ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারিকে ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে ছাত্রদলের হট্টগোল, ভাঙচুর
Published: 26th, January 2025 GMT
রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় সভা চলাকালীন শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারিকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে হট্টগোল করেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি জসিম উদ্দিন। পরে অবশ্য শাখা শিবির সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলামের কাছে ক্ষমা চান জসিম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সূত্রাপুর থানা পুলিশের আহ্বানে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা চলছিল। সেখানে উপস্থিত জবি শিবির সেক্রেটারি রিয়াজুলকে নানা বিষয়ে জেরা করেন ছাত্রদল নেতা জসিম। এ সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা চেয়ার ভাঙচুর করেন ও রিয়াজুলের দিকে তেড়ে যান। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রিয়াজুলকে সরিয়ে ওসির কক্ষে বসান।
রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সঙ্গে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারির একটি ছবি দেখিয়ে তারা তেড়ে আসেন। ছবিটা আমি যখন জবি আবৃত্তি সংসদের সেক্রেটারি ছিলাম তখনকার। আমি তো ছাত্রলীগের কোনো মিটিং-মিছিল, শোডাউন করিনি। কিন্তু তারা একটি ছবি দেখিয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়াই তিনজন হামলা করার জন্য আসেন। পুলিশের কারণে তারা হামলা করতে পারেনি।’ তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে স্থানীয় এক মুরব্বি ছিলেন, তাঁকেও তারা মারতে যান। আমাকে চেনার পরও এমন আচরণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। তারা জবি ছাত্রদলের সঙ্গে যোগাযোগ না করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তবে আমরা এটিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবেই নিয়েছি।’
জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি বিষয়টি বুঝতে পারিনি। আগের একটি ছবিকে কেন্দ্র করে ভুল বোঝাবুঝি হয়। এ ঘটনায় আমি দুঃখিত।’
সূত্রাপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, সভা চলাকালীন জবি শাখা ছাত্রশিবির ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীর মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। পরে ছাত্রদল সভাপতি জসিম উদ্দিন নিজের ভুল বুঝতে পেরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় বিষয়টি মীমাংসা করেছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব