পণ্যে ২৫ শতাংশ, আলজেরিয়ার পণ্যে ৩০ শতাংশ, ইরাকের পণ্যে ৩০ শতাংশ, লিবিয়ার পণ্যে ৩০ শতাংশ ও শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ব্রাজিলে উৎপাদিত পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা সামাজিক মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘ব্রাজিলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ঘাটতির দাবিটি সঠিক নয়। যে কোনো একতরফা শুল্ক বৃদ্ধি করা হলে ব্রাজিলের অর্থনৈতিক পারস্পরিক আইন অনুসারে মোকাবিলা করা হবে।’
এ পর্যন্ত যে ২১টি দেশের নতুন করে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাদের শুল্কহার ২০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এসব চিঠিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত এই নতুন শুল্কহার পর্যালোচনা করতে পারে। এটি নির্ভর করবে সেই দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ওপর।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, নতুন এই শুল্কহার প্রয়োজনের তুলনায় কম। ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে যে হারে শুল্কারোপ দরকার, তার চাইতে কম। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায়ই দাবি করেন, বাণিজ্য ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
চিঠি পাওয়া সব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু না কিছু বাণিজ্য ঘাটতি আছে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই সেই ঘাটতির পরিমাণ খুবই সামান্য। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে মলদোভার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল মাত্র ৮৫ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
ট্রাম্প যেসব নতুন শুল্কহার আরোপ করেছেন, তার বেশির ভাগই ২ এপ্রিল ঘোষিত স্বাধীনতা দিবসের শুল্কের কাছাকাছি। ট্রাম্প সেই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন, যার মেয়াদ গত বুধবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে গত সোমবার ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে শুল্ক কার্যকর করার সময়সীমা আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত পিছিয়ে দেন।
এর আগে গত সোমবার বাংলাদেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, কাজাখস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, লাওস, মিয়ানমার, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সার্বিয়া, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের পণ্যে নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ করে চিঠি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের জন্য নতুন করে ৩৫ শতাংশ শুল্কারোপের কথা জানানো হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র শ ল ক আর প র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
পুরান ঢাকায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) সামনে এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ শুক্রবার রাতে তাঁরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) জনসমক্ষে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে বুক ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা–কর্মী শনাক্ত হয়েছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়আজ রাত ১০টার দিকে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে আবার বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন, আধিপত্যবাদবিরোধী মঞ্চ, বিল্পবী সাংস্কৃতিক মঞ্চের নেতা-কর্মীসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মিছিলপরবর্তী সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব আহসান লাবিব।
সমাবেশে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান বলেন, ‘গত ৯ মাসে বিএনপির অন্তঃকোন্দলের কারণে প্রায় দেড় শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পুরোনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি এই বাংলাদেশে আর হতে দেব না। আপনারা যদি না শোধরান, তাহলে হয়তো আগামীতে আপনাদের ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন পূরণ হবে, কিন্তু কত দিন ক্ষমতায় টিকে থাকবেন, সেটা ছাত্র-জনতা আবার ঠিক করে দেবে।’
সমাবেশে ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি শাফায়েত মীর বলেন, ‘আবার যারা আওয়ামী লীগের পুরোনো বন্দোবস্ত চালু করতে চায়, আবার চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, খুন করতে চাচ্ছে, সেই দলকে আমরা বলব, চাঁদাবাজি না করে ভিক্ষা করুন, আমরা ভিক্ষা দেব। কিন্তু আমরা আপনাদের জুলুম, নির্যাতন, খুন মেনে নেব না। প্রয়োজনে আবার রাজপথে নামব।’
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘বিএনপি যদি এই খুন, রাহাজানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে হয়তো সেদিন বেশি দূরে নেই, যে পথে আমরা লীগকে পাঠিয়েছি, সেই পথে ফ্যাসিবাদী আমলে আমাদের সহযোদ্ধা বিএনপিকেও হয়তো হাঁটতে হবে।’
পুরান ঢাকায় নৃশংশ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। শুক্রবার রাত আটটায় ক্যাম্পাসে