পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার একটি মাদ্রাসার চারতলা ভবন নির্মাণের ছয় মাস যেতে না যেতেই পলেস্তারা খসে পড়ছে। উপজেলার মধ্য বগুড়া নূরিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভবনটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবুল কালাম আজাদ। ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই ভবনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চারপাশের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। সিমেন্টের পরিমাণ কম ও নিম্নমানের বালু ব্যবহার করার অভিযোগ করেন স্থানীয় লোকজন। নির্মাণকাজের সময় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদার তাঁদের কথায় কর্ণপাত করেননি।

মধ্য বগুড়া নূরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো.

মিজানুর রহমান বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ভবনটিতে পাঠদান শুরু হয়। এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। যেভাবে পলেস্তারা খসে পড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে ভবনটি ২০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। বিষয়টি তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. আজমের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত। এ কারণে ঠিকাদারের ২৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারকে ভবনটির পলেস্তারার কাজ আবার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পল স ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মাইলস্টোনে বিমানবাহিনীর চিকিৎসা ক্যাম্প, সেবা নিতে আসছেন অনেকে

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। এই ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ নিচ্ছেন অনেকে। তাদের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আত্মীয়-স্বজন।

বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অস্থায়ী এই চিকিৎসা ক্যাম্প আজ সোমবার শুরু হয়েছে। চলবে এক সপ্তাহ। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এখান থেকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রবেশমুখে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্পের সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। লোকজন ভেতরে যাচ্ছেন। কেউ এসেছেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে, কেউবা যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের জায়গাটি দেখতে এসেছেন।

ক্যাম্পাসের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবনে চলছে চিকিৎসা ক্যাম্পের কার্যক্রম। ভবনটির বারান্দায় মানুষের ভিড়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের নাম বারান্দায় বসে নিবন্ধন করছেন বিমানবাহিনীর একজন সদস্য। নিবন্ধন শেষে লোকজন বারান্দায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। ভবনটির কয়েকটি কক্ষে বিমানবাহিনীর চিকিৎসকেরা সেবা নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন।

আরও পড়ুনস্কুলে বিমান দুর্ঘটনা থেকে যে শিক্ষা নেওয়া দরকার২৭ জুলাই ২০২৫

নাম নিবন্ধন করে ১০৮ নম্বর কক্ষের সামনে অপেক্ষা করছিলেন মাইলস্টোন স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহমেদ আল ফাতাহ। সে জানায়, যে ভবনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়, সেটির দোতলায় ছিল তার শ্রেণিকক্ষ। স্কুল ছুটি হওয়ায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের কয়েক মিনিট আগে সে শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে ক্যানটিনে চলে গিয়েছিল। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বন্ধু শামীমকে হারিয়েছে সে।

নানার সঙ্গে বিদ্যালয়ে আসা এই শিক্ষার্থী বলে, ‘রাতে ঘুমানোর সময় ভয় পাই। দুঃস্বপ্ন দেখি। বন্ধু শামীমকে স্বপ্নে দেখি।’

অভিভাবকের সঙ্গে চিকিৎসাসেবা নিতে এসেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুহান হোসেন। শিশুটির কানে ব্যথা। তার কান ফুলে আছে। হাত ও মুখে পোড়া দাগ।

ক্যাম্পে চিকিৎসকেরা নুহানকে দেখে কিছু পরামর্শ ও ওষুধপত্র দিয়েছেন। প্রয়োজনে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হবে বলে জানান তাঁরা।

আরও পড়ুনউত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ আরেক শিশুর মৃত্যু৪ ঘণ্টা আগে

চিকিৎসা ক্যাম্পে সেবা দিচ্ছেন বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার চিকিৎসক শিহাব আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাইলস্টোনের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ঘটনার দিন উপস্থিত ছিলেন, তাদের অনেকেই আসছেন। ঘটনার পর থেকে রাতে ঘুম হচ্ছে না—এমন লোকজন আসছেন। আগুনে সামান্য দগ্ধ হওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী এসেছে। অনেকে ড্রেসিং করাচ্ছেন, অনেকে ওষুধ নিচ্ছেন। এ ছাড়া যাদের অনেক বেশি মানসিক সমস্যা পাওয়া যাবে, তাদের সিএমএইচে পাঠানো হবে। তবে এ পর্যন্ত কাউকে পাঠানো হয়নি।

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের জায়গা দেখতে ভিড় করেছেন অনেকে। রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে। ২৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামের রেলওয়ের ‘হাতির বাংলো’ নিয়ে কেন এত মাতামাতি
  • মাইলস্টোনে বিমানবাহিনীর চিকিৎসা ক্যাম্প, সেবা নিতে আসছেন অনেকে