রুটের সেঞ্চুরি, বুমরাহর ফাইফারের পর ভারতের লড়াই
Published: 12th, July 2025 GMT
৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করা রীতিমত ‘যন্ত্রণার’। লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিন এমন কিছুরই সাক্ষী হতে হয়েছিল জো রুটকে। তবে মনোযোগ হারাননি বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।
শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে ফিরেই তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৩৭তম টেস্ট সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে তুলেছে ৩৮৭ রান। রুটের সেঞ্চুরির দিনে ৫ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। একাদশে ফিরেই বাজিমাত করেছেন ডানহাতি পেসার। যা তার ক্যারিয়ারের ১৫তম টেস্ট ফাইফার।
ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বেশ ভালোই লড়তে হয়েছে ভারতকে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে তাদের স্কোর ৩ উইকেটে ১৪৫। ফিফটি ছোঁয়া রাহুলের (৫৩) সঙ্গে অপরাজিত আছেন রিশভ পান্ত (১৯) । এখনো তারা ২৪২ রানে পিছিয়ে।
রুট ১৯৯ বলে ১০৪ রান করেন ১০ চারে। বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে তাকে সাজঘরে ফিরতে হয়। ৬ রানের জন্য ফিফটি ছোঁয়া হয়নি বেন স্টোকসের। ১১০ বলে ৪৪ রান করে বুমরাহর বলে স্টোকসও বোল্ড হন। এছাড়া উইকেট রক্ষক ব্যটাসম্যান জেমি স্মিথ ৫১ ও ব্রাইডন কার্স স্কোরবোর্ডে ৫৬ রান যোগ করেন।
বুমরাহ ৭৪ রানে পেয়েছেন ৫ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন সিরাজ, নীতিশ কুমার। ১ উইকেট নেন জাদেজা।
জবাব দিতে নেমে ভারত শুরুতেই উইকেট হারায় টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা আর্চারের বলে। দ্বিতীয় স্লিপে ইয়াসভি জয়সওয়াল ক্যাচ দেন ১৩ রানে। এরপর রাহুল করুণ নায়ারকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যান। ২০.
সেখান থেকে গিল ও রাহুলের লড়াই শুরু হয়। কিন্তু আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান ও সেঞ্চুরিয়ান এবার ১৬ রানে থেমে যান। ক্রিস ওয়কসের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। এরপর ভারত আর কোনো উইকেট হারায়নি। রাহুল ফিফটি ছুঁয়ে অভিজ্ঞতার ডালা মেলে ধরেছেন। পান্তও আছেন ভালো অবস্থায়।
তৃতীয় দিনের লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারে ম্যাচের ভাগ্য।
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।