ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম (দোলন মুন্সি) ভাইয়ের ক্ষমতাবলে প্যানেল চেয়ারম্যান হয়েছেন। বিএনপি নেতাকর্মীর একটি অংশের প্রতিবাদ ও তোপের মুখে তাঁর দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠান ভেস্তে যায়। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম। ব্যাপক ভোগান্তি পোহাচ্ছে ইউনিয়নের ৩০ হাজার নাগরিক। 

গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান আব্দুল গফফার খান জনরোষের ভয়ে আত্মগোপনে চলে গেলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ শহিদুল ইসলাম কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশাসক হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। পরে জেলা প্রশাসক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.

আবু সালেহ মো. ইফাত ইশতিয়াককে সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব দেন। এরমধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা জাহিদুল ১১ জন ইউপি সদস্যের রেজুলেশনের ক্ষমতাবলে দায়িত্বভার বুঝে পেতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। সুরাহা না হওয়ায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। উচ্চ আদালত ইউপি সদস্য জাহিদুলকে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। 

গত ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক তাঁকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করে চিঠি দেন। তিনি গত সোমবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিতে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে সচিবের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে দাওয়াতপত্র দেন। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীর একটি অংশের প্রতিবাদ ও তোপের মুখে অনুষ্ঠান ভেস্তে যায়। 

স্থানীয়রা জানান, ইউপি সদস্য জাহিদুলের ভাই জহিরুল ইসলাম সুমন মুন্সি হাইকোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তাঁর ক্ষমতাবলে যুবলীগ নেতা জাহিদুল প্যানেল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে সরিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যানের পদে আসেন। 

ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের খান ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মুজ্জাম্মেল আরিন্দা জানান, জাহিদুল আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি আমির হোসেন আমুর কাছের লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁকে কেউ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে চায় না। 

সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ মাস্টার জানান, হাইকোর্টের রায়কে সম্মান দেখিয়ে জাহিদুলকে বাধা দিচ্ছি না। তিনি যুবলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন এটি সবাই জানে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বল গ ন ত ল ইসল ম য বল গ ব এনপ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ