‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে কুমিল্লা আদালতের ২০ আইনজীবীকে বহিষ্কারের দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। বৈষম্যবিরোধীরা ওই ২০ আইনজীবীর নাম ও ছবিসংবলিত ব্যানার জেলা আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে টাঙিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান (লিটন) ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঞার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই দিন বিকেলে কুমিল্লা আদালত প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান ও সদস্যসচিব মুহাম্মাদ রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে টাঙানো ব্যানারে ২০ আইনজীবীর ছবি দিয়ে সেখানে লেখা হয়েছে, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আইনজীবীগণকে কোর্ট অঙ্গন থেকে বহিষ্কার করুন’।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া ব্যানারে ছবি ও নাম থাকা বাকি ১৮ আইনজীবী হলেন জেলার লাকসাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুস ভূঁইয়া, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম (টুটুল), কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম (সেলিম), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুর রহমান, সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান (মিঠু), লাকসাম পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (হিরা), আইনজীবী আবদুল মমিন ফেরদৌস, আমজাদ হোসেন, মাসুদ সালাউদ্দিন, গোলাম ফারুক, আতিকুর রহমান আব্বাসী, খোরশেদ আলম, জিয়াউল হাসান চৌধুরী, মজিবুর রহমান, মাহাবুবুর রহমান, রেজাউল করিম, কামরুজ্জামান বাবুল ও জাহাঙ্গীর আলম। তাঁদের অনেকেই আওয়ামীপন্থী আইনজীবী, আবার অনেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর এই আইনজীবীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী ও হত্যাকারীদের বাঁচাতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছেন। তাই কুমিল্লা আদালতের ২০ চিহ্নিত আওয়ামী আইনজীবীর ছবিসহ ব্যানার টাঙানো হয়েছে। কুমিল্লায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কোনো ঠাঁই হবে না। যেখানে ফ্যাসিবাদ, সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা বলেন, ‘জুলাই–আগস্টের মামলায় আসামিদের আইনি সহায়তা দেওয়া যাবে না, এমন কোনো সরকারি প্রজ্ঞাপন বা নির্দেশনা আমরা পাইনি। আইনজীবীরা আইনজীবী হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান ও বার কাউন্সিলের বিধান অনুযায়ী, কোনো মামলার বাদী বা আসামিকে আইনগত সহায়তা দিতে হয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইনজ ব র র রহম ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • সুবিচার মিলবে কত বছরে
  • ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত
  • রেফারেন্স ও মতামতপ্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ, আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন