৪০ বছরে একবারও সংস্কার হয়নি কালাই উপজেলা ডাকঘর
Published: 2nd, August 2025 GMT
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ডাকঘর ভবনটি ১৯৮৫ সালে নির্মিত। এরপর থেকে কয়েকবার ভবনের ভেতরে ও বাইরে রং করা হয়েছে। তবে, গত ৪০ বছর সংস্কার করা হয়নি একবারও। ভবনের ছাদের অবস্থা এতটাই খারপা যে, প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকছে।
জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে অনেকটা নিচু জায়গায় অবস্থান হওয়ায় বৃষ্টি হলেই ভবনের চারপাশে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে সেখানে দাপ্তরিক কার্যক্রম চলাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কালাই উপজেলা ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার সুনীল চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, “১৯৮৫ সালে নির্মাণের পর থেকে ডাকঘরের ভবনটি সংস্কার হয়নি একবারও। ভবনের অবস্থা একদমই ভালো নয়। পলেস্তারা খসে পড়েছে, আবার দেয়ালে ফাটল ধরেছে। আমরা ঝুঁকি নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।”
কালাই ডাকঘরে সেবা নিতে আসা উপজেলার হাতিয়র গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, “সঞ্চয়ের টাকা জমা দিতে মাসে অন্তত একবার পোস্ট অফিসে যাই। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও পোস্ট অফিসের ভেতরের অবস্থা করুণ।”
তিনি বলেন, “ভবনটির ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ে রড বের হয়েছে। যদি পলেস্তারা খুলে মাথায় পড়ে এমন আতঙ্কে দ্রুত কাজ শেষ করে চলে আসি।”
ডাকঘর সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে কালাই ডাকঘরের ভবনটি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ এই সময়ে কয়েকবার ভবনের ভেতর-বাইরে রং করা হলেও একবারও সংস্কার করা হয়নি। ফলে বাইরে থেকে একটু ভালো দেখালেও ভেতরের অবস্থা জরাজীর্ণ। অনেক স্থানে দেয়ালে ফাটল ধরেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে ডাকঘরের সামনে পানি জমে আছে। ভবনের ছাদ ও দেয়াল চুইয়ে ভেতরে পানি পড়ছে। ছাদ ও বিমের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। মেঝোসহ পুরো ভবনটি স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় রয়েছে।
ডাকঘরে আসা কালাই পৌর শহরের আঁওড়া মহল্লার বাসিন্দা আবদুস সোবহান বলেন, “পোস্ট অফিসে আমার একটা অ্যাকাউন্ট আছে। প্রতি মাসে টাকা জমা দিতে আসতে হয়। পোস্ট অফিসের ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে পোস্ট অফিসের অবস্থা বেহাল। অফিসের ভেতরে ঢুকতে ভয় লাগে।”
জয়পুরহাট জেলা ডাক বিভাগের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, “কালাই ডাকঘরের বেহাল দশার কথা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করছি।”
ঢাকা/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প স ট অফ স পল স ত র র অবস থ ড কঘর র অফ স র র ভ তর একব র র ভবন ভবন র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’