জমি বেচাকেনার ব্যবসা করেন বাদশা মিয়া। বাসা শহরের মাসদাইর লিচুবাগে। ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই দিনে কয়েক দফা নারায়ণগঞ্জ শহরে যাতায়াত করতে হয় তাঁকে। এ সময় প্রতিটি দফায় শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে এক-দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। গতকাল রোববার তিনি সারাদিনে ছয়বার আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু তেমন যানজটে পড়তে হয়নি। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, রমজানে শহরের যানজট নিরসনে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। তাদের আর্থিক সহায়তায় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সম্মানীর বিনিময়ে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর সুফলও মিলেছে হাতেনাতেই।
রোববার বিকেলে চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় কথা হয় বাদশা মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, ‘গত কয়েক দিন শহরে এত যানজট ছিল, চাষাঢ়ার দিকে গেলে নিতাইগঞ্জ বা শহরের দক্ষিণ দিকে যাওয়ার কথা ভাবতেও কষ্ট হতো। কিন্তু আজ রোজার প্রথম দিন হলেও যানজট ছিল বেশ কম। ব্যক্তিগত কাজে শহরের দুই প্রান্তে সারাদিনে ছয়বার আসতে ও যেতে হয়েছে। কিন্তু কোথাও যানজটে বসে থাকতে হয়নি। একবার শুধু ২ নম্বর রেলগেটে ট্রেনের সিগন্যালে পড়েছি। এ ছাড়া শহরে আজ যানজট ছিল না।’
তাঁর বক্তব্যের সত্যতা মেলে শহরের মাসদাইর এলাকার বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম মুন্নার কথায়। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। মাজহারুল ইসলাম বলেন, জামতলা থেকে চাষাঢ়া যেতে প্রতিদিন যানজটে পড়া স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজ তেমন যানজট ছিল না। বেশ শৃঙ্খলা ছিল সড়কে।
নগরীর বাবুরাইলের বাসিন্দা তানিয়া তান্নি ও পাইকপাড়ার বাসিন্দা ব্যাংকার রোকন উদ্দিন আরমানের সঙ্গে কথা হয় সমকালের। তারা বলেন, যানজট নিরসনে প্রশাসন ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়েছে বলে শুনেছেন। রাস্তার মোড়ে মোড়ে রোববার নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের লোগো দেওয়া হলুদ জ্যাকেট পরা কর্মীদের দেখেছেন। তারা যানজট নিরসনে কাজ করছেন। যে কারণে আজ ভোগান্তি অনেক কম ছিল।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি (অর্থ) ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সোহেল সারোয়ার বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরে এই মুহূর্তে বড় সমস্যা দুটি– যানজট আর নিরাপত্তাহীনতা। রোজায় যানজট আরও তীব্র হয়। এ সমস্যা সমাধানে বিকেএমইএ ২০ লাখ ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার ৫ লাখ টাকা দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তা করছে। এই টাকায় ১৩০ জন সাধারণ কর্মী, ৪০ জন ছাত্র ও ১০ জন তদারকিকে সম্মানী দেওয়া হবে। তারা
নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট নিয়ন্ত্রণের
কাজ করছেন।
রোজার প্রথম দিনে যানজটমুক্ত শহর উপহার দেওয়ায় প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের ধন্যবাদ জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ বি সিদ্দিক বলেন, রোজার প্রথম দিনে এমনিতেই যান চলাচল কম থাকে। মানুষ প্রথম ইফতার বাসায় করতে চান। সে কারণেও শহর সন্ধ্যায় ফাঁকা হয়ে যায়। ১০ রোজার পর থেকে যানজট বাড়তে থাকে। মানুষ রাস্তায় নামতে থাকেন। ফুটপাত, রাস্তা দখল করে অবৈধ দোকানপাট বসানো বেড়ে যায়। রোজার শেষ দিন পর্যন্ত প্রশাসন তৎপর থাকবে বলে তিনি আশা করছেন।
রোজার শেষ দিন পর্যন্ত এই কর্মসূচির পাশাপাশি প্রশাসনের অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিলুফা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ‘দ্বিগু বাবুর বাজারের মাঝ দিয়ে যাওয়া মীর জুমলা রোড কয়েক দিন ধরেই আমরা খোলা রাখতে পেরেছি। নগরীতে অটোরিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ফুটপাতের দোকানপাটও নিয়ন্ত্রিত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, পুলিশের সহায়তায় রোববার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। বাজার তদারকিও চলছে।’ তবে রোজার শেষ দিন পর্যন্ত যানজটমুক্ত নারায়ণগঞ্জ পেতে নগরবাসীকে আন্তরিক সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য নজট ন র য়ণগঞ জ চ ম ব র য নজট ছ ল ব যবস য় য নজট ন প রথম শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
শিপন ও শাওনের মায়ের মৃত্যু এনইউজের দোয়া
নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য শিপন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আহসান সাদিক শাওনের মমতাময়ী মা মৌলুদা খান মজলিস এর মৃত্যুতে নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন (এনইউজে) কার্যালয়ে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে কোরান খতম এবং বাদ মাগরিব দোয়া মাহফিল ও শোকসভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, সাবেক সভাপতি ও দৈনিক খবরের পাতা সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম, ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফউদ্দিন সবুজ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মাকসদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির নির্বাহী কমিটির সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের ট্রেজারার আনিসুর রহমান জুয়েল, সময় টিভির নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি শওকত এ সৈকত, প্রথম আলোর নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মুজিবুল হক পলাশ, প্রনব রায়, পাপ্পু ভট্রাচার্য, হাবিবুর রহমান শ্যামল, শাহাদাৎ হোসেন স্বপন, প্রবীন সাংবাদিক ইউসুফ আলী এটম, নাহিদ আজাদ, স্বপন চৌধুরী, তানভীর হোসেন, কামাল হোসেন, ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুর রহিম ও সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুম প্রমুখ।
পরে দোয়া ও মাহফিল পরিচালনা করেন মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম।