স্বৈরশাসন রোধে সংবিধান সংস্কার কমিশন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার সুপারিশ করেছে। সঙ্গে উভয়কক্ষের বিরোধ এড়াতে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা শুধু নিম্নকক্ষের (সংসদ) কাছে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। উচ্চকক্ষের নাম হবে সিনেট।

সুপারিশে বলা হয়, রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে গঠিত সিনেটে আইন প্রস্তাব করা যাবে না। ৪০০ সদস্যের সংসদে পাস হওয়া বিল অনুমোদনের জন্য যাবে সিনেটে। ১০৫ সদস্যের সিনেটে তা অনুমোদিত না হলে, সংশোধনের সুপারিশসহ সংসদে ফেরত যাবে। তবে সংসদ সুপারিশ বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে না। সংসদে বিলটি দ্বিতীয়বারের মতো পাস হলে অনুমোদনের জন্য সরাসরি যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে।
পাস হওয়া বিল অনুমোদনের জন্য দুই মাসের বেশি আটকে রাখতে পারবে না সিনেট। দুই মাস পার হলে বিলটি অনুমোদিত বলে গণ্য হবে।

গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয় অধ্যাপক আলী রীয়াজের সংবিধান সংস্কার কমিশন। গত ১৫ জানুয়ারি দিয়েছিল প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ। রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংস্কারে কী কী প্রস্তাব দিয়েছিল, তা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে রয়েছে।

বিএনপি ৬৩ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল। সারসংক্ষেপেই জানা গিয়েছিল, সংস্কার কমিশন সংবিধানের মূলনীতি বদলের সুপারিশ করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে বহুত্ববাদ প্রস্তাব করা হয়েছে। গণতন্ত্র বহাল রেখে সমাজতন্ত্র এবং জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার যুক্তের প্রস্তাব করা হয়েছে।

১৯৭৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ধর্মনিরপেক্ষতার বদলে মূলনীতি হিসেবে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ যোগ করেন। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পঞ্চদশ সংশোধনীতে তা বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা পুনর্বহাল করে। রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল, বিএনপি মূলনীতিতে বদল চায় না। তবে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিএনপি সংবিধানের ৮ অনুচ্ছেদ সংস্কারে পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্ববর্তী মূলনীতি বা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ এবং আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল চেয়েছে।

বিএনপির মতো জামায়াতে ইসলামীও দ্বিকক্ষ সংসদ চেয়েছে। তবে কীভাবে উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন, তা পরে জানাবে। বিএনপি চেয়েছে, বর্তমানে সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপিরা দলের প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে যেভাবে নির্বাচিত হন, সেভাবে ৫০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠিত হবে।

সংবিধানের ৪(ক) অনুচ্ছেদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁর প্রতিকৃতি সর্বত্র প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কমিশন এ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তের সুপারিশ করে বলেছে, এটি ব্যক্তি বন্দনাকে উৎসাহিত ও স্বৈরতন্ত্রের পথ সুগম করে। বাংলাদেশ অগণিত মানুষের নেতৃত্ব, ত্যাগ ও অবদানের ফসল। এ রক্তস্নাত মাতৃভূমিতে একক ব্যক্তিকে জাতির পিতা হিসেবে অভিহিত করার ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। অনুচ্ছেদ ১৩, ১৫, ১৭, ১৮, ১৮(ক), ১৯, ২০, ২৩, ২৪ বিলুপ্তের সুপারিশ করেছে কমিশন।

মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতা সুনিশ্চিতে ৪০ দফা সুপারিশ করেছে কমিশন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে কাটছাঁট রোধে সংবিধান সংশোধনে গণভোট বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ রয়েছে। বলা হয়েছে, সংবিধানের যে কোনো সংশোধনীর প্রস্তাব উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হলে তা গণভোটের জন্য উপস্থাপন করা হবে। গণভোটে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তথা ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেলে সংশোধনী প্রস্তাব পাস হবে। ৭৭ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নে ন্যায়পাল নিয়োগ বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সমালোচনা হলেও সংসদে রাজনৈতিক দলগুলোর ১০ শতাংশ তরুণ প্রার্থী হতে হবে– সুপারিশ করেছে কমিশন। সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনের বয়স পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনেও ২১ বছর রাখা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উভয় কক্ষের মেয়াদ হবে চার বছর। এক ব্যক্তি জীবনে দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং সংসদ নেতা হতে পারবেন না। উভয় কক্ষে ডেপুটি স্পিকারের একটি পদ বিরোধী দল পাবে।

রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের সমন্বয়ে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ৯ সদস্যের এ কাউন্সিলে থাকবেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্ন ও উচ্চকক্ষের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, বিরোধী দল মনোনীত দু’কক্ষের ডেপুটি স্পিকার, সংসদের অন্যান্য দল থেকে একজন সদস্য। আইনসভা গঠনের সাত দিনের মধ্যে এনসিসি গঠিত হবে।

বিএনপি-জামায়াতসহ মতামত দেওয়া ২৪ দলের অধিকাংশ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রস্তাব করলেও কমিশন নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের সুপারিশ করেছে। এনসিসির ৯ সদস্যের মধ্যে সাতজনের মতামতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ হবে। এনসিসি সাংবিধানিক কমিশনের নিয়োগ দেবে।

বিএনপি ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিল এবং জামায়াত এমপি কেনাবেচা ঠেকাতে আরও দুই মেয়াদে বহাল রাখার প্রস্তাব করেছে। কমিশন ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিল করে সংসদ সদস্যদের অর্থবিল বাদে যে কোনো প্রস্তাবে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। কমিশনের প্রস্তাব, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হবে বিরোধী দলের সদস্য থেকে। শুধু সংসদ সদস্য নন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচকমণ্ডলীর (ইলেক্টোরাল কলেজ) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে চার বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। আইনসভার উভয় কক্ষের সদস্যপ্রতি একটি করে ভোট; জেলা সমন্বয় কাউন্সিল সামষ্টিকভাবে একটি করে ভোট ও প্রতিটি সিটি করপোরেশন সমন্বয় কাউন্সিল সামষ্টিকভাবে একটি করে ভোট দেবে।

মন্ত্রিসভা এবং মন্ত্রিদের ব্যক্তিগতভাবে নিম্নকক্ষের কাছে দায়বদ্ধতার সুপারিশ করা হয়েছে। উচ্চ কক্ষের সদস্যরা মন্ত্রী হতে পারবেন কিনা, তা বলা হয়নি প্রতিবেদনে। জেলা পরিষদ বিলোপ করে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জেলা সমন্বয় কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচিত চার সদস্য এক বছর করে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
বিচারক নিয়োগে স্বাধীন কাউন্সিল, স্থানীয় সরকার কমিশন প্রতিষ্ঠাসহ বিদ্যমান সাংবিধানিক কমিশনগুলো সংস্কারের প্রস্তাব করেছে। প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে নয়, এনসিসির অনুমোদনে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তাব করা হয়েছে।

জরিপের ফলাফলও রয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া ৪৮ হাজার মানুষের ৭৭ ভাগই বিদ্যমান সংসদীয় আসন পদ্বতিতে নির্বাচন চেয়েছেন। ভোটের সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চেয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। উচ্চ কক্ষে সরাসরি ভোট চেয়েছেন ৫৫, সংসদের মেয়াদ ৫ বছর রাখার পক্ষে ৭৮ এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ দুই মেয়াদে সীমাবদ্ধ রাখার পক্ষে ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন। ১ হাজার ৭৯৪ জন বর্তমান সরকারের সংবিধান সংস্কারের এখতিয়ার নেই বলে মতামত দিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র স প র শ কর ছ র ষ ট রপত ন র জন য র সদস য সদস য র মন ত র সরক র ব এনপ এনস স

এছাড়াও পড়ুন:

শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে শুল্ক আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।

তিনি বলেন,“বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে স্পষ্ট বলেছে, বেশকিছু দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বা নিরাপত্তা চুক্তি আলোচনা এখনো চলমান রয়েছে, যেগুলো সম্পাদিত হলে এসব দেশের শুল্ক আরো কমতে পারে। তাই বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্রাস আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।”

শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ সভাকক্ষে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে বারে গুলিতে নিহত ৪, সন্দেহভাজন পলাতক

৩০ বছরের হিমায়িত ভ্রুণ থেকে জন্ম নিলো জীবিত শিশু

তিনি বলেন, “প্রথমেই আমি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, তারা একটি ভারসাম্যপূর্ণ শুল্ক কাঠামো ঘোষণা করেছে। যেটি বিগত প্রায় ৪ মাস যাবৎ আমাদের আমাদের উদ্বেগের কারণ ছিল। বাংলাদেশ থেকে অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ পুননির্ধারণ করা হয়েছে। যা আমাদের প্রধান পোশাক রপ্তানিকারী প্রতিযোগীদের তুলনায় সমান বা কাছাকাছি এবং কিছু প্রধান প্রতিযোগী যেমন চীন (৩০ শতাংশ) ও ভারতের (২৫ শতাংশ) তুলনায় কম।”

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞতার সাথে বলতে চাই আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বিশেষ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও তাদের টিম এই কঠিন আলোচনার সময় যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। তাদের প্রচেষ্টাতেই বাংলাদেশ একটি বিপর্যয় এড়াতে পেরেছে।”

মাহমুদ হাসান খান বলেন, “এই ফলাফল একদিনে আসেনি, যাত্রাটি ছিল অনেক চ্যালেঞ্জের।২ এপ্রিল যখন যুক্তরাষ্ট্র ‘লিবারেশন ডে ট্যারিফ’ নামে নতুন শুল্ক ঘোষণা করল, তখন বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ ধার্য করা হয়। তখন ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ ও পাকিস্তানের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলো। এটা আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়। কারণ এত বড় শুল্ক ব্যবধানে বাজার ধরে রাখা সম্ভব নয়। আমাদের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ২০ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, আর দেশটিতে আমাদের মোট রপ্তানির ৮৭ শতাংশ হয় তৈরি পোশাক পণ্য।”

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “গোপনীয়তা রক্ষা চুক্তির কারণে বেসরকারি খাত এই আলোচনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল না। তাই রপ্তানিকারক ও ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছিল, ‘কী হতে যাচ্ছে?’ আমরা সত্যিই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। যখন দেখলাম ২ জুলাই ভিয়েতনামের ওপর শুল্ক ৪৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হলো। আর প্রায় তিন মাস নেগোশিয়েশনের পর ৭ জুলাই আমাদের ওপর শুল্ক মাত্র ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হলো, তবে পুনরায় আলোচনার জন্য ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় পাওয়া যায়। এরই মধ্যে পরবর্তী ২ সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনও ১৯ শতাংশ হারে সমঝোতায় পৌঁছায়।”

তিনি বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আলোচনায় সম্পৃক্ত হতে। সব রকম তথ্য-বিশ্লেষণ দিয়ে সরকারকে সহায়তা করতে। আমরা চেষ্টা করেছি যেন বিষয়টিকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া আমরা বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সবার সাথে যোগাযোগ করেছি। এমনকি আমরা ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গেও বৈঠক করেছি।”

মাহমুদ হাসান খান বলেন, “বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক অবধারিতভাবে আমাদের পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়াবে। যেখানে শিল্পগুলো আগে থেকেই ঊর্ধ্বমুখী উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রাণান্তকরভাবে যুদ্ধ করছে। এক্ষেত্রে সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলো যাতে করে ব্যবসা থেকে ছিটকে না পড়ে, তা সরকারকে নজরদারিতে রাখতে হবে। আমরা একান্তভাবে আশা করি, শিল্প ও দেশের স্বার্থে সরকারের সকল নীতি সহায়তা চলমান থাকবে।” 
“এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, বিশেষ করে কাস্টমস সংক্রান্ত নীতিগুলো শিল্পবান্ধব হবে, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং শিল্প নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ পাবে।”

তিনি বলেন, “মার্কিন রপ্তানির প্রায় ৭৫ শতাংশ হচ্ছে আমাদের তুলাভিত্তিক পোশাক। শুল্ক সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে বলা আছে, যদি নূন্যতম ২০ শতাংশ আমেরিকার কাঁচামাল (যেমন আমেরিকার তুলা) ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমেরিকার কাঁচামালের মূল্যের ওপর এই অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ আমেরিকার কাঁচামাল ব্যবহার করলে আমরা বাড়তি কিছু শুল্ক ছাড় পাব।”

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ