বন্দরে বড় বোনকে কুপিয়ে জখম, ছোট ভাই গ্রেপ্তার
Published: 7th, April 2025 GMT
বন্দরে বড় বোনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ছাট ভাই মোকশেদ আলম (৪০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত মোকশেদ আলম বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার মৃত হাজী আমির হোসেনের ছেলে।
এ ব্যাপারে বড় ভাইয়ের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে রোববার (৬ এপ্রিল) রাতে হামলাকারি দেবর মোকশেদ আলম তার ছেলে মোস্তাকিম, ঝাঁ সুধী আলমসহ আরো ৫/৭ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি।
গ্রেপ্তারকৃতকে ওই মামলায় সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে গত রোববার (৬ এপ্রিল) রাতে বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার মৃত হাজী আমির হোসেন মিয়ার বড় ছেলে খোরশেদ আলম এর সাথে তারেই ছোট ভাই মোকশেদ আলম ও তার পরিবারের সাথে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল।
এর ধারাবাহিকতা গত ২ জানুয়ারী দুপুর ১২টায় বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা হক সাহেবের গলি দিয়ে বাদিনীর ননদ মোসাঃ আলেয়া বেগম (৪৯) তার বাসায় যাওয়ার পথে অভিযুক্তরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আলেয়া বেগমকে পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ কৎিরতে থাকে।
ওই সময় আলেয়া বেগম বিবাদী মোকশেদ আলমসহ তার পরিবারকে গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আলেয়া বেগমকে এলোপাথারী কিল ঘুষি ও লাথি মারিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে।
একপর্যায়ে বিবাদী মোকশেদ আলম তার হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে মোসাঃ আলেয়া বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবর কোপ দিলে মোসাঃ আলেয়া বেগম বাম হাত দিয়া প্রতিহত করলে তার হাত রক্তাক্ত জখম হয়।
এ সময় তার ডাক চিৎকারে তার আরেক ননদ মৌসুমি (৩০) এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা ধারালো দা, লাঠি, লোহার রড নিয়ে ধাওয়া করে বাদিনীর বাড়িতে ঢুকে এলোপাথারী মারধর করে করে। পরে তারা ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে অনুমান লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে পালিয়ে যায়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বছরে ৬ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম
দেশে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৬ লাখ অপরিণত (প্রিম্যাচিওর) শিশু। জন্মের সময় গর্ভকাল পূর্ণ না হওয়ায় এসব নবজাতকের ঝুঁকি থাকে নানা জটিলতায় পড়ার, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে বেশি। তাই নবজাতকদের মৃত্যু হ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান। তিনি বলেন, মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের মাধ্যমে দেশের পাচঁটি হাসপাতাল মা ও নবজাতক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা পেয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টার কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করে নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।
বিএমইউর নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশে বছরে ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বছরে অপরিণত ৬ লাখ শিশু জন্মায়। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বিএমইউর ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসসুম বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গত ১০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এটি প্রতিরোধে আমাদের উদ্যোগ নেই। কেনো কমানো যাচ্ছে না এবিষয়েও কোনো গবেষণা হয় না। তবে সচেতনতা, প্রসূতি সেবা এবং মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রম জোরদার করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অপরিণত শিশুর জন্মের পেছনে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্যের অবনতি, অপুষ্টি, সময়মতো প্রসবপরিচর্যার অভাব, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও প্রসবকালীন জটিলতা। এ ছাড়া ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবন এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণও অন্যতম কারণ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর গবেষণা ও উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান।