গোপন বন্দিশালায় খুপরি ঘর, নির্যাতনে ব্যবহার করা চেয়ার
Published: 12th, February 2025 GMT
ঢাকায় তিনটি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি দেখেছেন, কীভাবে সেখানে মানুষকে বন্দী করে রাখা হতো, করা হতো নির্যাতন। তাঁর সঙ্গে যাওয়া এসব বন্দিশালায় আটক কয়েকজন ভুক্তভোগীর বন্দিজীবনের কষ্টের কথাও শুনেছেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, এসব বন্দিশালায় রয়েছে খুপরি ঘর, যেখানে আলো-বাতাস পৌঁছাতে পারে না বললেই চলে। রয়েছে নির্যাতনের জন্য ব্যবহৃত চেয়ার। বন্দী থাকা মানুষেরা দেয়ালে যা লিখেছিলেন, তা-ও রয়েছে।
পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক ইউনূস গোপন বন্দিশালাকে বীভৎসতা ও নৃশংসতার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়া বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়া প্রতিষ্ঠা করে গেছে। এটা (গোপন বন্দিশালা) তার একটি নমুনা।’
ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গোপন বন্দিশালায় বিনা বিচারে মানুষকে আটকে রাখা হতো। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকে বন্দিশালা থেকে মুক্তি পান। গুমের ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৭ আগস্ট গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করে। সেই কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে কমিশনে ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়ে। তার মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছে কমিশন। এতে দেখা গেছে, ৭৩ শতাংশ ভুক্তভোগী ফিরে এসেছেন। বাকি ২৭ শতাংশ (অন্তত ২০৪ জন ব্যক্তি) নিখোঁজ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আটটির বেশি গোপন বন্দিশালা শনাক্ত করেছে কমিশন। তাদের ভাষ্য, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), র্যাব ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের মতো সংস্থাগুলো এসব গোপন বন্দিশালা পরিচালনা করত।
গোপন বন্দিশালায় থাকা নির্যাতনে ব্যবহৃত চেয়ার দেখছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন দ শ ল য় সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা সেতুতে ঈদের ছুটির শেষ ৪৮ ঘণ্টায় ৭ কোটি টাকার টোল আদায়
ঈদের ছুটি শেষে গত দুই দিনে সড়কে কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ বেড়ে যায় বহুগুণ। বেড়ে যায় যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন পারাপারও। বেড়েছে টোল আদায়ও। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় ১ লাখ ৭৭৭টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৬ কোটি ৯১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫০ টাকা।
যমুনা সেতু টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৫৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ২৫০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৮ হাজার ২৬৬টি যানবাহন রয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ২০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী ৩৩ হাজার ৩২৯টি যানবাহন পার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৪ হাজার ৫০ টাকা।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের দিকে ১৮ হাজার ৩৬৫টি যানবাহন পার হয়। এতে টোল আদায় হয় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী যানবাহন ছিল ৩০ হাজার ৮১৭টি। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০ টাকা।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির জানান, স্বাভাবিক সময়ে ১৮ থেকে ২০ হাজার যানবাহন প্রতিদিন পারাপার হয়। এবার ঈদের ছুটির শুরুতে এবং শেষে যানবাহন পারাপার কয়েক গুণ বেড়ে যায়।