গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে, তবে যানজট নেই
Published: 27th, March 2025 GMT
পবিত্র ঈদ এলেই পাওয়া যায় লম্বা ছুটি। এবারের ছুটিতে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে মানুষ যাচ্ছেন গ্রামের বাড়িতে। গাজীপুরে দুই মহাসড়কে আজ বৃহস্পতিবার সকালে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। তবে ঢাকা–টাঙ্গাইল ও ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে; যানজটের সৃষ্টি হয়নি।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে যাত্রীর বাড়তি চাপ নেই। ফলে স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন দেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের লোকজন। তবে কোনো কোনো দূরপাল্লার পরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় ও দেরি করে বাস ছাড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড়। আজ সকালে এই এলাকায় যানবাহন ও ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। সেখানে সার্ভিস লেনে যাত্রী ওঠানামা করানোর জন্য কিছুটা জটলা থাকলেও মূল সড়কে কোনো যানজট নেই। অনেকটা স্বস্তি নিয়ে মানুষ চলাচল করছেন।
এ ছাড়া সকাল থেকে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়েও লোকজন বাড়ি ফিরছেন। এ দুই মহাসড়কের সবচেমে ব্যস্ততম এলাকা চান্দনা চৌরাস্তা ও চন্দ্রা স্টেশনে যাত্রী ও পরিবহনগুলো ভিড় করছে। গাজীপুরের বেশ কিছু কারখানাগুলো আজ ছুটি দেওয়া হয়েছে। যানজট এড়ানোর জন্য ঘরমুখী যাত্রীরা আগেভাগেই বাড়ি ফিরছেন। যাত্রীদের অনেকেই বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন।
স্টার্লিং কারখানার শ্রমিক আলিমুজ্জামান বলেন, তাঁদের কারখানা শুক্রবার ছুটি হওয়ার কথা। তবে তিনি যানজটের কথা চিন্তা করে আজ সকালেই স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন।
নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন বলেন, মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কখনো কখনো জটলার সৃষ্টি হলেও তাতে খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে না। যানজট নিরসনে পুলিশের ৩০০ এবং জেলা পুলিশের ৩০০ সদস্য তিন পালায় দায়িত্ব পালন করছেন।
অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) অশোক কুমার পাল বলেন, ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুর অংশে কোথাও যানজট নেই। যানজট রোধে মহানগর পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে যাত্রীর বাড়তি চাপ নেই। ফলে নারায়ণগঞ্জ থেকে স্বস্তির সঙ্গেই বাড়ি ফিরছেন দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের যাত্রীরা। তবে কোনো কোনো দূরপাল্লার পরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় ও দেরি করে বাস ছাড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সকাল আটটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল মোড়, কাঁচপুর ও ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের তারাবো এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, যাত্রীর বাড়তি চাপ নেই। স্বস্তির সঙ্গেই বাড়ি ফিরছেন দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের যাত্রীরা। তবে এ সময় সড়কে গাড়ি বিকল হয়ে কাঁচপুর সেতু এলাকায় কিছু সময়ের জন্য যানজট তৈরি হয়েছিল।
সকালে সাইনবোর্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায় যাত্রীর জন্য হাঁকডাক করছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। কোনো যাত্রীর দেখা পেলেই একসঙ্গে একাধিক শ্রমিক যাত্রীদের ঘিরে ধরছেন। যাত্রীর গন্তব্যস্থল জানতে চাইছেন। তারপর ভালো আসন (সিট) দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে যাত্রীদের নিজেদের পরিবহন কাউন্টারের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় কাউন্টারগুলোর কাছে সোহাগ, হানিফ, তিশা, নীলাচল, আল বারাকা, যাতায়াতসহ বেশ কিছু পরিবহনের বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সেখানেই কথা হয় কুমিল্লার মুরাদনগরের যাত্রী মিহির ঘোষের সঙ্গে। ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় নিরপত্তারক্ষীর কাজ করেন মিহির। আগেভাগেই ঈদের ছুটি পেয়েছেন। ঈদের দিন সকালে আবার কাজে যোগ দেবেন তিনি। তখন বাড়ি যাবেন তাঁর অন্য সহকর্মীরা।
মিহির ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, তিশা পরিবহনে ২৭০ টাকায় টিকিট কেটেছেন। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে যা ২০ টাকা বেশি। প্রায় আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাসের দেখা পাননি। তবে ঈদের সময় হিসেবে বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন মিহির।
এ সময় নীলাচল, আল বারাকাসহ সাইনবোর্ডর অন্যান্য পরিবহন কাউন্টারগুলোতেও ২০ থেকে ৫০ টাকা বাড়তি ভাড়া ও ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি করে বাস ছাড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে নীলাচল ও আল বারাকা পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি ঈদেই পরিবহন মালিকেরা সামান্য বাড়তি ভাড়া আদায় করেন। এটা অনেকটা ঈদ বোনাসের মতো। আজ সকালে যাত্রীর তেমন চাপ ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুপুরের পর অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হবে। তখন যাত্রীর বড় চাপ পড়তে পারে।
বাসের অপেক্ষায় কাউন্টারে বসে আছেন যাত্রীরা। আজ সকালে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ য নজট ন পর বহন এল ক য় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় গভীর রাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল, আটক ৫
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ফতুল্লার রঘুনাথপুর এলাকার ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে ছাত্রলীগ ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী মশাল হাতে নিয়ে একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দ্রুত জেলা যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং মিছিলটি প্রতিহত করেন।
পরে যুবদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে ফাহিম আহম্মেদ (২৩), নিরব হোসেন (১৮), ফয়সাল (২০), অনিক আহমেদ অনিন (২১) এবং আবিরসহ (১৫) মোট পাঁচজন কর্মীকে আটক করে পুলিশের কাছে দেয়।
খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশের টহল দলের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দন চন্দ্র সরকার দ্রুত ঘটনাস্থলে যান এবং আটকদের হেফাজতে নেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যানার, কয়েকটি মশাল, লাঠি এবং একটি পিকআপভ্যানও জব্দ করে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান জানান, মিছিল করার সময় ছাত্রলীগের ৫ জনকে আটকের পর তাদের থানায় আনা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বর্তমানে মামলার প্রস্তুতি চলছে।