হিন্দি সিনেমার অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপরে হামলার ঘটনায় বিস্মিত তার ভক্ত-অনুরাগীরা। গত ১৫ জানুয়ারি, দিবাগত মধ্যরাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার নিজ বাড়িতে ‘রেস’ তারকার ওপরে হামলা করে এক দুর্বৃত্ত।

ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাধিকবার সাইফকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শরীরে একাধিক অস্ত্রোপচার হয়েছে। সাইফ আলী খান এখন বিপদমুক্ত। সাইফ আলী খান ছাড়াও বলিউডের বেশ কজন তারকা অভিনেতা-নির্মাতা হামলার শিকার হয়েছেন। এমন কজন তারকাকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।

সঞ্জয় দত্ত
বলিউডের দাপুটে অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত হামলার শিকার হয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ের দাঙ্গার সময়ে ভয়াবহ আক্রমণের শিকার হন ‘দাগ’খ্যাত এই অভিনেতা। কিন্তু অল্পের জন্য প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। এরপরও বারবার হুমকি পেয়েছেন এই অভিনেতা।

রাকেশ রোশান
বলিউডের বরেণ্য পরিচালক, অভিনেতা-প্রযোজক রাকেশ রোশান। তার আরেক পরিচয় তিনি অভিনেতা হৃতিক রোশানের বাবা। ২০০০ সালে মুক্তি পায় রাকেশ রোশান নির্মিত হৃতিক রোশান অভিনীত ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ সিনেমা। বক্স অফিসে দারুণ সাড়া ফেলে সিনেমাটি; বিদেশেও প্রশংসা কুড়ায় এটি। এরপর আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়ারা চেয়েছিল, হৃতিক রোশান যাতে তাদের সিনেমায় কাজ করে। কিন্তু রাকেশ রোশান তা প্রত্যাখ্যান করেন। একই বছর মুম্বাইয়ে তার অফিসের সামনে তাকে দুবার গুলি করা হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হন রাকেশ রোশান। গুলিবিদ্ধ হলেও চিকিৎসার পর তার জীবন রক্ষা পায়।

গওহর খান
বলিউড অভিনেত্রী অভিনেত্রী গওহর খান। ২০১৪ সালের শেষের দিকে টিভি রিয়েলিটি শো ‘ইন্ডিয়া’স র স্টার’-এর শুটিং করার সময়ে আক্রমণের শিকার হন এই অভিনেত্রী। এ অনুষ্ঠানের দর্শক সারিতে থাকা ২৪ বছরের এক তরুণ গওহর খানকে থাপ্পড় মারেন। কারণ হিসেবে ওই তরুণ বলেছিলেন— “একজন মুসলিম নারী হয়ে এত ছোট পোশাক পরা তার উচিত হয়নি।” এ ঘটনার পর মামলা দায়ের হয় এবং ওই তরুণকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

সালমান খান
কৃষ্ণসার হরিণ শিকারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছর ধরে বলিউড অভিনেতা সালমান খানকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে লরেন্স বিষ্ণোই। গত বছরের ১৪ এপ্রিল ভোররাতে সালমান খানের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুই ব্যক্তি। বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন থাকা অবস্থায় এই ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহত হননি সালমান কিংবা তার বাড়ির কেউই। পরে এ ঘটনার দায় স্বীকার করে বিষ্ণোই গ্যাং। তারপর সালমানের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে।

রাভিনা ট্যান্ডন
মুম্বাইয়ের রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে তিন নারীকে ধাক্কা দিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠে বলিউড অভিনেত্রী রাভিনা ট্যান্ডনের গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে শারীরিক-মানসিক লাঞ্ছনার শিকার হন রাভিনা। গত বছরের ১ জুন দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটে। পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করেছিলেন এই ‘জিদ্দি’ তারকা।

তথ্যসূত্র: বিবিসি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য ইকোনোমিক টাইমস

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র হয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা  ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ