Samakal:
2025-07-11@18:17:15 GMT

পদাবলি

Published: 10th, July 2025 GMT

পদাবলি

উন্মোচন 
ফারুক মাহমুদ 

বাঁচার-প্রবাহে যদি অযাচিত রাত্রি নেমে আসে
তখন অন্ধকারই আখ্যানের গতি-নিয়ন্ত্রক
পথের সকল চলা চলে যায় উল্টো বাঁকা পথে
যতই বলি-না কেন– ‘ভস্ম’ কোনো সম্ভাবনা নয়
এর থেকে আগুনের গুণাগুণ অবিকল রেখে
অন্ত্যমিল পদ্য হতে পারে। অন্যদিক, যথাযথ 
অনুবাদ করা গেলে– আগুনের শরীরে ও মনে
পাওয়া যায় ইচ্ছে-ইচ্ছে শ্রেণিহীন শুভপুণ্য আলো

মরচেপড়া তালা নিয়ে বেশিক্ষণ বিতর্ক চলে না
বড়জোর পরাজিত মানুষের ছোট্ট হাহাকার
ঝুলে থাকে সংশ্লিষ্ট চাবিটির আয়ুপরিসরে
আক্ষেপে সান্ত্বনা নেই। বহুস্তর অর্জনের মতো
সত্যটি দাঁড়িয়ে যায়। আমাদের জানা আবশ্যক
অসার কান্নায় নয়, স্তব্ধতাই বিজ্ঞ উন্মোচন
 

 

আঙুলে আংটি, হাতে গণনা
লোপা মমতাজ

কেউ ধোয়া তুলসী পাতা নয়
যদিও মুখে কপট ঘ্রাণে পবিত্রতার বুলি,
অন্তরে রক্তাক্ত অভিপ্রায়ের ধূলি।

যে বলেছিল– এই পৃথিবী বদলাব
আজ তার আঙুলে ক্ষমতার আংটি,
সে এখন সই করে মৃতদের সংখ্যাটি।

যুদ্ধ নয় শান্তি চাই যে বলেছিল হাটে
তার হাতে আজ শান্তির বোমা ফাটে,

এক হাত যুদ্ধের বিরুদ্ধে বলে,
আর হাত বিক্রি করে বন্দু্ক;

শিশুর দুধ, বুড়োর ওষুধ 
আর মজুরের ভাঙা হাতে
বেদনা জেগে থাকে রাতে

এই যে মা কাঁদে,
এই যে বাবার শার্টে থার্মোবারিক বোমার রক্ত,
এই যে কিশোরীর চোখে ধোঁয়া–
ওদের তো কেউ বিপ্লব শেখায় না,
এখানে বিপ্লব জন্মের ছোঁয়া;

আমি শুধু লিখে যাই–
তুমি পড়ে শোনো রক্তাক্ত দিন ও রাতের ব্যথা।
বোমার শব্দে ভরে উঠছে 
এক একটা বিষণ্ন কবিতা–

 

শাশ্বত সে মুখ 
বহ্নি কুসুম 

নিঃশ্বাসের মতো অনিবার্য 
তোমার মুখটা এসে বসে পড়ে চোখের তারায়  
যেন এই মুখটা ছাড়া ঘোর অমানিশায়
নির্লিপ্ত ঢেকে যাবে চোখের জ্যোতি।
স্মৃতিগুলো জীবন্ত ছবি হয়ে ওঠে–
লুকোচুরি গোধূলিবেলা, সেই বৃষ্টিপ্রহর– জোছনাস্নান।
এমনকি তোমার নীরব শাসনও। 
কী যে অমোঘ বাঁধনে– সে কী কঠোর চাহনি চোখে! 
আমি কুঁকড়ে যেতাম ভয়ে–
অমন আগুন দৃষ্টি মেললে
আমি কী করে তাকাই? 

তুমি কি স্মিত হাসতে?
থরথর আমাকে দেখে? নাহলে
ভালোবাসার আকাশ নিয়ে
দু’হাত যে বাড়াতে?
দীপ্ত সবুজ ও বুকটি ছুঁয়ে– শ্রাবণের মুষল বৃষ্টি
ঝরঝর নামত এ চোখে। 

ভেঙে দিয়ে যৌথ স্বপ্নঘর
কবে যে ছিঁড়ে গেছে তার!


 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পুরান ঢাকায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) সামনে এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ শুক্রবার রাতে তাঁরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করেন।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) জনসমক্ষে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে বুক ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা–কর্মী শনাক্ত হয়েছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

আজ রাত ১০টার দিকে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে আবার বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন, আধিপত্যবাদবিরোধী মঞ্চ, বিল্পবী সাংস্কৃতিক মঞ্চের নেতা-কর্মীসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

মিছিলপরবর্তী সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব আহসান লাবিব।

সমাবেশে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান বলেন, ‘গত ৯ মাসে বিএনপির অন্তঃকোন্দলের কারণে প্রায় দেড় শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পুরোনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি এই বাংলাদেশে আর হতে দেব না। আপনারা যদি না শোধরান, তাহলে হয়তো আগামীতে আপনাদের ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন পূরণ হবে, কিন্তু কত দিন ক্ষমতায় টিকে থাকবেন, সেটা ছাত্র-জনতা আবার ঠিক করে দেবে।’

সমাবেশে ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি শাফায়েত মীর বলেন, ‘আবার যারা আওয়ামী লীগের পুরোনো বন্দোবস্ত চালু করতে চায়, আবার চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, খুন করতে চাচ্ছে, সেই দলকে আমরা বলব, চাঁদাবাজি না করে ভিক্ষা করুন, আমরা ভিক্ষা দেব। কিন্তু আমরা আপনাদের জুলুম, নির্যাতন, খুন মেনে নেব না। প্রয়োজনে আবার রাজপথে নামব।’

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘বিএনপি যদি এই খুন, রাহাজানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে হয়তো সেদিন বেশি দূরে নেই, যে পথে আমরা লীগকে পাঠিয়েছি, সেই পথে ফ্যাসিবাদী আমলে আমাদের সহযোদ্ধা বিএনপিকেও হয়তো হাঁটতে হবে।’

পুরান ঢাকায় নৃশংশ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। শুক্রবার রাত আটটায় ক্যাম্পাসে

সম্পর্কিত নিবন্ধ