কুমিল্লা আদালতের ২০ আইনজীবীর বহিষ্কার চান বৈষম্যবিরোধীরা
Published: 7th, February 2025 GMT
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে কুমিল্লা আদালতের ২০ আইনজীবীকে বহিষ্কারের দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। বৈষম্যবিরোধীরা ওই ২০ আইনজীবীর নাম ও ছবিসংবলিত ব্যানার জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে টাঙিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান (লিটন) ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঞার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই দিন বিকেলে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান ও সদস্যসচিব মুহাম্মাদ রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে টাঙানো ব্যানারে ২০ আইনজীবীর ছবি দিয়ে সেখানে লেখা হয়েছে, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আইনজীবীগণকে কোর্ট অঙ্গন থেকে বহিষ্কার করুন’।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া ব্যানারে ছবি ও নাম থাকা বাকি ১৮ আইনজীবী হলেন জেলার লাকসাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস ভূঁইয়া, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম (টুটুল), কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম (সেলিম), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুর রহমান, সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান (মিঠু), লাকসাম পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (হিরা), আইনজীবী আবদুল মমিন ফেরদৌস, আমজাদ হোসেন, মাসুদ সালাউদ্দিন, গোলাম ফারুক, আতিকুর রহমান আব্বাসী, খোরশেদ আলম, জিয়াউল হাসান চৌধুরী, মজিবুর রহমান, মাহাবুবুর রহমান, রেজাউল করিম, কামরুজ্জামান বাবুল ও জাহাঙ্গীর আলম। তাঁদের অনেকেই আওয়ামীপন্থী আইনজীবী, আবার অনেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর এই আইনজীবীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী ও হত্যাকারীদের বাঁচাতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছেন। তাই কুমিল্লা আদালতের ২০ চিহ্নিত আওয়ামী আইনজীবীর ছবিসহ ব্যানার টাঙানো হয়েছে। কুমিল্লায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কোনো ঠাঁই হবে না। যেখানে ফ্যাসিবাদ, সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা বলেন, ‘জুলাই–আগস্টের মামলায় আসামিদের আইনি সহায়তা দেওয়া যাবে না, এমন কোনো সরকারি প্রজ্ঞাপন বা নির্দেশনা আমরা পাইনি। আইনজীবীরা আইনজীবী হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান ও বার কাউন্সিলের বিধান অনুযায়ী, কোনো মামলার বাদী বা আসামিকে আইনগত সহায়তা দিতে হয়।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব র র রহম ন আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে আইনি নোটিশ
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল বা রিভিউ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে মো. ইশরাক হোসেনের নামে গেজেট প্রকাশ এবং তাকে শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান এ নোটিশ পাঠান।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার বিকেলে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে রোববার রাতেই নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে সংশোধনী গেজেট প্রকাশ করেছে।
তিনি জানান, দুই বাসিন্দার পক্ষে রোববার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু একই দিন রাতেই নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নোটিশদাতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে দ্রুততার সঙ্গে এই রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা ধারণা করেছিলাম, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ট্রাইব্যুনালের রায় চ্যালেঞ্জ করবে। কিন্তু তা করা হয়নি। বরং, আইন উপদেষ্টার মন্তব্য অনুযায়ী, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়েই সংশোধনী গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনাল এমন কোনো আদেশ দিতে পারে না যার কার্যকারিতা নেই। এখানে মেয়রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং অধ্যাদেশের মাধ্যমে মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল।
জানা যায়, ঢাকার কাকরাইলের বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. মামুনুর রশিদের পক্ষে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, যুগ্ম জেলা জজ মো. নুরুল ইসলাম ও মো. ইশরাক হোসেনের কাছে আইনি নোটিশটা পাঠানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন এবং বিএনপি নেতা মো. ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন।