জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ডাকঘর ভবনটি ১৯৮৫ সালে নির্মিত। এরপর থেকে কয়েকবার ভবনের ভেতরে ও বাইরে রং করা হয়েছে। তবে, গত ৪০ বছর সংস্কার করা হয়নি একবারও। ভবনের ছাদের অবস্থা এতটাই খারপা যে, প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকছে।

জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে অনেকটা নিচু জায়গায় অবস্থান হওয়ায় বৃষ্টি হলেই ভবনের চারপাশে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে সেখানে দাপ্তরিক কার্যক্রম চলাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

কালাই উপজেলা ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার সুনীল চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, “১৯৮৫ সালে নির্মাণের পর থেকে ডাকঘরের ভবনটি সংস্কার হয়নি একবারও। ভবনের অবস্থা একদমই ভালো নয়। পলেস্তারা খসে পড়েছে, আবার দেয়ালে ফাটল ধরেছে। আমরা ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।”

কালাই ডাকঘরে সেবা নিতে আসা উপজেলার হাতিয়র গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, “সঞ্চয়ের টাকা জমা দিতে মাসে অন্তত একবার পোস্ট অফিসে যাই। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও পোস্ট অফিসের ভেতরের অবস্থা করুণ।”

তিনি বলেন, “ভবনটির ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ে রড বের হয়েছে। যদি পলেস্তারা খুলে মাথায় পড়ে এমন আতঙ্কে দ্রুত কাজ শেষ করে চলে আসি।”

ডাকঘর সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে কালাই ডাকঘরের ভবনটি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ এই সময়ে কয়েকবার ভবনের ভেতর-বাইরে রং করা হলেও একবারও সংস্কার করা হয়নি। ফলে বাইরে থেকে একটু ভালো দেখালেও ভেতরের অবস্থা জরাজীর্ণ। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে ডাকঘরের সামনে পানি জমে আছে। ভবনের ছাদ ও দেয়াল চুইয়ে ভেতরে পানি পড়ছে। ছাদ ও বিমের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। মেঝোসহ পুরো ভবনটি স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় রয়েছে।

ডাকঘরে আসা কালাই পৌর শহরের আঁওড়া মহল্লার বাসিন্দা আবদুস সোবহান বলেন, “পোস্ট অফিসে আমার একটা অ্যাকাউন্ট আছে। প্রতি মাসে টাকা জমা দিতে আসতে হয়। পোস্ট অফিসের ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে পোস্ট অফিসের অবস্থা বেহাল। অফিসের ভেতরে ঢুকতে ভয় লাগে।”

জয়পুরহাট জেলা ডাক বিভাগের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, “কালাই ডাকঘরের বেহাল দশার কথা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছি।”

ঢাকা/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প স ট অফ স পল স ত র র অবস থ ড কঘর র অফ স র র ভ তর একব র র ভবন ভবন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে। বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি। বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে ভবনটির একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত। ইউনিয়নটির একদিকে মুন্সিগঞ্জ ও আরেক দিকে চাঁদপুর জেলা। ওই এলাকাটির চার দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাথাভাঙা চরবানিয়াল গ্রামে ৪০০ পরিবারের বসবাস। ওই গ্রামের বাসিন্দারা নদীতে মাছ শিকার ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ কম। এ ছাড়া গ্রামটিতে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ২০১৭ সালে ওই গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। পরের বছর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়। একতলা একটি পাকা ভবনের চারটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। সোমবার বিকেলে বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে।

আরও পড়ুনযেকোনো সময় পদ্মায় বিলীন হতে পারে শরীয়তপুরের বিদ্যালয়টি১৯ ঘণ্টা আগে

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ বছরের জুন মাসে সেই বালুর বস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবনটি রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের কবল থেকে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের মুখে পড়লে ৪ সেপ্টেম্বরের থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার বিদ্যালয়ের আসবাব ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে উত্তর মাথঅভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে
  • তিন ভবনেই ১৫টি, রাজনৈতিক দলের কার্যালয় কেন পল্টনকেন্দ্রিক